মেয়েটির নাম কেয়া, মরিয়ম আক্তার কেয়া। কত হবে বয়স? ১৩ কি ১৪। ফুটফুটে চেহারা। মুখে একটা উচ্ছলতা। এ রকম একটা মেয়েকে স্কুলের ব্যাগ কাঁধে সবচেয়ে সুন্দর মানায়। মানিয়ে যায় কোনো ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে হাজির হলেও।
কিন্তু কেয়াকে আমরা দেখলাম হাসপাতালের বিছানায়। যে সময়টা তার স্কুলে থাকার কথা, বন্ধুদের সঙ্গে স্কুল মাতিয়ে রাখার কথা—সেই সময়ে কেয়া লড়াই করছে মরণব্যাধির সঙ্গে। কেয়াকে দেখার পর আমরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারছি না যে এই মেয়েটি অসুস্থতার কাছে হার মানতে পারে।
আমাদের ক্রিকেটারদের এক বন্ধুর আত্মীয় কেয়া। সেই বন্ধুর কাছেই শুনেছিলাম ফুটফুটে এই মেয়েটি বোনম্যারো ক্যান্সারে আক্রান্ত। বন্ধুটি আমাদের বলেছিল, ‘তোমরা ওকে দেখতে গেলে, ও একটু সাহস পাবে। ভয়ঙ্কর এই রোগটার বিরুদ্ধে লড়তে পারবে।’ সে জন্যই যাওয়া। কিন্তু দেখতে গিয়ে মনে হলো, মেয়েটিকে বাঁচাতেই হবে। আর আশার কথা শোনালেন চিকিত্সকেরা। উন্নত চিকিত্সা হলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবে কেয়া। এই আশাতেই আজ আমরা আপনাদের সামনে।
আদমজী জুট মিলের চাকুরে আবুল কাশেমের সংসার ভালোই চলছিল। মেয়ে কেয়া প্রজাপতির মতো ছুটে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু পরিবারে প্রথম ধাক্কাটা এল পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়। বেকার হয়ে গেলেন আবুল কাশেম। তার পরও জীবন চলছিল। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে হঠাত্ই শুরু হলো কেয়ার পায়ে ব্যথা।
প্রথমে স্থানীয় চিকিত্সকদের কাছে চিকিত্সা চলছিল। তাতে ভালো কিছু না হওয়ায় কেয়াকে নিয়ে ঢাকায় এলেন ওর মা-বাবা। ধরা পড়ল ভয়ানক এই রোগ। এখন মহাখালীর ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে চলছে কেয়ার চিকিত্সা।
আমরা যখন পৌঁছলাম, কেয়া যেন একটু লজ্জা পেল। মনে হলো, সুস্থ থাকলে এই মেয়েটি হয়তো অটোগ্রাফের খাতা এগিয়ে দিত। সেটা কি আর হবে না? আমরা বিশ্বাস করি, কেয়া সুস্থ হয়ে উঠবে। স্কুলে যাবে, ক্রিকেট দেখবে, অটোগ্রাফ নেবে।
সে জন্য আমাদেরই কিছু করতে হবে। কেয়ার পরিবারের অবস্থা তেমন ভালো না। এরই মধ্যে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে পরিবারটির। শুরু হয়ে গেছে ধারদেনা। দেশের বাইরে ভালো চিকিত্সার মাধ্যমে কেয়াকে সুস্থ করে তুলতে চাই বিপুল টাকা। সেই অঙ্কটা কত, তা এখনো পরিষ্কার নয়। কেয়ার মা কোহিনুর বেগম জানালেন, এক চিকিত্সক বলেছেন, হয়তো ৪০-৪৫ লাখ টাকা লাগবে।
এত টাকা কোত্থেকে পাবে কেয়ার পরিবার! আমরা ওর পাশে দাঁড়াচ্ছি। কিন্তু সেটাই যথেষ্ট নয়। তাই আমরা কেয়ার হয়ে সবার কাছে অনুরোধ করছি, আপনারাও কেয়ার পাশে দাঁড়ান। আসুন, সবাই মিলে ছোট্ট এই মেয়েটিকে সুস্থ করে তুলি।
কেয়াকে সাহায্য করার জন্য: কোহিনুর বেগম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, দিলকুশা শাখা। হিসাব নং—০০১২২০০০২৩৩৯৯
শাহ নেওয়াজ আজাদ, নয়াপল্টন ভিআইপি রোড, পূবালী ব্যাংক। সঞ্চয়ী হিসাব নং—৩৫৭৮-৫
আমরা ক্রিকেটাররা হারতে পছন্দ করি না। আপনারাও আমাদের হারতে দেখতে চান না। আসুন এই লড়াইটাও আমরা সবাই মিলে জিতে আসি।
লেখকদ্বয়: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়ক।
সম্পূর্ণ লেখাটি দৈনিক প্রথম আলো, ১৮/১১/২০০৯ থেকে সংগৃহীত
Link : http://www.prothom-alo.com
আসুন, সবাই মিলে কেয়াকে বাঁচাই --- "হাবিবুল বাশার ও মাশরাফি বিন মুর্তজা"
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কোরআন কী পোড়ানো যায়!
আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেঞ্চুরী’তম
লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা
দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?
ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?
বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভণ্ড মুসলমান
ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?
মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন
কোথাও ছিলো না কেউ ....
কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।
আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন