হয়তো বেশি না। মাত্র ৬ মাস । এই ৬ মাসে বদ্লে গেছে অনেক কিছু। শিক্ষা জীবন শেষে মুখোমুখি বাস্তব জীবন। সবাই কমবেশি ছড়িয়ে পড়ছে, সেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি করবে। আজ হয়ত শেষ দেখা কিংবা আবার দেখা হবে। কে জানে..... সময় বেশি নেই, জরুরী কিছু কাজ বাকি, কাল বাদে পরশু এই শহরের ভোর হবার আগেই চলে যাবে সে। অথচ তার কোন পাত্তা নেই, এক ঘণ্টা হয়ে গেল। এইভাবে আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায়। বলল তিনটায় আসবে, ঘড়ির কাঁটা সাড়ে চারটার দিকে হেলতে শুরু করছে। ওপাশে ফোনও ব্যস্ত, মেসেজের কোন রিপ্লাই নেই। মামুন ভাবল আর আধা ঘণ্টা দেখবে, তারপর চলে যাবে।
'আচ্ছা এটা তোর আসার সময় হল'-চিৎকার করে উঠে সানজিদা।
মামুন: আস্তে, লোকজন তো সব জড়ো করে ফেলবি।
সা: রাস্তাঘাটে এত জ্যাম, এতটুকু রাস্তা আসতে এক ঘণ্টা লাগছে আর তুই আরও এক ঘণ্টা নষ্ট করলি।
মা: আজকাল চাকরি করিস নাকি শুনলাম।
সা: তোর কোন সমস্যা আছে। আচ্ছা গত এক মাস আপনি কোথায় ছিলেন, ব্যস্ত-মানব? মোবাইল কই তোর?
মা: আপাতত নেই।
সা: মানে?
মা: চুরি গেছে।
সা: তুই নাকি বাহিরে যাচ্ছিস ?
মা: দেখি , এখনও কিছু হয় নি। হলে তো জানবি।
সা: ভাল্লাগে না আর ?
মা: কি ?
সা: কিছু না
মা: তোর কথা বলছিস ?
'না, কিছু না, আমি যাই আজ ' চলে যায় সানজু ।
এক দঙ্গল মানুষ সাথে। মামুনের কোন আগ্রহ নেই কে কি বলছে। তবুও হ্যাঁ-হুঁ করছে, তার চারদিকে উপদেশ-সতর্কবানী দেয়ার লোকের অভাব নেই এই মুহূর্তে। মামুন এপাশ-ওপাশ করে, কেন যেন গরম লাগে। ভাবে এয়ারপোর্টের এসি কি ঠিক মত কাজ করে না। সময় বেশি নেই, মামুন লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে । লাগেজ, পাসপোর্ট সব ঝামেলা শেষ করে ভিতরে দাঁড়ায়। সামনে একটা বেঞ্চে বসে পড়ে, মোবাইলটা অযথাই হাতের তালুতে ঘোরা ফেরা করে। পাশে কে যেন ব্যাগ রেখে বসে। মামুনের কোন দিকে মনোযোগ নেই। দেয়ালে বড় ঘড়িটা বলছে আর সময় নেই, বিষণ্ণ মামুন উঠে পড়ে, ব্যাগটা কাঁধে নেয়। 'প্লিজ, আমারটাও নিন না' পাশে তাকিয়ে মামুন চিৎকার করে উঠে 'তুই'। 'কেন, যুরিখ ইউনিতে কি শুধু তোর পড়ার যোগ্যতা আছে......'
০৯১১০৩
ব্যলকনি,৩০.
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:১০