somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবু হেনা স্যারকে মনে পড়ে.........(তৃতীয় পর্ব)

১২ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত অক্টোবরে লেখেছিলাম , এখন আরেক অক্টোবর , মাঝখানে বিশাল গ্যাপ । আজ হঠাত মনে হল লিখা যাক………………
২য় সপ্তাহ

ধীরে ধীরে একে একে রাজু, তপজিত, তানিম, আরিফ এরা স্যারের বাসায় ভরতি হলো । এখন আর একাকি মনে হয় না স্যারের বাসায় । স্যারের বাসা ভালোই লাগছিল ।
ভেতরের রুমে বসত মেয়েরা, তখন বড়, ছোট যাই হোক সবাই মেয়েদের খেয়াল করতাম । একটা মেয়ে ছিল, ছেলেদের মত চুল, নাম জানিনা, তাই আমরা নাম দিলাম সামিয়া জামান ( একুশের খবর তখন খুব চলছিল । রাতে খেতে খেতে বাসার সবাই খবর দেখতাম ।পরে ইন্টারের সময় জেনেছিলাম ওর নাম মুমু) ত আমারা সবাই সামিয়া জামানকে খেয়াল করতাম, ও কি করছে না করছে । আর আরেকজন ছিল স্কারফ পরা , মে বি আমাদের সিনিয়র, ওনাকে দেখতাম, ভালোই লাগত, চুপচাপ শান্ত ধরনের ।
স্যার একমগ চা নিয়ে বসতেন, ওদেরকে পড়াতেন, আমরা বাইরে বসে থাকতাম , এরপর স্যারের ইচ্ছা হলে আমাদের দেখতে আসতেন, ( আমরা সবাই চিন্তা করতাম, স্যারের বাসায় প্রাইভেট পড়লে মনে হয় স্যারই সব শিখিয়ে পড়িয়ে দিবেন, এখন দেখি স্যার সম্পুরন বিপরীত) আমরা বসে বসে মাছি মারতাম।

স্যার প্রত্যেকদিন ক্লাস শেষে অনেকগুলো শব্দ দিতেন । আমাদের কাজ হলো প্রতিটা ওয়ার্ড দিয়ে সকল টেনস মেইক করব । খুবি সোজা কাজ । তাই বাসায় না করে স্কুলের কিছু স্যারদের ( ফাঁকিবাজ ) ক্লাসে করে ফেলতাম । আর যারা একিবারেই কিছু করে আনত না , তাদেরও কোন সমস্যা ছিল না, কারন স্যারের বাসায় আমরা বসে থাকতাম, ওরা ( বিশেষ করে রাজু ) অই ফাঁকে করে ফেলত । বাড়ির কাজ ( হোম ওয়ার্ক ) করে এনেছি, কিন্তু স্যারকে দেখাতে সাহস করতাম না, কারন জয় একদিন ঝাড়ি খেয়েছে , স্যার যতক্ষন নিজে এসে না জিজ্ঞেস করবে কি হোম ওয়ার্ক ছিল ততক্ষন কিছু বলা যাবে না ।

একদিন আমি সাহস করে জিজ্ঞেস করে ফেললাম, “ স্যার করসি ! এখন কিতা কিতা করতাম ”
খাতাটা এগিয়ে দিলাম, স্যার একদৃষ্টিতে কয়েক সেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন, “ আল্লাহ আল্লাহ কর ”
স্যারের ফ্রেঞ্জি বিহেবে চুপ মেরে যাই সবাই ।
আমরা অবশ্য আল্লাহ আল্লাহ করতাম না, দুনিয়ার যত গল্প আছে তা করতাম, স্কুলে কার টিফিন কে চুরি করল, ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ম্যাচে কে জিতল, হাসানের নতুন এলবামটা কেমন হইসে…বাংলাদেশের খেলা কবে, হাফটাইমে এ section এর সাথে খেলা আসে নাকি…

স্যারের বাসায় যাই সকাল ৭টা ১৫তে ।পড়া শেষ হতে বেশিক্ষন লাগে না, সাড়ে আট্টায় বা পৌনে নয়টায় শেষ হয়ে যায় । আমরা পড়তাম পাইলট স্কুলে, ক্লাস শুরু হত সাড়ে ১১ টায় । বাসায় গিয়ে কি করব, তখনো এতটা আঁতেল ছিলাম না। জয়কে বললাম, “ কিতা করতে ? ”
জয় চুপচাপ, অন্যদেরকেও জিজ্ঞেস করলাম, কেউ কিছু বলে না, আমার বাইরে খাওয়ার বদঅভ্যাস ছিল, সকাল বেলায় বাসার কাউকে ঘুম থেক তুলতে ইচ্ছা করে না, তাই নাস্তা করে আসা হয় না। ত আমি বললাম,
“ চল নাস্তা করি ।”
প্রথম দিকে সবাই গচমচ করে ।জয় বলে সে নাস্তা করেছে , আমি তখন বললাম,
“ শালা বাসাত গিয়াতো পড়া শুরু করবে ।খালি ফাস্ট অই যাইতে? যা ফাউল…বাসাত যা ”
আমার এই কথায় কাজ হয়, কেউ নিজেকে আতেঁল প্রমান করতে রাজি নয়……
“ কই খাইতে ?” সবার এই প্রশ্নে আমি থমকে যাই।
“ তোরা ক কই খাওয়া যায় ? ”
কিছুক্ষন পর ঠিক হল ইস্টিকুটুমে যাওয়া হবে , আম্বরখানায় , নতুন খুলেছে , আমার যাওয়া হয়নি আগে , জয় কয়েকদিন আগে গিয়েছে ।
“ ওই ড্রাইবার, যাইতায় নি ? ”
দ্রুত দুইটা রিক্সা নেওয়া হল।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×