somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শায়লা হকের গ্রীষ্মের পদাবলি : একটি সমালোচনাপ্রচেষ্টা -(২)

০৯ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গ্রীষ্মের পদাবলী ৩

আরো বোকা বোকা
দুষ্টছেলেদের সাথে
ফুসুরফুসুর করে
কী এতো ভাবো?
চোরের মতো তাকাও কেন?
সোজাসুজি চোখ মেলতে পারো না?
আমি কি বলেছি,
আমাকে দেখো না?
আর বললেই তুমি শুনবে কেন?

বিরামচিহ্ণের সাথে কিঞ্চিৎ সখ্যতা এইখানে লক্ষ্য করা যায় । কেবলমাত্র প্রশ্নগুলোর শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ণই নয়, ছোটখাট একটি হাম্বল কমাও দেখা যায় শেষের থেকে তৃতীয় লাইনে ।

এই কবিতাটিও আদতে পদাবলী-২ এর ভাবই বহন করে । সাহসী পুরুষের জন্য উপদেশাবলী । কবির রুপে অথবা প্রদর্শনীতে অথবা আহ্বানেই আকৃষ্ট হওয়া রহস্যময় দুষ্টছেলে কবির অন্তরালে অন্য কাউকে নিজস্ব প্রেমকামাকাংখার কথা বলে বেড়াক এটি তিনি চান না । বরং তিনি চান খোলামনের , নিজস্ব প্রেম বা আকাঙ্খার কথা সামনাসামনি চোখে চোখ রেখে বলতে পারে এমন হয়ে বেড়ে উঠুক তার প্রেমিক । অবশ্য এইখানে পদাবলী-২ এর মত হতাশা জাগানো হুমকি তিনি দেননাই যে দেরী করলে লেট হয়ে যাবে, অন্য কেউ নিয়ে যাবে ।

বরং প্রতিবারের মতই কবিতার শেষে একটু অনন্য চমক অপেক্ষা করে থাকে পাঠকের জন্য । কবির রুপ বা প্রদর্শনী অন্যরা উপভোগ করুক এইটাতো কবি নিষেধ করেন নাই, বরং সচেতনেই হয়তো তিনি এপ্রিসিয়েশনের কাঙাল । সেই এপ্রিসিয়েশন নিজ কানে শুনে কান জুড়াতে চান তিনি এবং যেই পুরুষ সেইটা সাপ্লাই করার মত সাহস এবং ঋজুত্ব রাখে তাকেই তিনি আহ্বান করেন ।

শেষ লাইনে আরেকটি চমক অপেক্ষা করে পাঠকের জন্য । যদিও কখনো ড্যাবড্যাবে চোখে চেয়ে থাকাকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেছেন কবি, সেটা তার সত্যিকারে উদ্দেশ্য ছিলো না । বরং প্রথা ও সমাজ থেকে শিখা রুটিন টক ছিলো সেটা । এইখানে একটি প্যারাডক্সের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন কবি পাঠককে । যদিও এটি অল্পবয়সের বৈশিষ্ট্য না নারীরই বৈশিষ্ট্য সেইটা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার মত যথেষ্ট তথ্য কবিতায় নাই, কবি চান তার নিষেধকে পাত্তা দেয়না এমন ডেয়ারডেভিলই । হাফহার্টেড ঝারি শুনে কুঁই কুঁই করে চলে যায় যে প্রেমিক তার চাইতে কবি চান ভেঙেচুরে তছনছ করে দিতে পারে এমন কেউ । অনেকটা সেই অতি পুরাতন, মোরগ যখন মুরগিকে দৌড়ায় মুরগী তখন মনে মনে ভাবে, খুব বেশি জোরে দৌড়াচ্ছি না তো, জোকসের মত ।


গ্রীষ্মের পদাবলী ৪

আবার ফ্লোরিডায় যাবো
দুবছর আগে মা বলেছিল
একা একা সৈকতে যেও না
তোমার এখনো চুমু খাবার বয়স হয়নি
আমি বলেছিলাম কী হয় একা গেলে?
একা গেলেই চুমু খেতে হবে কেন?
আর খেলেই বা ক্ষতি কী?
চুমুই তো খাবো কাউকে
আর সে আমায়
কামড়ে তো আর দেবে না !


এই কবিতায় প্রশ্নবোধকের পাশাপাশি একটি হাম্বল আশ্চর্যবোধক চিহ্ণও দেখা যায় ।

এই কবিতায় ফ্লোরিডা যাওয়া শব্দবন্ধটি আমেরিকার প্রেক্ষিতে একটু গভীর একটি অর্থ বহন করে । এটি সাধারণ ফ্লোরিডা যাওয়া নয় । এই যাওয়া স্প্রিং ব্রেকে যাওয়া । স্প্রিং ব্রেক একাডেমিক বছরের শেষে মার্চ-এপ্রিলের দিকে দক্ষিণের সৈকতে, বিকিনি/সেরা বুবস/সেরা এস এইজাতীয় কনটেস্ট ফিচার করা, এক সপ্তাহের এলকোহল/ড্রাগ/সেক্স অর্জির নাম । সম্ভবত এই কারণেই কবির মায়ের একটু উদ্বেগ ।

কিন্তু তরুণ কবি জীবনের বিভিন্ন বাঁকের মত, এই সময়টিও স্বভাবজাত সারল্যের সাথে এক্সপ্লোর করে দেখতে চান । জীবনের বিবিধ কূটিলতা জেঁকে বসার আগে অর্জিও চেখে দেখায় মন্দ কি । আর তাছাড়া জলে নেমেও যেমন কাপড় শুকনো রাখা যায়, অথবা কাপড় ভিজলেও সেগুলো আবার শুকানো যায় এই ধরণের যুক্তিও কবি তার মাকে দেখাতে চান ।

যদিও ছোট, তবু এ কবিতার শেষেও একটি চমক থাকে । কবি তার শরীরি ব্যপারগুলোকে সহজ সারল্যে এক্সপ্লোর করে দেখার একটি ইচ্ছা প্রকাশ করেন, এবং মায়ের উদ্বেগের কারণ বুঝতে পারেননা । শরীর এক্সপ্লোর করলেই আকাশ ভেঙে মাথায় পড়বে এমন ভাবার কারণই বা কি এটাও তার সরলতায় অবোধগম্য ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৪০
১২টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×