আগের পর্বঃ জাপানের ডায়েরী-২৬
জাপানে অনেক কিছুরই অস্বাভাবিক দাম। এই যেমন ধরুন চাল। এখানে সবচেয়ে নিম্নমানের চালও বাংলাদেশী টাকায় ২৫০টাকা/কেজি। আর বাংলাদেশের পোলাও এর চাল ৭৭০টাকা/কেজি। সবকিছুতেই চড়া দাম। তেমনি সেলুনে চুল কাটতেও অনেক ইয়েন গুনতে হয়। প্রায় সেলুনেই চুল কাটা প্রায় ৫ হাজার ইয়েনের মত (১ ইয়েন=০.৭৭টাকা)। তবে কিছু কিছু সেলুনে ১০০০ইয়েনে চুল ছাটা যায়। সেলুনগুলোর জন্য বিশেষ সিম্বলিক ব্যানার ব্যবহার করা হয়। সাদা-লাল-নীলের স্পাইরাল ফিতা সেলুন চালু থাকা অবস্থায় ঘুরতে থাকে। সেলুন চালু থাকলেই এটাই চলে, সুতরাং দূর থেকেই বুঝা যায় সেলুন খোলা না বন্ধ।
তবে চুল কাটতে এরা বেশ যত্ন নেয়, আন্তরিকতার সাথে চুল কাটে, তখন টাকার পরিমানটা কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়। এদের এখানে চুল কাটতে হলে সাধারণত আগে থেকে বুকিং দিয়ে আসতে হয়। এরপর সেই সময়ে গিয়ে চুল কাটাতে হয়, আর কপাল ভালো হলে হয়ত সামান্য অপেক্ষার পর চুল কাটানো যায়।
তবে এখানে অপেক্ষা করার সময় একঘেয়েমী লাগে না, কারন সুন্দর বসার ব্যবস্থা আর দৈনিক/মাসিক পত্রিকা, গল্পের বই এর অনেক কালেকশনস থাকে, সুতরাং সময় এমনি কেটে যায়।
এবার সেলুনের একটা মজার অভিজ্ঞতা বলি। দেশে থাকতেই ইচ্ছা ছিলো বেল করার কিন্তু চাকুরি আর বাবা-মার অপছন্দের জন্য কাজটা সম্পাদন করতে পারছিলাম না।শেষে প্রবাসে এসে ভাবলাম, এটাই বড় সুযোগ, এখানে দেখার কেউ নাই। কিন্তু লেজতো একা কাটা যায় না, তাই একই বিশ্বঃ অধ্যায়নরত আর এক দেশী ভাইকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করালাম জামাতে বেল করাতে। যে ভাবা সেই কাজ এই গরমেই একদিন দুজনে গেলাম সেলুনে স্টেডিয়াম বানাতে। কিন্তু সমস্যা সেলুনে ওরা রাজি হচ্ছিলো না। যেহেতু আমরা ফরেনার, ওদের ভয় ছিলো এভাবে বেল করে যদি কোথাও অভিযোগ করি, যে আমাদেক না বুঝে বেল করে দিয়ে দিয়েছে । কোন ভাবেই বুঝাতে পারছিলাম না, পরে মাথায় বুদ্ধি আসলো, ডিজাইন বুক থেকে রোনাল্ডোর একটা বেল মাথার ছবি দেখে বললাম, এমন করে দাও কোন সমস্যা নাই। দুজনে মিলিতভাবে বলায় মনে হল সাহস পেল, এরপর শুরু হলো স্টেডিয়াম বানানো। এরপর এক ছেলে ১৫বছরের মত বয়স হবে, সেও সিরিয়ালে ছিলো, ও কি মজা পেল বুঝলাম না, সেও আমাদের সাথে বেল করেছিলো........
চলবে.....!