somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসাদ রায়ঃ খাপড়া ওয়ার্ডের গুলিবিদ্ধ লড়াকু

০৬ ই নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘ওরা বীর
আকাশে জাগাতো ঝড়’।

তোমাদের সেই মিলিত ফসলের মাঠে
দাঁড়িয়ে আমরা অগণন-
আজ আবার উচ্চারণ করি নিঃশঙ্কচিত্তেঃ

‘শহিদ_খুন আগুন জ্বালে, শপথ অক্ষুন্নঃ
এদেশ অতিশীগ্র হবে বিদেশী চর শূন্য।
বাঁচাবো দেশ,আমার দেশ, হানব প্রতিপক্ষ,
এ জনতার অন্ধচোখে আনব দৃঢ লক্ষ্য’।

হে বীর,
আমাদের সাহস দাও,
দাও সেই দৃপ্ত হাতিয়ার-
গর্জে উঠো মানুষকে ভাল্বেসে
ক্ষয় নেই যার।

পাবনা ছিল তৎকালীন বঙ্গ-প্রদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। অগ্নিযুগের সশস্ত্র ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রামে পাবনার অবদান রয়েছে। রাজশাহীর পাবনাই ছিল বিপ্লববাদীদের প্রধান ঘাটিস্থল। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে তেভাগাসহ সকল লড়াই-সংগ্রামে ওই অঞ্চলের বিপ্লবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যার নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী কমিউনিষ্টরা। তাঁদের মধ্যে কমরেড প্রসাদ রায় অন্যতম।

পাবনা জেলা রাজশাহী বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত। এটি ২৩°৪৮′ হতে ২৪°৪৭′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০২′ হতে ৮৯°৫০′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এর উত্তর দিক ঘিরে আছে সিরাজগঞ্জ জেলা আর দক্ষিণে পদ্মা নদী পাবনাকে ফরিদপুর ও কুষ্টিয়া জেলা হতে পৃথক করেছে। পাবনার পূর্ব প্রান্তদিয়ে যমুনা নদী বয়ে গেছে। পশ্চিমে নাটোর জেলা। পাবনার কাজীরহাট নামক স্থানে পদ্মা ও যমুনা নদী পরস্পর মিলিত হইয়েছে। পাবনা জেলার সুজানগর থানায় ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রামের বহু নেতা-কর্মী ও সংগঠকের জন্ম।

কমরেড প্রসাদ রায়ের জন্ম ১৯২৮ সালে। পাবনা জেলার সুজানগর থানার তাঁতিবন্দের রায় পরিবারের প্রতাপ ভবনে। ওই অঞ্চলের মডারেট ও লিবারেল আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল ছিল এই প্রতাব ভবন। রাজনৈতিক কারণে নির্যাতিত, অবহেলিত ও বিতাড়িতদের শেষ ভরসা ও আশ্রয়স্থল ছিল এই বাড়ির ছোটতরফ ও শবাসনা দেবী। ঐতিহ্যবাহী এ ভবনের সুনাম আজো মানুষের মুখে মুখে। প্রসাদ রায়ের বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, মা শবাসনা দেবী। তাদের ঘরে ৭ টি সন্তানের জন্ম হয়। পাঁচ ভাই, প্রবীর রায় (সঙ্গীত প্রেমিক), প্রদীপ রায় (কমিউনিষ্ট নেতা), প্রণব রায় (প্রখ্যাত সেতার বাদক ও সঙ্গীত শিক্ষক), প্রণতি রায় (রাজনৈতিক কর্মী ও ছাত্রনেতা) ও তিন বোন। প্রসাদ রায় সর্বকনিষ্ঠ। পাঁচ ভাই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। চার ভাই কারা নির্যাতন ভোগ করেছেন।


পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। তারপর পাঠশালা ও প্রাইমারী স্কুলে। ১৯৪২ সালে ভর্তি হন আর এম একাডেমীতে। স্কুল জীবনে ১৯৪৫ সালে তিনি সর্বভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। স্কুলে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৪৭ সালে স্কুলে পড়াশুনাকালীন সময়ে সুজানগর থানায়ও সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব নেন।

পাঠ্যবই পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি প্রচুর অন্যান্য বই পড়তেন। সেই অল্প বয়সেই পড়ে ছিলেন মার্ক্সবাদী বই। সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গণে তাঁর পদচারণা ছিল সমান। খেলাধুলায়ও পারদর্শী ছিলেন। এছাড়া তিনি গান, কবিতা আবৃত্তি ও অভিনয়েও ছিলেন পটু। মাঝে মাঝে কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ লিখতেন। সহপাঠীদের নিয়ে নানারকম গল্প, উপন্যাস ও কবিতা আবৃত্তির আড্ডা জমাতেন। স্কুলের সকল ছাত্র তাঁকে পছন্দ করতো। নানাগুণের কারণে শিক্ষকরা তাকে খুব পছন্দ করতেন।

১৯৪৮ সালে তিনি আর এম একাডেমী থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ওই বছর তিনি এডওয়ার্ড কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন। কলেজে ছাত্র ফেডারেশন গড়ে তোলার কাজে যুক্ত হন। অক্লান্ত শ্রম আর মনন দিয়ে গড়ে তোলেন শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তি। ১৯৪৯ সালের আগস্ট মাসে তিনি এডওয়ার্ড কলেজে পড়াশুনাকালীন সময়ে ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ‘বন্দী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তির’ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। এই বন্দীমুক্তি আন্দোলন চলাকালে বন্দীদের মুক্তির দাবি সম্বলিত পোস্টার লাগানোর সময় পাকিস্তান পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। (১ পর্ব )
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×