somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখছি - ১

০৩ রা নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা এসকল রাজনৈতিক দলের আভ্যন্তরীন অবস্থার প্রেক্ষিতে একটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখছি। যদিও চিত্রনাট্য কিভাবে লেখে, তা আমি জানি না। তবুও আন্দাজ করে কেবল দৃশ্য ক্রমানুসারে লিখে যাচ্ছি। যা ব্লগারদের আমারদায়ক দৈর্ঘ্যক্রমে ব্লগে প্রকাশিত হবে। আজ প্রকাশিত হলো ১ম পর্ব

দৃশ্য : ১
একটি দেয়ালের সামনে অনেকগুলো ছেঁড়া পোস্টারে প্রস্রাব করছে সজীব নামের ১৭/১৮ বছরের এক তরুন। দেয়ালে পুরান কালিতে লেখা "নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর।" দূর থেকে মিছিলের শব্দ আসছে। (ভাষা সৈনিক জিলানীর আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম)।

দৃশ্য :২
কলেজের প্রবেশ মুখে; কিছু দূরে বাঁশ বেতের অস্থায়ী বিক্রেতাদের সারি। সারির শেষ মাথায় ভাঙা পিলারে বসা সজীবের দিকে ক্যামেরা এগিয়ে যাবে। মিছিলের শব্দ আরো ঘনিয়ে আসবে। এলোমেলো চুলের তরুনের গাল বেয়ে ঘাম ঝরছে, গুটানো হাতার হাতের কাঁঠিতে খুঁচে খুঁচে মাটিতে গর্ত বানিয়ে পুরো গাল ঝুলিয়ে রেখে সে গর্তে চোখ রাখা তরুন ক্রমশ: উত্তেজিত হতে থাকবে।

দৃশ্য : ৩
মিছিল সজীবকে ক্রস করার সময় ক্যামেরা সজীবের ঘামে ভেজা চোখ, মিছিল এবং বিক্রেতাদের বাঁশ দেখাবে। মিছিল চলে গেলে উত্তেজিত সজীব উঠে দাঁড়িয়ে হাতের কাঠিকে মাটিতে আছাড় মেরে দ্রুত হাঁটতে থাকবে এবং মিছিলের শব্দ মিলে যাবে। ফুটপাত ধরে হাটতে থাকা সজীব কলেজের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে চলতে থাকবে। দেয়ালে অসংখ্য চিকায় যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের রাজনৈতিক দলের নানান শ্লোগান লেখা। চিকাগুলোয় কিছু নামকে ইটের টুকরা, কয়লা ইত্যাদি দিয়ে ঘঁষে বিকৃত করা আছে। তার চলার পথে আরো কিছু দৃশ্য যেমন- কোন তরুনকে ঘিরে ধরে কিছু যুবকের বই বিতরণ, কোন কিছু বুঝানো ইত্যাদির আগমন ঘটবে। দৃশ্যগুলো সজীবের পেছনে থাকা ক্যামেরা এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে দেখাবে।

দৃশ্য : ৪
সিঁড়ি ধরে উপরে উঠছে সজীব। সিঁড়ির পাশে দেয়ালে কাঁচা হাতের আঁকা নানান ধরনের কার্টুন। খুব দ্রুত উঠতে থাকা সজীব সিঁড়ির লিফটিংয়ে জানালা দিয়ে বাসার পাশের স্কুলটির উড়ন্ত জাতীয় পতাকায় চোখ রাখবে। তাকে ক্রস করে সিঁড়ি ধরে নামতে থাকা দু'টি শিশু পেছনে ধাক্কা দিলেও সজীব দাঁড়িয়েই থাকবে।

দৃশ্য : ৫
রাতের বেলা মোম জ্বালিয়ে পড়ার টেবিলে বসে বসে অনেকগুলো ছেঁড়া খাতার পাতা সামনে রেখে শপথ লিখে যাচ্ছে সজীব। কোনো কাগজে " যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সূর্য উঠার আগে ঘুম থেকে উঠবো না" কোনোটাতে "রাতে মায়ের রেখে যাওয়া গ্লাসভর্তি দুধ কমোডে ঢেলে দিবো"। কিন্তু কোনটাই তার মনে ধরছে না। সর্বশেষ কাগজটাতে লিখলো- " ততোদিন পর্যন্ত জুতা পরবো না"। টেবিলে ঢেকে রাখা দুধের গেলাস হাতে নিয়ে টয়লেটে গিয়ে কমোডে ঢেলে হাতে আগুন চেপে মোম নিভিয়ে শুয়ে পড়ে।

দৃশ্য : ৬
খাটের উপর থেকে ঝুলানো পায়ের পেছনে কয়েক জোড়া জুতা। হাত দু'টো নেমে এসে প্যান্টের পায়ের অংশে দু'টি করে ভাঁজ দিবে। পা দু'টো মাটিতে নামলে সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট পরিহিত সজীব ব্যাগ কাঁধে করে কলেজের দিকে রওনা দেবে।

দৃশ্য : ৭
সেই সীমানা প্রাচীর, সেই পরিচিত দাওয়াতী কার্যক্রমের দৃশ্য আর দেয়ালের বিকৃত সব চিকা। এর বিপরীতে অন্যদিনের চাইতে দৃঢ়, চনমনে সজীবের দেহের কোলাজ।

দৃশ্য : ৮
আজকের প্রথম ক্লাশের চিত্র। জুতা পরে আসেনি বলে সজীব মাঝের এক টেবিলের মাঝখানে বসেছে। স্যার বা অন্য কেউ খেয়াল করেনি। সজীবের খালি পা।

দৃশ্য : ৯
প্রথম ক্লাশ শেষে প্রস্রাব করতে বাইরে যাওয়া সজীব দ্বিতীয় ক্লাশের বোরকা স্কার্ফ পরিহিত ম্যাডাম আসার আগে ফিরে আসতে পারেনি। দরজায় দাঁড়িয়ে অনুমতি প্রার্থনারত সজীবের পায়ের দিকে তাকিয়ে জুতার কথা জিজ্ঞেস করলেন। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আর জুতা পরবে না বলে জবাব দেয়। ম্যাডামের কৌতুহলী "কেন?" প্রশ্নের জবাবে "ভালো লাগে না" উত্তর করে। তোমার এখনো ভালো লাগা না লাগার মতো বয়স হয়নি। কলেজের নিয়ম ভাঙ্গা চলবে না - ম্যাডামের এ কথা শুনে হতাশ সজীবের পা ক্লাশের ভেতরে পড়বে।


ক্রমশ..................
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩২
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

বামিঙ্গিয়ান উপাখ্যান

লিখেছেন যুবায়ের আলিফ, ১০ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০




মাঝ রাতে কড়া একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ঘুম ভাঙলো জ্যাকের৷ ঘুমের ঘোরে দেখতে পেল কেউ চোখ ধাঁধানো পোষাক পরে ডাইনিংয়ে একটা চামচ রেখে দরজা গলিয়ে চলে যাচ্ছে৷ গা ও পোষাকের উজ্জ্বলতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×