আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা নিজেকে আদর্শ বাঙ্গালী বা বাঙ্গালী সুধী সমাজের মাঝে গন্য মনে করেন তাদের অনেকেরই ধারণা এই যে কালের বিবর্তনে কোন এক সময় বাংলাদেশের এই জনসমষ্টি মুসলমান হয়ে গিয়েছিল বটে, কিন্তু তাতে কি যায় আসে? আর এখনই বা আমাদের মুসলমান হয়ে থাকার অথবা ইসলাম প্রীতি দেখানোর এত প্রয়োজন কিসের? মুসলমান মানেই তো হচ্ছে খেজুর গাছ, আরবের মরুভূমি, লম্ভা দাড়িওয়ালা (অবশ্য কার্ল মার্কস, রবীঠাকুর, শিখ সর্দারজী, পাদ্রী, ইয়াহুদী রাবাই কিংবা আব্রহাম লিংকন বা ফিডেল কাষ্ট্রোর দাড়ির কথা বলা হচ্ছেনা )। তারা আরো মনে করেন ইসলাম মানেই হচ্ছে অনগ্রসরতা, জড়তা, অশিক্ষা, পশ্চাদপদতা, অসভ্যতা আর তথাকথিত "মৌলবাদ"। অতএব বাংলাদেশে শুধু নামমাত্র মুসলমান হয়ে থাকাই হলো সবচেয়ে উত্তম এবং এর মধ্য দিয়ে অনুভূত হবে সুজলা সুফলা সোনার বাংলা, আর তারচেয়ে বড় কথা তখনি প্রতীয়মান হবে আসল বাঙ্গালী পরিচয়। বস্তুত, এ ধারণা যে সত্যিই বেশ কিছু কথিত "মুক্তমনের" মানুষের মধ্যে বিরাজমান, বিশেষ করে কিছু সংখ্যক পত্রপত্রিকা এবং প্রচার মাধ্যমের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এখন প্রশ্ন হল এ ধারণাটি কি সত্যিই সঠিক? এ ব্যপারে আমাদের বি¯স্তারিত পর্যালোচনার প্রয়োজন।
শুরুতেই উলে-খ করতে চাই যে এই নিবন্ধটি কিন্তু বাংলাদেশী মুসলমানদের পরিপ্রেক্ষিতেই লিখা হয়েছে।
প্রথমেই আলোচনায় আসা যাক মুসলমান মানে কি। ইংরেজি ভাষায় যে কোন কিছু ড্রাইভ করে তাকে বলা হয় "ড্রাইভার", তেমনি যে দৌড়ায় বা রান করে তাকে বলা হয় রানার অর্থাৎ ক্রিয়ার শেষে ই আর (সাফিক্স) যোগ করলেই কর্মকারীকে বোঝায়। আরবীতে অনেক ক্রিয়ার আগে মু ব্যবহার করে কর্মকারীকে বুঝাতে হয়। যেমন, আজান শব্দের পূর্বে মু ব্যবহার করে হয় " মুয়াজ্জিন" (যে আজান দেয়), ছফর শব্দের পূর্বে "মু" ব্যবহার করে হয় "মুসাফির" তেমনি ইসলাম শব্দের পূর্বে "মু" ব্যবহার করে হয় "মুসলিম" অর্থাৎ যে ইসলাম ধর্ম পালন করে তাকে মুসলিম বলে। এখন সবাই যে একই কাজ একইভাবে করতে পারবে তেমন নয়। কেউ দৌড়াতে পারে পারদর্শিতার সাথে, আবার কারো দৌড় দেখলে হাসি পায় তাই বলে এতে "দৌড়" ক্রিয়টির কোন দোষ নেই। কিন্তু কোন মুসলমান ইসলাম পালনে ভুল করলে ইসলাম ধর্মকে দুষ দেয়ার লোকের অভাব হয়না এ পৃথিবীতে! (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১০:৪৬