somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেমন আছি সৌদি আরবে -একাদশ পর্ব

২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ ভোর ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বন্ধুদিবসে এই পর্বটা লেখার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু সময় পেলামনা।যাগগে অনেক দিন আগের কথা,এখানে আমি আর আমার ক্লাশমেট রিয়াজ ছাড়া আমাদের কোন বন্ধু ছিলনা।সেই প্রাইমারী স্কুল থেকেই বন্ধু ছাড়া চলতে পারতামনা।বিকেলে দুইবন্ধু কাধে হাত দিয়ে ঘুড়ে বেড়াতাম,বৃষ্টিতে স্কুলের মাঠে জাম্বুরা নিয়ে ফূটবল খেলতাম আর কে কার কত প্রিয় বন্ধু তা দেখানোর জন্য একই রকমের সার্ট পড়তাম।এর ধারাবাহিকতা ছিল পুরো ছাত্রজীবনেই।কিন্তু কর্মজীবনে এসে একেবারেই একা!আশ পাশের মানুষগুলোকে বন্ধু বলা যায়না,আমাদের মনমানুষিকতার সঙ্গে একেবারেই বেমানান।মধ্যপ্রাচ্য বলে কথা!

হেলাল,টিপু,রিয়াজের সঙ্গে
আমার এক সৌদি বন্ধুর ইচ্ছে হলো কনস্ট্রাসন ফার্ম দেবে।আমার থেকে অনেক বিষয়ই তিনি আগে থেকেই কথায় কথায় জেনে নিয়েছিলেন।লাইসেন্স করেই আমাকে তিনি বেশী বেতনের অফার দিলেন;যাতে আমিই তার নুতন ফার্মে যোগ দিই।কিন্তু আমি রাজি না হয়ে প্রস্তাব করলাম আমার আরেক জানি দোস্তকে ভিসা দিতে, অবসরে তাকে আমি সাহায্য করবো বলে প্রমিজ করলাম।যেই কথা সেই কাজ।আমি আমার জানি দোস্ত হেলালকে ফোনে প্রস্তাব করতেই লাফিয়ে সায় দিল আর ঢাকার প্রজেক্ট বিল্ডার্সকে গুডবাই জানিয়ে সৌদি আরবে এসে গেল।


আর এখানে আসার আগে তার বাবা-মা আদর করে বিয়েটাও পড়িয়ে দিল।বিয়ের মাত্র ১৯দিনের মাথায় এখানে এসে তার সেকি অবস্থা! আমরা হয়ে গেলাম তিন বন্ধু।হাতে গুনে আট ঘন্টা ডিউটির পর আমরা একত্রিত হতাম।গাড়ী করে ঘুড়ে বেড়ানো,রুমে এসে ভিডিওতে ছবি দেখা,তাস খেলা আর গাল গল্প চলতো। আমাদের এই তুই তুকারি গ্রুপে আরো এসে যোগ দিল তেজগা স্টেশন রোডের টিপু।সে ঢাকার হুন্ডাই কোম্পানীর কন্টেইনার সার্ভিসে কমলাপুর স্টেশনে চাকুরী করতো।সংগ দোষে নাকি নেশা করা শুরু করে ছিল তাই তার বাবা মা পবিত্র এই দেশে পাঠিয়ে ছিল পাপ মোচন আর ভাল হয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য!এছাড়া এদেশে এসে পরিচয় হয়েছিল মোঃপুরের ইকবালের সঙ্গে।আমাদের এই তুই তুকারি দলটা বেশ কিছুদিন আনন্দে কাটিয়েছি।

ইকবালের সঙ্গে
টিপুর কথাই আগে বলি।সে চাকরী করতো দাম্মাম সমুদ্র বন্দরের মাল লোডিং আনলোডিং কোম্পানীতে একজন হেডচেকার হিসেবে।তার বাবা তাকে পাঠিয়ে ছিল ভাল হওয়ার জন্য কিন্তু সে এসে পড়লো এমন এক স্থানে যেখানে ভাল লোকেও খারাপ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।রাতে নাকি ডিউটি পড়তো বিদেশ থেকে আগত জাহাজের মাল আনলোডিঙ্গের।সেখানে নাবিকেরা টিপুকে পানীয় খাওয়াতে ভুলতোনা।চোরের দশদিন সাধুর একদিন!মাতাল হয়ে জাহাজ থেকে নামার পর ধরা খেল,এবং তিন দিনের মধ্যে খালি হাতে সৌদি আরব ছাড়তে বাধ্য হলো।

হাফমুন বীচে
এদিকে হেলাল উনিশ দিনের বিবাহিত বউকে রেখে এসে কাজে মন বসাতে পারছিলনা।ভৈরব সুন্দরীর প্রেমে দিওয়ানা হেলালকে একবছর ধরে রাখতে পেরেছিলাম।যদিও সে আমাদের সঙ্গে বেশ ভালই ছিল কিন্তু অফিসের কাজে ফেল মেরে আমার নাম ডুবিয়ে চলে গেল।

আল-খুবারের রাস্তায়
আমি,রিয়াজ আর ইকবাল ব্যচলরের সুবাদে টিকে রইলাম!!!!!!!:P
(চলবে)

১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×