somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফার্স্ট ডেট

২৫ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুপুরে ঘুমুচ্ছিলাম। হঠাৎ বন্ধু অংকুরের জরুরী ফোন, 'দোস্ত তাড়াতাড়ি বাসায় আয়'। কোন রকমে উঠে চোখ ডলতে ডলতে ওর বাসায় গেলাম। দরজা খুলতেই তার আকর্ণ বিস্তৃত হাসি আর চুলে শ্যাম্পু মাখা দেখে রহস্যের গন্ধ পেলাম।ঘরে ঢুকতেই তার হাসি আরো প্রসারিত হলো, চোখ গুলো ছোট ছোট করে গভীর রহস্যের ভঙ্গীতে বললো, 'দোস্ত আজকে তোর ডেটিং'! তার মাথায় শ্যাম্পু ডলাডলির স্পীড দেখে আমি কিঞ্চিত বিভ্রান্ত হলাম, আসলে ডেটিং টা কার, ওর না আমারই!

ঘটনা টা বুঝতে কিছুটা সময় লাগলো। ঘটনা টা এই- আমার একাকীত্ব আর বিষন্নতায় ব্যথিত হয়ে সে তার এক বান্ধবীকে বলেছে, আর একটু পরেই তার সাথে আমার দেখা হওয়ার কথা, সোজা কথায় ডেটিং। শুনে আমার মাঝে কিছুটা উত্তেজনা কাজ করলো, হাজার হলেও ফার্স্ট ডেট! ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চেহারা খানা বার বার দেখছিলাম, চুল বাঁধলাম। অংকুর চুলে ওয়াক্স না কি যেন লাগিয়ে দিলো, চুল গুলো বেশ চকচক করছিলো। উত্তেজনায় 'বডি স্প্রে' স্প্রে করলাম গেন্জীর উপরেই।

এরপর অংকুর আমাকে ডেটিং বিষয়ক টিপস দিলো, 'ব' আদ্যাক্ষর বিষয়ক চুলের প্রতিশব্দ, যা কিনা আমার অন্যতম প্রিয় শব্দ, সেটি কিংবা অন্য কোন স্ল্যাং ব্যবহার করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলো। এর পরিবর্তে 'ওহ শীট' বলার পারমিশন পেলাম। 'আমু', 'যামু', 'খামু' এইসব গাঁইয়া শব্দ ব্যবহার করা যাবে না, তাই আমি কিছুক্ষন 'আসব', 'যাব', 'খাব' ইত্যাদি বলে প্র্যাকটিশ করে নিলাম। একটি বিশেষ কাজে যাচ্ছি, এই বলে কাজের সফলতার জন্য আন্টির কাছ থেকে দোয়া নিয়ে বেরিয়ে পরলাম। ও হ্যাঁ, তার আগে অংকুর আমাকে পাঁচশো টাকা দিলো খাবার দাবারের বিল দেয়ার জন্য। যেহেতু আমার ডেটিং, সে টাকা দিলে নাকি খারাপ দেখায়!

সে আসলো। আমরা তিনজন বুমারস্ এ বসলাম। আমি আর সে মুখোমুখি। অংকুরের অতি গুরুত্বপূর্ণ(!) কল আসায় প্রায় পুরো সময়টাই সে অন্যপাশে কথা বলে কাটালো। আমার কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় আর মেয়ে দের সাথে কথা বলার মতো স্টক সীমিত থাকায় আমি প্রায় চুপ করেই থাকলাম। নীরবতা ভাঙলো সে ই...'আপনি কি করেন...?'। ছোটখাট ইন্টারভিউ দিলাম। জানলাম তার নাম যুঁথি,পড়ে VNC তে , ফার্স্ট ইয়ার।

অবশেষে বিদায়বেলা। যাবার সময় অতি সুকৌশলে অংকুর আমাদের দুজনকে রিকশায় তুলে দিল। এই ব্যপারটায় খুশী হয়ে আমি মনে মনে তার দুইটা অপরাধ অগ্রীম ক্ষমা করে দিলাম। কি যেন এক অদ্ভূত ভালো লাগা রিকশার হুডের নিচে জমা হয়েছিলো।আমি মনে প্রাণে চাইছিলাম যেন কঠিন একটা জ্যাম লাগে। কিন্তু কিসের কি, রিকশা যেন চলছিলো হাওয়ায় উড়ে উড়ে। সে যাবে বেইলী রোড থেকে খিলগাঁও, আমার নেমে যাবার কথা মালিবাগে। মালিবাগ ক্রশ করার পর ভাবলাম আরেকটু যাই। তবে ওর কাছে ভাব নিলাম যেন আমি ওর সিকিউরিটি নিয়ে অনেক চিন্তিত। অবশেষে ওর বাসার কিছু আগে 'বাই' বলে রিকশা থেকে নেমে পড়লা। আমি হিন্দী কম বুঝি, তবুও ফিরে আসতে আসতে ভালো মতন বুঝে গেলাম কবি 'কুছ কুছ হোতা হ্যায ' বলতে কি বুঝিয়েছেন। এই গান গাইতে গাইতে বাসায় ফিরলাম...
২৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×