somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের জাতীয়তা , দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রেতাত্মা এবং একটি প্রস্তাবনা

২৫ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৪:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিগত প্রায় তিন দশক যাবত একটি নষ্ট বিতর্ক বাংলাদেশের রাজনীতি গ্রাস করে রেখেছে। কোন কোন মানুষের ব্যক্তি জীবনে যেমন শনির দশা সহজে কাটতে চায় না ঠিক তেমনি আমাদের জাতীয় জীবনেও এ বিতর্ক প্রসূত সংকটের সুরাহা এখনো হয় নি। বিতর্কটির নেপথ্যে রয়েছে ছোট্ট এক প্রশ, কি হবে আমাদের জাতীয় পরিচিতি? বাঙ্গালী অথবা বাংলাদেশী? এই বিতর্কটি এখনো জীইয়ে রাখা হয়েছে এক বিশেষ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক প্রাণ কাঠি হিসাবে।

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর এবং পচাঁত্তরের পট পরিবর্তনপূর্ব রাজনীতিতে আমাদের জাতীয় পরিচিতি নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠেনি। বরং সে সময়ে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছের প্রতিফলিত রচিত সংবিধানে স্পষ্টত:ই ঘোষিত হয়েছিলো বাংলাদেশ সীমানা অর্ন্তভূক্ত জনগোষ্ঠীর পরিচিতি হবে বাঙ্গালী হিসাবে এবং বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদই হবে সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশের সংবিধানে অন্যতম স্তম্ভ। বস্তুতঃ পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন এবং শোষণ বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ জাগরণে প্রেরণা যুগিয়েছে এবং একাত্তরের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদই ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী সমরাস্ত্র। নৃতাত্বিক দৃষ্টিকোনে পাক-ভারত উপমহাদেশে বাঙ্গালী এক পৃথক জাতিসত্তা। বাঙ্গালীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং একটি পূর্ণাঙ্গ জাতি হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার অপরাপর উপাদান সমূহ। বং থেকে বাংলা নামক যে জনপদের উদ্ভব ( সূত্র: রিজিয়া রহমান, বং,থেকে বাংলা, ১৯৮৩ মুক্তধারা প্রকাশনী ঢাকা) সে জনপদে আবহমানকাল থেকে যে প্রধান জনগোষ্ঠী বাস করে আসছে, যাদের রয়েছে সাধারণ শারীরিক, চারিত্রিক, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যাবলী তারাই বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের ধারক এবং বাহক। ঐতিহাসিক গবেষণায় জানা যায় খ্রীষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের পূর্ব থেকেই বঙ্গদেশ এবং বাঙ্গালী জাতির অস্তিত্ব ছিল। এই বাঙ্গালীর চিন্তা-চেতনা মনন ক্রমশ : বিকশিত হয়ে বিশ্ব দরবারে ‌বাঙ্গালী আজ উল্লেখযোগ্য জাতি। তবুও আমরা যারা সন্দেহাতীতভাবে বাঙ্গালী, তাদের মধ্যেও কেন জাতীয় পরিচিতি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব? কেউ কেউ বিশেষতঃ বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ এক গোষ্ঠীর অনুসারীরা নিজেদেরকে বাঙ্গালী হিসেবে পরিচয় প্রদানে গর্বিত না হয়ে কৃত্রিম জাতীয়তা বাঙলাদেশী হিসাবে পরিচয় প্রদানে আশ্বস্ত হয়। এই বিশেষ গোষ্ঠীর এ মনো:স্তাত্বিক আচরণের কার্যকারণ পুরোটাই রাজনৈতিক এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ নামক ষঢ়যন্ত্রমূলক রাজনৈতিক মতবাদটি হচ্ছে বাংলাদেশের জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার বড় এক হাতিয়ার।


বাঙ্গালীর আত্মপরিচিতিতে এই উদ্দেশ্যপূর্ণ বিভ্রান্তি সৃষ্ট করার মূল কৃতিত্বের দাবীদার প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়া। সামরিক লেবাসে রাজনীতি অঙ্গনে পর্দাপনের প্রথম ভাগেই তিনি সদম্ভে বলেছিলেন,‍ আই শ্যাল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ানস। ধূর্ত জিয়া সুচতুরভাবেই তা করতে পেরেছিলেন বাঙ্গালী জাতির মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি করে। জিন্নাহ্‌ যেমন তার রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার দূরভীসন্ধীতে সর্ব ভারতীয় রাজনীতিতে প্রবর্তন করেছিলেন দ্বিজাতিতত্ত্বের ঠিক তেমনি জেনারেল জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রবর্তন করেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। জিন্নাহ সাহেবের দ্বিজাতিতত্ত্ব এবং জিয়ার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ দুটোরই মূল লক্ষ্য রাষ্ট্রিয় তথা রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করে ব্যক্তিগত রাজনৈতিক উচ্চভিলাসের পূর্নতা অর্জন করা। সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বিষয় হচ্ছে জিয়া প্রবর্তিত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের নেপথ্যে ক্রিয়াশীল দ্বিজাতিতত্বের ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা। মূলতঃ হিন্দু প্রধান পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীদের সাথে মুসলিম প্রধান পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের পৃথকীকরণ করার লক্ষ্যেই তথাকথিত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের উন্মেষ।

জিন্নাহ সাহেবের ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ দ্বিজাতিতত্বের মূলে তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছাড়া যে অন্য কোন দর্শন ছিল না তা তার রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে স্পষ্টত:ই প্রতীয়মান হয়। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত জিন্নাহ সাহেব তার রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে ছিলেন ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতির কট্টর সমর্থক। জিন্নাহ্‌ সাহেবের ব্যক্তিজীবনে ইসলামের কোন প্রতিফলন ছিল না। নামাজ, রোজা, হজ্ব, ইসলামের ইত্যাদি মৌলিক অনুশাসনের প্রতি জিন্নাহ্‌ সাহেবের অনুরক্তি পরিলক্ষিত হয়নি কখনো। (সূত্র: কার্ল পোজে, টাইম ম্যাগাজিন. ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৯৬) কার্ল পোজে কর্তৃক গবেষনাপত্রে জানা যায় ১৯৩২ সাল পর্যন্ত জিন্নাহ্‌ সাহেব ছিলেন ভারত বিভক্তির ঘোর বিরোধী। তবুও কেন পরবর্তীতে তিনি সর্বভারতীয় রাজনীতিতে ভারত বিভাজনের বড় অস্ত্র দ্বিজাতিতত্বের আমদানী করলেন? এর বড় কারণ তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের রাজনীতিতে গান্ধী, নেহেরু , মৌলানা আজাদ, সুভাষ বসু-প্রমূখ শক্তিশালী ও মেধাবী নেতাদের পাশে জিন্নাহ্‌ সাহেবের অবস্থান ছিল ম্লান এবং চতুর জিন্নাহ্‌ অনুভব করতে পেরেছিলেন প্রাগুক্ত মেধাবী নেতাদের, সাথে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় তিনি সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মূল নেতা হতে পারবেন না কোনদিন। তাই জিন্নার রাজনীতিতে প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল দ্বিজাতিতত্ব নামক অবৈজ্ঞানিক এক মতবাদ, যেখানে জাতীয়তার সংজ্ঞা বর্হিভূতভাবে ভারতবর্ষের হিন্দু ও মুসলমানকে দুটি পৃথক জাতিসত্তা হিসাবে বিধৃত করা হয়েছে। দ্বিজাতিতত্বে ব্রীটিশদের আর্শীবাদ থাকায় জিন্নাহ্‌র পক্ষে রাতারাতি মুসলমানদের নেতা বনে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল এবং সবচেয়ে বড় বিষয়, ব্যক্তি জিন্নাহ্‌র উচ্চাভিলাষ একটি রাষ্টের নেতা হওয়া সম্ভব হয়েছিল এই দ্বিজাতিতত্ত্বের মাধ্যমেই।

অবশ্য দ্বিজাতিতত্ত্ব যে এক ভিত্তিহীন দর্শন সে বিষয়ে এর উদ্ভাবক জিন্নাহ্‌ সাহেবের পাকিস্তান সৃষ্টির অব্যাহতি পরই এর কবর রচনা করে গেছেন। এই প্রস্তাবনা সমর্থিত হয় পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে জিন্নাহ্‌ সাহেবের উদ্বোধনী ভাষণে। এ ভাষনে তিনি স্পষ্টতঃ ই বলেছিলেন পাকিস্তান রাষ্ট্রিয় কাঠামোয় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানের কোন ব্যবধান নেই, সবারই জাতীয়তা হবে পাকিস্তানী। । তাঁর এ বক্তেব্যেই দ্বিজাতিতত্বের কবর রচিত হয়ে সমর্থিত হয় ধর্মনিরপেক্ষতার মূলবাণী। শুধু এতোটুকুই নয়, বরং পরবর্র্তী জীবনে তিনি তার প্রচারিত দ্বিজাতিতত্ত্বে সংশয় প্রকাশ করেন এবং জানা যায় মৃত্যুশয্যায় জিন্নাহ্‌ এক উচ্চারণ ছিল, পাকিস্তান, দি বিগেষ্ট ব্লান্ডার অব মাই লাইফ ( সূত্র: কার্ল পোজে, টাইম ম্যাহাজিন, ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৯৬ইং)

স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিতে জিন্নাহ্‌ কর্তৃক আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত দ্বিজাতিতত্বের প্রেতাত্মাকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ মোড়কে আমদানী করলেন জেনারেল জিয়া। জেনারেল জিয়া নিজে একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদকে ভিত্তি করেই সংঘটিত হয়েছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত তিনি সচেতন ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও জিন্নাহর্‌ মতই জেনারেল জিয়া তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ পূরণে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের আশ্রয় নেন। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তন যে মূলত: পাকিস্তানপন্থীদের ষড়যন্ত্র ছিল তা আজ ক্রমশ: প্রকাশিত হচ্ছে। মুজীব হত্যার অন্যতম নায়ক ফাঁসীর আসামী কর্নেল ফারুকের প্রদত্ত জবানবন্দীতে জানা যায় মুজীব হত্যার বিষয়ে জিয়া পূর্বাহ্নেই অবহিত ছিলেন এবং মুজীব হত্যার সংশ্লিষ্ট, সামরিক অফিসারদের প্রতি তার যে আর্শীবাদ ছিল সে বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। পরবর্তীতে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অধিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই জিয়া পাকিস্তানপন্থী সামরিক/বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের প্ররোচনায় এবং নিজের রাজনৈতিক শক্তি সুসংহত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রবর্তন করলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের শ্লোগান। চতুর জিয়া জানতেন ধর্মপ্রাণ বাঙ্গালী মুসলমানদেরকে ধর্র্মীয় সুড়সুড়ি এবং ভারতবিরোধী শ্লোগান দিয়ে নেতৃত্বশূণ্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহজেই সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করা যাবে। জিয়ার ধর্মভিত্তিক এ জাতীয়তাবাদে মদদ যোগায় একাত্তরের পরাজিত শক্তিবর্গ এবং পাকিস্তানপন্থী কতিপয় বুদ্ধিজীবি।

অনেকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের অপরিহার্যতার সপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি প্রদর্শন করে থাকেন। তাদের প্রধানতম যুক্তি হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালী হতে বাংলাদেশের বাঙ্গালীকে পৃথকীকরণের জন্যই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আবশ্যিকতা রয়েছে। কিন্তু এ যুক্তি ধোপে টিকে না। কারণ নৃতাত্বিক সংজ্ঞানুযায়ী কোন ব্যক্তি জন্মসূত্রে প্রাপ্ত জাতীয়তা পরিত্যাগ করতে পারে না। তাই স্বভাবত:ই প্রশ্ন জাগে একজন বাঙ্গালী কিভাবে তার জন্মসূত্রে বাঙ্গালিত্ব পরিত্যাগ করে বাংলাদেশী জাতিতে পরিণত হবে? বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ সম্পূর্ণ কাল্পনিক কারণ বাংলাদেশী জাতি বলে কোন জাতির অস্তিত্ব নেই। এ ছাড়া পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীরা জাতি হিসাবে বাঙ্গালী পরিচয় প্রদানে বাঁধা কোথায়? উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া দুদেশের অধিবাসীদেরই জাতীয়তা কোরীয়-তাতে তো কোন রূপ সমস্যার সৃষ্টি হয় বলে জানা যায়নি। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের সপক্ষে আরো একটি যুক্তি হচ্ছে বাঙ্গালী হিসাবে বাংলাদেশের সকলকে নাগরিকের পরিচিতি হলে অপরাপর অবাঙ্গালী ( যেমন চাকমা, গারো, সাঁওতাল, বিহারী, ইত্যাদি)-দের প্রতি অবিচার করা হবে। হ্যাঁ, এ যুক্তিটি অবশ্যই সমর্থনযোগ্য। যদিও সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের অবাঙ্গালীরা নগন্য ( ০.৬% বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো) তবুও তাদের জাতীয়তা, সাহিত্য, সংস্কৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের দায়িত্ব বর্তায় সংখ্যাগুরু বাঙ্গালীদের উপর। তাই সংখ্যালঘুদের জাতি সত্ত্বার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা গ্রহণ করা যেতে পারে।

(ক) বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্রীয় পরিচিতি বা নাগরিকত্ব হবে বাংলাদেশী। উল্লেখ্য বাংলাদেশী প্রতিবাচ্য দ্বারা জাতীয়তা বা ন্যাশনালিটি বুঝাবে না বরং তা বুঝাবে নাগরিকত্ব বা সিটিজেনশীপ।

(খ) একজন মানুষের জাতীয়তা জন্মগত এবং তা বর্জন কিংবা অর্জন করা সম্ভব নয়। উদাহরণস্বরূপ, একজন বাঙ্গালী কখনো বাঙ্গালীত্ব পরিহার করে বিহারী বা পাঞ্জাবী জাতিতে পরিবর্তিত হতে পারবে না। তবে নাগরিকত্ব বা সিটিজেনশীপ গ্রহণ কিংবা বর্জন করা সম্ভব। একজন বাঙ্গালী বৃটেনের কিংবা অন্য কোন দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু তার পক্ষে মূল জাতীয়তা বাঙ্গালীত্ব বর্জন করা কখনো সম্ভবপর নয়। এই দর্শনের আলোকে বাংলাদেশের সকল নাগরিক যে যার নিজস্ব জাতিসত্তার ভিত্তিতে জাতীয়তার পরিচয় প্রদান করতে পারবে। উল্লেখ্য বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর জাতীয়তা বাঙ্গালী। অপরাপর যে সব সংখ্যালঘু জাতি বা উপজাতি বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানার অধিবাসী তারাও তাদের নিজস্ব জাতীয়তায় পরিচিত পেতে কোনরূপ বিধি নিষেধের সম্মুখীন হবে না।

(গ) যেহেতু আমাদের মুক্তি সংগ্রামে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ছিল মূল চালিকা শক্তি এবং বাংলাদেশের জনসংখ্যা ৯৯% ভাগের বেশী সংখ্যক অধিবাসী বাঙ্গালী সেহেতু বাংলাদেশের সংবিধানের মূল প্রধান স্তম্ভ হবে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ।

জাতীয়তাবাদ সংশ্লিষ্ট বর্তমান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবিসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ঐক্যমত্যে আসা আবশ্যক। বিষেশত: এই অহেতুক বির্তকটি নিয়ে বর্তমানে দেশে যে বিভ্রান্তি রয়েছে তা মোটেই কাঙ্খিত নয়। আশা করা যায় উপরোক্ত প্রস্তাবনা কার্য্যকরী করলে বাঙ্গালী বনাম বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ নামক নষ্ট বিতর্কের অবসান হয়ে আমাদের জাতীয় পরিচিতির সংকট কেটে ওঠবে।
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×