বাবার অ্যাক্সিডেন্ট ,কিছু দুঃসহ স্মৃতি
এবার ঈদের আর পূজার ছুটি একসাথে হওয়ায় ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় অনেক প্ল্যান ছিল, এক সাথে কাকু, পিসি, পিস্তাতু ভাইবোন সবাই মিলে পূজার বাজার করব, পূজা দেখব কিন্তু সব আনন্দ মাটি হয়ে গেছে ঈদের পরের দিন বাবুর মোটর সাইকেল অ্যাক্সিডেন্ট এ। প্রথম যখন আমি মোবাইলে শুনলাম বাবু অ্যাক্সিডেন্ট করেছে মুহূর্তের মধ্যে আমার মনে হ্ল আমার চারপাশের পৃথিবীটা দুলে উঠল, মা আমার সাথে ছিল তাকে নিয়ে কিভাবে স্হানীয় ঈশ্বরদী জেনারেল হাসপাতালে পৌছালাম তা একমাত্র ঈশ্বর জানেন। পৌছে দেখি আমার কয়েক জন কাকু বাবুকে বেডে শুইয়ে নিয়ে আছে আর বাবা অবচেতনভাবে আমার আর আমার ছোট ভাইয়ের নাম বলে বিড়বিড় করছে। খোঁজ নিয়ে জানলাম ঈশ্বরদী হাসপাতালে এক প্রেশার মাপা ছাড়া আর কোন কিছুরই চিকিৎসা তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়,তাদের রক্ত পরীক্ষা মেশিন, এক্সরে মেশিন সব কিছু অকেজ হয়ে পরে আছে তত্তাবধানের অভাবে এমনকি তাদের ফ্রিজে সামান্য আইস পর্যন্ত নেই আর সেদিন কর্তব্যরত ডাক্তার ছিলেন ডা. আজমেরী বেগম লোক মুখে শুনেছি উনি নাকি প্রাইভেট ক্লিনিকে শুধু এম আর ও করা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন । যাই হোক ওখান থেকে রওনা হলাম রাজশাহীর দিকে , আর এখান থেকেই আমি বুঝতে পারলাম আমাদের দেশে হাসপাতাল এবং ডাক্তার এর কাছে যাওয়া মানে পাপ করা। রাজশাহী গিয়ে আমরা প্রথমে যোগাযোগ করলাম রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে, সেখানে ইন্টার্ণ রত আমার এক বন্ধু বলল যে আজ ঈদের পরের দিন মারা গেলেও কোন ডাক্তার পাওয়া যাবেনা, ততক্ষণে আমরা বুঝে গেছি বাবুর দুই হাত ই মারাত্মক ভাবে আহত ,যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। বাবুর ব্যাথা জজ রিত মুখ দেখে আমি পাগলের মত ফোন করছি একজন ডাক্তারের জন্য, শেষ পযন্ত পেলাম হাড় জোড় বিশেষজ্ঞ ডাঃ বি.কে. দাম কে তিনি দেখে বললেন দ্রুত এক্স রে করার জন্য কিন্তু এক্সরে করাব কোথায় ? ঈদের কারণে প্রায় সমস্ত প্যাথলজী বন্ধ, মনে হচ্ছিল আমি আর ভাবতে পারবনা । বাবুর শরীরটা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে, নরমালি হাইপারটেনশন এর রোগী তিনি, এই অ্যাক্সসিডেন্ট তারপর এতদুর রাস্তা জার্নি ,আমরা খুবই টেনশনের মধ্যে সময় কাটাতে লাগলাম,। তবে এর মধ্যে ইঞ্জেকশন এবং ঘুমের ঔষধের কারণে বাবুর ব্যথার অনুভুতি একটু একটু কমে আসতে লাগল। এরপর তাকে নিয়ে এক্সরে করতে গেলাম, আমি তখন বুঝতে পারছি অসম্ভব কষ্ট পাচ্ছে বাবু কিন্তু প্রকাশ করছেনা আমরা কষ্ট পাব জন্য,এরপর শুরু হ্ল ডাক্তার এর জন্য আমাদের অপেক্ষার পালা আমার কাছে মনে হচ্ছিল সময় যেন থমকে গেছে আমি শুধু একবার বাবুর মুখের দিকে তাকায় আর একবার ঘড়ির দিকে, মায়ের দিকে তাকানর সাহস পাচ্ছিলাম না, মা কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ।আমার কাকুরা ক্লান্ত মুখে ঘুরাফিরা করছে, শেষ পযন্ত ২ ঘ ন্টা পড়ে ডাক্তার আসলেন এবং জীবনের সবচেয়ে খারাপ একটা সংবাদ শোনালেন , তিনি যা বলছিলেন আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার শুধু মনে হচ্ছিল এটা কিভাবে স ম্ভব আমি ছোট থেকে ক ত স্বপ্ন দেখেছি আমি আর বাবু সিন্দাবাদের মত অ্যাডভেঞ্চারে বের হয়েছি, কখনও বাবুকে কল্পনা করেছি টিপু সুলতান এর মত, কখনও ভেবেছি মিস্টিরিয়াস আইল্যান্ড এর মত কোন অচেনা দ্বীপে হারিয়ে যাব বাবুর সাথে আসলে সব কিছুই আমার বাবু কেন্দ্রিক কারণ আমি জানি আমার বাবু সাথে থাকা মানেই নির্ভরতা , নিজেকে নিয়ে কোন রকম টেনশন না করা, কিন্তু ডাক্তার যখন বলছিলেন তার দুই হাত দিয়ে উনি কখনও আর ভারি কাজ করতে পারবেন না তখন সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজেকে খুব পরাজিত মনে হচ্ছিল।
যেদিন বাবার হাড় জোড়া লাগাবে সেদিন সকাল থেকেই সবাই খুব টেনশনে বেলা ১২ টার দিকে পুন রায় রক্ত পরীক্ষা এবং ইসিজি সব করে রাখা হ্ল, বেলা ২ টায় বাবাকে অপারেশ ন থিয়েটারে নেওয়া হ্ল,মা একেবারে ভেজ্ঞে পড়েছে শুধু বারবার আমাকে জিজ্ঞেস করছে তোর বাবা ভাল হবে তো ? আমি শুধু মাকে শান্তনা দিচ্ছি কিন্তু নিজেকে দিতে পারছিনা, কিভাবেই বা দেব ? সবাই আমাকে বলছে কেন আমরা বাবাকে ঢাকায় নিচ্ছিনা, কিন্তু কেউ বুঝতে চেষ্টা করছেনা যার সামান্য নড়াচড়া করতে কষ্ট হচ্ছে তাকে কিভাবে এতদুর নিয়ে যায়। বাবুর অপারেশন শেষ হয় বেলা ৪ টায় , বাবাকে যখন বের করল বাবা তখন সেন্সলেস অবস্থায় আছে ,বাবুর সবসময়ের হাসি মুখটা খুব বিষন্ন দেখাচ্ছিল। ডাক্তার আমাদেরকে বলল জ্ঞান ফেরার প্রাথমিক স্টেজে রোগী কথা বলতে পারে কিন্তু তার সাথে কথা বলা যাবেনা। এরপর আমরা সবাই বাবুর পাশে বসে, কখন জ্ঞান ফিরে তার অপেক্ষায় , বাবুর যখন খুব আস্তে আস্তে চেতনা আসছে আর সেই মূহুর্তে বাবু আমার নাম ধরে ডাকছে মনে হচ্ছে অনেক দূ্র থেকে বাবু আমাকে আকূ্ল ভাবে ডাকছে কিন্তু আমি বাবুর সাথে কথা বলতে পারছিনা আমার ভেতরটা দুমরে মুচরে যাচ্ছিল, আমার তখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছিল, বাবু আমি তোমার পাশে আছি...তুমি কখন ও আমার কাছ থেকে দূ্রে যেওনা।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আকুতি
দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ক- এর নুডুলস
অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।
ক
একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন