somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোদ,পাথর,মোস্ট ওয়ান্টেড আর আমাদের সর্দি-জ্বর.......

২৩ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ৯:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







একা পাখি বসে আছে.................

জানালা টা সারা রাত শহুরে ফুটপাথের ম্যানহোলের মুখের ভঙ্গিমায় হা করে ছিলো।আর নির্বাচনী জোসে রক্তগরম পাবলিক যে রকম গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে কুলাঙ্গার নেতার চরিত্র রক্ষার গুরুদায়িত্ব নিজস্ব কাঁধে তুলে মিছিলের পর মিছিল ভাঙ্গে,ঠিক সেভাবে আসি আসি করা উত্তরীয় শীতমাখা বাতাসেরা হুড়মুড় ঢুকে কামাতুর প্রেমিকার মত সারা রাত জড়ায়ে রেখেছিল আমাকে।
রতিক্রিয়া শেষে নির্গমনের সুখ,জানি না,কতোটা সুখকর,কিংবা প্রেমিকার উষ্ণ বুকের ভেতর নাসিকা বিদ্ধ করে ঘাম আর কামের মিশ্র গন্ধ পেতে পেতে ঘুমিয়ে পড়া কতোটা নস্টালজিক করে দেয়,তবে নাসিকা-রন্ধ্রের জায়গা-অজায়গায় বিকলাঙ্গ ভিক্ষুকের মত নির্বাক বসে থাকা সর্দি যে মোটেই রতিক্রিয়া বা প্রেমিকার উষ্ণ বুকের মত কোমল নয়,বরং ছাল উঠা নেড়ি কুকুর বা রাজাকার দর্শনের মতই বিশ্রী অস্বস্তিকর বিষয়..তা পূর্ণ অনুভূত!!!!
যাহা পাই আমরা দলবেঁধে পাই....এই সূত্র মেনে বন্ধুতার অদ্ভূত কোমল বাঁধনে জড়ানো আমরা সবাই নাসিকা-রন্ধ্র বন্ধ থাকার অস্বস্তির শেকলে আটকা পড়ে আছি।ঠিক যেমন টা ক্লাস ফাঁকি মেরে ক্যান্টিনের কোণে চায়ের কাপ আর গোল্ডলীফ-বেনসনের ধূম্রজালে আটকা পড়ে থাকি।

ফ্লুইড মেকানিক্সের ক্লাসে সহপাঠীদের চোখগুলো আমাদের পানে নিবন্ধিত থাকে সবসময়,অনেকটা যেন অনেক বিরহের পর ঘন্টাখানেকের অভিসারে প্রেমিকার পানে প্রেমিকের কাতর আহবান।
স্যার রোল চেকিং শেষ করার আগেই মাথা টা রেলস্টশনের পরিশ্রমী কুলির দিবসাবসানের ঘাড়ের মত বাঁকিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে সোজা চায়ের কাপে হামলে পড়ি বুভুক্ষু মাছির মত।


দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা...........................

হাত-পা-চোখ-মুখ-আপাতত বন্ধ নাসিকা-কান ...সবই আর আর দশজনের মত থাকা সত্ত্বেও আমাদের মন খারাপ রাখার সুযোগ নেই।আমরা সকাল টা খুব কমই টের পাই,শার্ট গলিয়ে ব্যাগ ঝুলিয়ে ক্লাসে যেতে যেতেই নাস্তা করার অবসর হারিয়ে যায় যেমন হারায় হঠাৎ আকাশে চোখ উঠা মানসীর ভালবাসা।আমরা দুপুর টের পাই না,দুপুরের রোদ আর তার ঝাঁঝালো স্বাদ সিগারেটের সাথেই পুড়ে যায়।আমাদের ক্লান্ত অবসন্ন পা গুলো বিকেলের ফিকে ফিকে হয়ে আসা লাল আলোর প্রতিবিম্ব মাড়িয়ে রুমে ফেরে।
আমাদের কোন ভালোবাসাও নেই।ঈশ্বর নামের কেউ একজন নাকি সব নির্ধারন করেন একচ্ছত্র অহংকারের পূর্ন সুযোগ নিয়ে!!!মুখস্ত বানী আর যুক্তিহীন গাল-গল্প এড়িয়ে আমরা সত্যের কাছাকাছি যেতে চাই বলে আমাদের প্রতি বোধহয় ঘৃণা থেকে তিনি আমাদের একান্ত চাওয়া গুলো বেওয়ারিশ লাশের মত মাটিচাপা দিয়ে দেন।
আমাদের রাতগুলো আসে আড্ডা কিংবা মুভির কাঁধে ভর করে।আমরা ঘুমিয়ে পড়ি আরেকটা সাদামাটা সকালে জেগে উঠার জন্য।
তবুও আমরা খারাপ নেই।নিজেরাই নিজেদের কে ভালোবাসি,সিগারেট টা শেয়ার করি,চায়ের কাপ টা এগিয়ে দেই।
আমরা মায়া কাটিয়ে উঠেছি।কোন ছলনায় পড়ে গভীর রাতে মুঠোফোন ব্যস্ত রাখার চেয়ে আমরা মায়াবিনীদের ঘৃণা করতে আর সিগারেটে অগ্নিসংযোগ নিমিত্তে হারিয়ে যাওয়া ম্যাচ খুঁজতেই বেশী ভালোবাসি।


তিনদিন তোর বাড়ীতে গেলাম..........

আমরা সময়ের সাথে যুগপৎ পাথর হয়ে উঠি,কান্নার রঙ গুলো ধুলোয় ছেড়ে জানালা টা খুলে ফেলি রোদের আশায়,একটার পর একটা রোদের কণায় মনের পাথর গুলো গলিয়ে ফেলি।
এক সূর্যের ধ্যান ছেড়ে দেখি হাতের কাছেই অনেক সূর্য।আজ আমাদের কোন সূর্যের দরকার নেই।এদের কাছে আমাদের আনন্দ আছে,কল্পনা আছে,মুঠোফোনের ব্যস্ততা আছে,জৈবিক চাহিদা বা পাপও আছে,কিন্তু কোন ভালোবাসার চাওয়া নেই।
মরা নদী হয়ে বেশ আছি।কেউ কথা রাখে নি।আমরাও আর কথা রাখি না।নির্দ্বিধায় শহুরে ব্যস্ততার মাঝে দাঁড়িয়ে চুমু এঁকে ফোনলিস্ট হতে ডিলিট করে দেই,নিজেকে ব্যস্ত করে তুলি নতুন চুমুর আশায়।
আমাদের ভেতরের আগুনে বাহিরের সব পুড়ে ছারখার।আর,আমরা খোলা জানালায় ধূমায়িত পেপারে পড়ি আজকের তাজা খবর।হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ,কাতরাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা......................।
অতঃপর আমরা ব্যস্ত হয়ে উঠি ব্লগে,ফেসবুকে,আর মোস্ট ওয়ান্টেডে স্কোর বাড়ানোর চেষ্টায়।

চারিদিকে উৎসব...............

আমাদের দৈনন্দিনতা গভীর মনোযোগে খেয়াল করে তিন জন।দেয়ালের টিকটিকি,হলের দারোয়ান আর রেলিং এ বসা একটি নিঃসঙ্গ কাক।





[হয়তো চলবে]
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×