somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুড়ি বছর পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে!

২১ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অসমান্তরাল এক মোঠো পথের শেষ মাথায় হেটে গিয়ে শেষ হয় প্রাতঃভ্রমণ। এভাবেই কতো কতো মেঠো পথ মিশে যায় পথিকের পথচলায়! সময়ও পাল্লা দিয়ে মিশে অতীত আর বর্তমানের সাথে। ভবিষ্যৎগুলো সাদা মেঘের মতো আকাশে ভেসে ভেসে মিশে যায় বর্তমানের সাথে। জীবনের কুড়ি কুড়ি বছর পার হয় এভাবেই।

অনেক বছর আগের সেই সকালের শুরুটাও শাদামাটা ছিল হয়তো বা। হয়তো বা সেই সকালেও পুবের নারকেল গাছটার চিরল পাতা ঘেসে আলো এসে পড়েছিল গাঢ় বিছানার উপর। সেই সকালেও আবছা শীত ছিল। ধানক্ষেতের দেশের কার্তিকের হলুদ নদী, নরম কাশবন, বিন্নায় ছেয়ে যাওয়া মাঠ, মাঠের ভিতরে ভেসে বেড়ানো শিশিরের জল সবই ছিল সেই সকালেও। তবু্ও এতো বছর পর সেই সকালটা অন্য অনেক সকাল থেকে ভিন্নতর মনে হয়।

স্মৃতির দুকুল ছাপিয়ে উপচে পড়ে ঘটনার স্রোতেরা। আবছা আলোয় ধরা দেয় মৃদু কিছু ঘটনার রেখা, কয়েক টুকরো কথোপকথন। সেই সকালে, সেই নরম শীতের সকালে উঠানের জাম গাছ পেরিয়ে অন্য এক উঠানে গিয়েছিলাম জানি। সেখানে তখন নরম রোদের খেলা। তুমি এবং তোমার যে প্রগাঢ় ছায়া এখনো আমার মধ্যে তার উন্মোচন সেই সকালেই হয়েছিল। তোমাকে দেখে মুদ্ধ হয়েছিলাম সেই বয়সেই। মুগ্ধ হওয়ার সেই বয়সটাতে মুগ্ধতা প্রকাশ করার সুযোগ হয়তো ছিল না। কিংবা প্রকাশের ভাবনা হয়তো মনের আবরণকে চিরে যায় নি! কেবল জেনে গিয়েছিলাম শীতের অতিথি পাখির মতো তুমিও উড়ে এসেছিলে অন্য কোথাও থেকে! তারপর মুগ্ধতার সেই বয়সের কিছু আবছা সংলাপ।

পরিচয় হয়ে গিয়েছিল কথার ছলে। খানিক কথোপকথনের পরে উড়ে যাওয়া বকটাকে গ্রাম্য বিলের মাঝে বসতে দেখলাম দুজনেই। এইবার মুগ্ধতা ভর করলো তোমার চোখে। কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞাসা-

তুমি এর আগে কখনো গ্রামে আসো নি?

আসছিলাম অনেক ছোট বেলায়। তখনকার কথা আমার কিছুই মনে নেই।

কথা হাতড়াতে গিয়ে বলে ফেললাম- আমাদের গ্রামটা অনেক সুন্দর।

তাই? এই তাই শব্দটা হয়তো বা তখন নিতান্তই কথাচ্ছলে বলা ছিল। কিন্তু সেই সময়ের আমার কাছে তা এতোটাই আবেশীয় হয়ে দাড়ালো আমি আবেগ নিয়ে বলে ফেললাম শিশিরের জলে পা মাড়াতে যাবে? স্বল্প পরিচিত একজনকে কোন মুগ্ধতায় যে সেই সকালে শীত আর শিশিরের জলের সঙ্গীত শুনাতে গিয়েছিলাম! সেই সঙ্গীত শেষে মুগ্ধ আবেশ, তারপর শব্দহীন দীর্ঘ দিনরাত। সময়ের নানা প্রহর!

কোন এক ঘুমভাঙা রাতে অনেক বছরে পরে আবছা আলো এসে পড়ে ঘরে। ভাবি যদি দেখা হয় আবার তোমার সাথে.....জীবনের কুড়ি কুড়ি বছর পরে! অনুচ্চারিত শব্দগুলো ধরা দেয় তখনই।

"জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার-
তখন হঠাৎ যদি মেঠো পথে পাই আমি তোমারে আবার!
হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে
সরু সরু কালো কালো ডালপালা মুখে নিয়ে তার,
শিরীষের অথবা জামের,
ঝাউয়ের- আমের;
কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে!

জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!"
৪০টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×