আজ রবিন অনেক শান্ত । সেদিনের ঝড় তাকে অনেক এলোমেলো করে দিয়েছে সত্য, তবে সে চেষ্টা করছে নিজেকে শক্ত রাখার । পারবে কি-না সেই জানে । এই কয়েকটা দিনে অনেক বদলে গিয়েছিল সে । কোন সে জাদুর স্পর্শে । পৃথিবীটা অনেক সুন্দর লাগতো তখন ওর । আর আজ, ধুলো-ধুসরিত বর্ণহীন এক স্বার্থপর পৃথিবীর বাসিন্দা সে, হেঁটে চলেছে সেই ধানমন্ডি লেকের পাশ দিয়ে । আজ ও বড্ড একা ।
আরে, এই তো দেখা যাচ্ছে, লিজা আর রবিন পাশাপাশি বসে গল্প করছে আর নির্মল হাসিতে মেতে উঠছে দুজন । হাতে ঝালমুড়ির ঠোঙা । কি পরম আনন্দে হাসছে আর অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ওরা আজকের এই হতভাগ্য রবিনের দিকে । নাহ, ভুল ভাঙলো রবিনের । কই? ওরাতো ওখানে নেই । সেই যে লিজা পিছন ফিরে চলে গেল, আর ফিরেও তো তাকালো না ওর দিকে । একটা তুচ্ছ খেলার পুতুলকে যেমন খেলার শেষে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে সবাই, তেমনই ওকে ছুড়ে ফেলল সে । এতটুকু দয়ামায়াও কি ছিল না ওর? কি নিষ্ঠুর ছিল এই অভিনয়।
সাইন্সল্যাবের কাছে আসতেই একটা রিকশায় চাপল রবিন । চোখ দুটো ক্রমশ ভারী হয়ে আসছিল ওর । এই রাস্তাটা আজ ওর কাছে বিষাক্ত, কণ্টকাকীর্ণ মনে হচ্ছে । এই রাস্তা ধরেই কত বাসায় পৌঁছে দিয়েছে লিজাকে । আজ ওর মনে পড়ছে সেই নির্ঘুম রাতগুলোর কথা, যখন লিজা ওকে বলত, "কাল সকাল ছয়টায় কিন্তু আমাকে ডেকে দিও ।" গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে জেগে থাকত ও । আর ছয়টা বাজতেই মোবাইলে কল দিয়ে গান শুনিয়ে শুনিয়ে ঘুম ভাঙাতো লিজার । হায় রে হায়! তখন কি আর জানত, আজকের এই দিনও আসবে তার জীবনে । (অসমাপ্ত)
[বি.দ্র : সময় স্বল্পতার কারণে আজ এ পর্যন্তই লিখতে পারলাম । পরবর্তীতে বাকি অংশগুলো লিখব । সবাই ভালো থাকবেন । এই শুভকামনায় শেষ করছি ।]