somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

***আসুন জেনে নিইঃ কিভাবে নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করা যায়***

১৯ শে অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈমান আনয়নের পর একজন মুসলিমের উপর সর্বপ্রথম যে দায়িত্বটি বর্তায় তা হলো নামাজ। আল্লাহর একাত্ববাদরে স্বীকৃতি দিয়ে একমাত্র তারই জন্য একমাত্র তারই নিকট নির্ধিদ্বায় মাথা নত করে দেওয়া প্রতিটি মুসলামানের অবশ্য কর্তব্য। নামাজ পড়া একজন মুসলিমের জন্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে আমি কিছুদিন আগে লিখেছিলাম। আজকে লিখব কিভাবে নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করা যায়।

অনেক মুসলিম ভাই প্রায়ই বলে থাকেন নামাজের সময় আমাদের মন স্থির থাকে না, নানা ধরণের চিন্তা আমাদের মনে এসে ঘুরপাক খায়, অনেক সময় আমরা কত রাকাত পড়লাম তাও ভুলে যাই। এর প্রধানতম কারণ হচ্ছে, নামাজে আমরা যা পড়ছি তা আমরা শুধু উচ্চারণই করে যাচ্ছি কিন্তু কেন করছি তা নিয়ে চিন্তা করার অবকাশ হয়ে উঠছে না। নামাজের শুরুতে আমরা সবাই 'আউযুবিল্লাহ.....''বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম' বলে থাকি। আসুন এই দুটির মর্মার্থ জেনে নিই। ইনশাল্লাহ, আমাদের নামাজের মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।


অর্থ: আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে

এর অর্থ হলো: আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি, তাঁর দরবারে নিরাপত্তা কামনা করি এই মানব শুত্রু বিতাড়িত শয়তানের অনিষ্ট থেকে, যাতে, সে আমার ধর্মীয় বা পার্থিব কোন ক্ষতি সাধন করতে না পারে, আমি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছি তা সম্পাদনে সে যেন আমাকে বাধা দিতে না পারে এবং যা নিষিদ্ধ তার প্রতি সে যেন আমাকে উদ্বুদ্ধ করতে না পারে। কেননা, যখন বান্দাহ নামায, কুরআন তেলওয়াত বা অন্য কোন কল্যাণকর কাজের ইচ্ছা পোষণ করে থাকে, তখন এই শয়তান তাকে বিভ্রান্ত করার জন্য অত্যন্ত তৎপর হয়ে উঠে। আর, তা এই জন্যে যে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা ব্যতিরেকে আপনার পক্ষে শয়তানকে দূর করার কোন উপায় নেই।

"যদি কখনো শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে তুমি আল্লাহ তায়ালার কাছে আশ্রয় চাও; অবশ্যই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ"। (সূরা হা-মীম আস সাজদা: ৩৬)

সুতরাং আপনি যখন আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবেন এবং তাঁকে আঁকড়ে ধরবেন তখন তা নামাজের মধ্যে আপনার আন্তরিক উপস্থিতি বা একাগ্রচিত্ত হওয়ার একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অতএব, আপনি এই বাক্যের মর্মার্থ ভালভাবে অনুধাবন করবেন এবং অধিকাংশ লোকের ন্যায় শুধু মুখে মুখে তা ব্যক্ত করে ক্ষান্ত হবেন না।


'বিসমিল্লাহ' (আল্রাহর নামে) এর অর্থ হলো: আমি একাজে-পড়া, দু'আ বা অন্য কিছুই হোক নিয়োজিত হলাম আল্লাহর নামে, আমার শক্তি সামর্থের বলে নয়, বরং একাজ সম্পাদন করতে যাচ্ছি আল্লাহ পাকের সাহায্যে, তাঁর কল্যাণময় ও মহান নামরে বরকত কামনা করে। ধর্মীয় ও পার্থিব প্রতিটি কাজের প্রারম্ভে এই 'বিসমিল্লাহ' পড়তে হয়। সুতরাং আপনি মনে করবেন যে, আপনার এই বিসমিল্লাহ পড়া কেবল আল্লাহর সাহায্য নিয়ে শুরু হচ্ছে, স্বীয় শক্তি সামর্থের তোয়াক্কা করে নয়। যেমন: আপনি কোন কাজ শুরু করতে গেলেন তখন আপনি ধারণা করেন আমার টাকা আছে, তাই আমার সামর্থ আছে আমি এই কাজটি করতে পারব; আপনি টাকার উপর ভরসা করলেন। আবার কোন একটি কাজ করতে গেলেন তখন ভাবলেন অমুক ব্যক্তি আমাকে সাহায্য করবে, আমি কাজটি করতে পারবো অর্থাৎ আপনি ঐ ব্যক্তিটির উপর ভরসা করলেন। অর্থাৎ স্বীয় শক্তি সামর্থের উপর ভরসা করে কাজে অগ্রসর হচ্ছেন, আল্লাহর উপর ভরসা করে নয়, যা শিরকের নামান্তর! কারণ, বিসমিল্লাহ অর্থই হচ্ছে আল্লাহর নামে, অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করেই কাজটি শুরু করতে হয়, তিনিই একমাত্র কল্যাণদাতা, তিনি সামর্থ দিয়েছেন বলেই আমি কাজটি করতে পারছি; এই ভরসা পাওয়ার যোগ্য একমাত্র আল্লাহ এখন সেখানে যদি আপনি অন্য কারো বা কোন বস্তুর উপর ভরসা করেন তখন আপনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার বানালেন।

তাই যখন বিসমিল্লাহ বলবেন, আপনার অন্তরে আল্লাহর উপস্থিতি উপলব্ধি হবে যা যাবতীয় কল্যাণ লাভের পথে প্রতিবন্ধক সমূহ দূরীকরণে সহায়ক হবে, আপনার কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে কারণ আপনি একমাত্র আল্লাহকে ইবাদতের একমাত্র অংশীদার বলে বিশ্বাস করেন, আর আল্লাহর নামে কাজ শুরু করে আপনি তারই বাস্তব স্বীকৃতি দিলেন।


অর্থ: "পরম করুণাময় অতি দয়ালু"
রহমত থেকে গুণবাচক দুটি নাম। তন্মধ্যে একটি অপরটির চেয়ে অধিকতর অর্থবহ। ইবনে আব্বাস (রা) বলেন: এ গুণবাচক নাম দুটো অতি সূক্ষ্ম, তন্মধ্যে একটি ফরটির চেয়ে অধিকতর সূক্ষ্ম অর্থাৎ অধিক রহমত সম্পন্ন।

এখন থেকে নামাজ তথা কোন কাজ শুরুর প্রারম্ভে এই বিষয়গুলো উপলব্ধি করবেন ইনশাল্লাহ, নামাযে আপনাদের মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।

মহান আল্লাহ আমাদের শয়তান ও তার অনুসারীদের, বিভ্রান্তকারীদের, বিদআতীদের এবং শিরকপূর্ণ কথা, কাজ ও চিন্তা থেকে হিফাজত করুন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ১:০৫
১৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×