somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝড়ের বেগের মতো ধায়....!!!

১৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

::উৎসর্গ মাহবুব মতিন::



মাহবুব মতিনের সাথে আমার সরাসরি পরিচয় ছিলোনা.... আমি তাঁকে জানতাম, তিনি আমাকে; মাধ্যম ফয়সল নোই, উপলক্ষ্য রাহেলা হত্যামামলার বিচারের দাবী। বিভিন্ন জনের নানা রকম প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাস্তবে যখন আবেদন পত্রটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছেনা তখন প্রতিশ্রুতিগুলো ভুলে নিজেদের উদ্যোগ নিতে হবে বুঝতে পারি। মাহবুব মাতিনকে ফয়সল নোই বলতেই তিনি রাজী হয়ে যান এবং আমাদেরে আাবেদনপত্রটি পৌছে যায় যথাস্থানে।

যাঁর সাথে সরাসরি কোন যোগাযোগ ছিলোনা, এমনকি ব্লগেও কখনও আলাপ হয়নি তাঁর মৃত্যুটি মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে, হয়তো খুব হঠাৎ চলে গেছেন বলে, হয়তো এমন অসময়ে চলে গেছেন বলে। তবে মনে হয়, খুব একাকী বেঁচে থাকার চেষ্টা শেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন বলেই বেশি খারাপ লাগছে..


মাহবুব মতিনের সকল ভালোবাসা, সকল সাধনা আর স্বপ্ন যাকে ঘিরে, সেই মৌনপ্রিয়র কথা ভেবে ভীষণ খারাপ লাগছে। নিজের মা বাবা ছাড়া আর সকলের জীবনে কিছু আগে পরে মাহবুব মতিনের শূণ্যস্থান পূরণ হবে, শুধু এই ছোট্ট শিশুটি বড় হবে এক হাহাকার নিয়ে। প্রচন্ড স্নেহময়ী এক পিতা, যিনি মন প্রাণ দিয়ে শুধু তাঁর সন্তানকে ভালোবেসেছিলেন তাঁর সংস্পর্শ আর কোনদিন পাবেনা মৌনপ্রিয়।

পিতামাতার ভালোবাসা সাধারনত নিরব থাকে, কাজে কর্মে প্রকাশ পেলেও মুখে বা কথায় তা সাধারনত সেভাবে আসেনা। দেখে অবাক হলাম, মাহবুব মতিন পুত্র মৌনপ্রিয়'র প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসার কথা ছড়িয়ে রেখেছেন নেট জুড়ে.. যে ভালোবাসার কথা মৌনপ্রিয় একদিন জানবে। এমনকি মৌন'র হয়ে একটি সাইটও খুলেছেন!!! খুব শীঘ্রই ওপারে পাড়ি জমাবেন বলেই কি তাঁর এমন প্রকাশ!!!

শুধু কি মৌন'র প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ! ছোট্ট জীবনে হাজার ব্যস্ততা ছিলো তাঁর.. কখনও শিশুদের জন্য কিছু করার চেষ্টা, কখনও নিজের পেশার মানুষদের জন্য, আবার কখনও শুধুই সাধারন মানুষের জন্য.. পেশার প্রতি নিষ্ঠার কারনে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এই একজীবনে কতো কিছুই করার চেষ্টা ছিলো তাঁর, হাতে সময় কম বুঝতে পেরেছিলেন হয়তো..


সামহয়্যারইন ব্লগের প্রায় শুরু থেকেই স্বনামে, ছদ্মনামে জড়িত ছিলেন তিনি একজন ব্লগার হিসেবে। খুব নিয়মিত না লিখলেও ব্লগটির প্রতি ভালোবাসা ছিলো তাঁর, আর তাই বিভিন্ন জনকে এই সাইটে যোগদানে উৎসাহিত করেন, তাঁর কারনে আমরা ব্লগার ফয়সল নোইয়ের মতো একজন মানবতাবাদী ব্লগারকে পাই, যিনি বিভিন্ন সময় আর্তমানবতার সেবায় ব্লগারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, দাঁড়িয়েছেন সামহয়্যারইন ব্লগের পাশে।

মাহবুব মাতিনের ব্লগগুলো খুঁটিয়ে পড়েছি.. নাহ্! কখনও গালাগাল করেননি তিনি ব্লগ বা কর্তৃপক্ষকে, ঘোষনা দিয়ে ব্লগ ছেড়েও যাননি... অথচ তাঁর মৃত্যুতে প্রথম পাতার এককোনে একটি দায়সাড়া শ্রদ্ধাণ্জ্ঞলী ছাড়া আর কিছু নেই, তাঁর মৃত্যু সংবাদ বা তাঁর প্রতি ভালোবাসা জানানো কোন পোস্ট স্টিকি করা নেই। ব্লগের সাথে কোন প্রকার সম্পৃক্ততাহীন কারো কারো মৃত্যু সংবাদ দিনের পর দিন স্টিকি হয়ে থাকতে দেখেছি। ব্লগে মাহবুব মতিনের কোন উগ্রসমর্থক বা ভক্ত নেই তাই হয়তো তাঁর প্রতি এমন অবহেলা! মাহবুব মতিনের ঘনিষ্ঠজন সহকর্মীরা শোকে বিহ্বল, পোস্ট স্টিকি হলো কি হলোনা তা নিয়ে তাঁদের মাথাব্যাথা করার মতো মানসিকতা নেই। একজন ফয়সল নোই, ঘোর, তৌফিক আহমেদদের বুকে চেপে আছে শোকের পাথর, প্রতিদিন ১২-১৪ ঘন্টা যে মানুষটিকে কাছে দেখতেন তিনি হঠাৎ করে চিরতরে হারিয়ে গেছেন... একথা মেনে নেয়া কঠিন। তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই। তাঁরা যেন শীঘ্রি এই শোক কাটিয়ে উঠেন প্রার্থনা রইলো।
একজন সাধারন ব্লগার হিসেবে আরেকজন সহব্লগারের প্রতি এমন অবহেলা আমার খারাপ লেগেছে। তবে সাধারন ব্লগাররা এগিয়ে এসেছেন। সহব্লগারের স্মরণে একত্রিত হচ্ছেন তাঁরা, সাধুবাদ জানাই কৌশিক সহ সকল উদ্যোক্তা ও অংশগ্র্হনকারীদের।

মাহবুব মতিন আজ সব কিছুর উর্দ্ধে চলে গেছেন.. ভালোবাসা অবহেলা কোনকিছুই তাঁকে স্পর্শ করবেনা। তবে তাঁর অস্তিত্ব, তাঁর ভালোবাসা দুষ্টপ্রিয়, মৌনপ্রিয়টা আজ না হলেও কয়েক বছর পর নেটের পাতা উল্টে দেখে যাবে... তার প্রয়াত বাবা'র প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও সন্মানের কথা, দেখবে তার প্রতি কি অগাধ ভালোবাসা রেখে গেছেন তার পিতা...


তরুন বয়সে মৃত্যুর একটি সুন্দর দিক মানুষটির বয়স আর কখনো বাড়েনা, থেমে থাকে তারুণ্যে। কুঁচকে যাওয়া ত্বক, সাদা হয়ে যাওয়া চুলে ঝাপসা দৃষ্টিতে একসময় বৃদ্ধ মৌনপ্রিয় হয়তো তাকিয়ে দেখবে তার স্নেহময়ী চিরতরুন পিতার ছবির দিকে!

মাহবুব মতিনের সৃষ্ট 'র্জানালিস্ট ক্লাব' সাইটে দীর্ঘদিন আগে আরেফিন ফয়সল খুব সঠিক তথ্য দিয়েছেন, কোন কিছুই বেশিদিন ভালো লাগেনা এই সাংবাদিকের, আর তাই পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটাও বেশিদিন ভালো লাগলো না.....






মাহবুব মতিনের আত্মার শান্তি কামনা করছি। মহান আল্লাহ্ তাঁকে বেহেশতবাসী করুন, তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজন, সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠজনদের এই শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি দিন এই প্রার্থনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১:০৭
৩২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×