somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সর্বকালের সুপারফ্লপ ১০ গেম সিস্টেম।।

১৪ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভিডিও গেম শিল্পের বয়স প্রায় চার দশক। এ সময় গেমারদের জন্য বাজারে এসেছে বিভিন্ন ধরনের গেম সিস্টেম। ব্যবহারকারীদের আরো উন্নত ও বাস্তবসম্মত গেমস খেলতে দেয়ার প্রত্যয়ে বাজারে আসা গেম সিস্টেমের অনেকগুলোই গেমারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।
আর এসব গেমস ডিভাইস অনেক সুখ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরির পাশাপাশি বাজারে এসেছিল অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে; কিন্তু বাজারে আসার অল্পকিছু দিনের মধ্যেই সেগুলো হারিয়ে গেছে গেমস ইন্ডাস্ট্রি থেকে। উল্লেখ্য, এক দশক আগেও পার্সোনাল কম্পিউটারের মাধ্যমে ভিডিও গেম খেলার সুযোগ থাকলেও গেমারদের মূলত নির্ভর করতে হতো বিভিন্ন গেমস ডিভাইসের ওপর। বিশেষ করে ১৯৭২ সালে বাজারে আসে ‘দ্য ম্যাগনাভক্স আডসি’।
এটি বাজারে আসার পর ভিডিও গেম সিস্টেমের মাধ্যমে বিনোদনের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়। আর এই সুবাতাসে পরবর্তী সময়ে আবির্ভূত হয় কয়েক ডজন গেম সিস্টেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। সঙ্গে অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠানও তৈরি করেছে এসব গেমস ডিভাইস; কিন্তু চার দশকে ঢাকঢোল পিটিয়ে বাজারে এলেও বাজারে টিকতে পারেনি বছর খানেক। এসব আলোচিত সুপার ফ্লপ ১০ ভিডিও গেম সিস্টেমের কথা তুলে ধরা হলো-

আরসিএ স্টুডিও টু :
পরিবর্তনযোগ্য আরওএম কার্টিজসমৃদ্ধ দ্বিতীয় গেম কনসোল আরসিএ স্টুডিও টু গেম সিস্টেম বাজারে আসে ১৯৭৭ সালে। খেলার জন্য জয়স্টিকের ব্যবস্থা না থাকায় খেলতে হতো নিউমেরিক কীপ্যাডের মাধ্যমে। কনসোলের সঙ্গে বিল্ট-ইন সাউন্ড স্পিকার সংযুক্ত থাকায় খেলার সময় বিরক্তের সৃষ্টি করতো। সেইসঙ্গে নিম্নমানের গ্রাফিক্স সিস্টেমের কারণে এটি বাজারে আসতে না আসতেই বাজার থেকে গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় নির্মাতারা।

টাইগার টেলিসেটিকস গিজমন্ডো :
২০০৫ টাইগার টেলিসেটিকস গিজমন্ডো সিস্টেমটি বাজারে আসার আগে পুরো গেম ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে; কিন্তু ক্ষুদ্রাকৃতির সহজ বহনযোগ্য টাইগার টেলিসেটিকস গিজমন্ডো বাজারে এসে গেমারদের হতাশ করে। বিশেষ করে জিপিএস রিসিভার এবং মাল্টিমিডিয়া প্লেব্যাকসমৃদ্ধ গেম সিস্টেমে একমাত্র দুর্বল দিক ছিল খুবই জঘন্য মানের গ্রাফিক্স ডিসপ্লে। আর এই একটি মাত্র কারণে বাজারে আসার কয়েক মাসের মধ্যে হারিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

ট্যান্ডি বা মেমোরেক্স ভিআইএস :
ভিডিও ইনফরমেশন সিস্টেম (ভিআইএস) সমৃদ্ধ এই ট্যান্ডি বা মেমোরাস ভিআইএস গেম সিস্টেমটি বাজারে আসে ১৯৯২ সালে; কিন্তু এই ডিভাইসের মধ্যকার আন্ডার পাওয়ার সমস্যা, ভার্চুয়ালি সফটওয়্যার সংযুক্ত না থাকায় এবং বড় আকৃতির জন্য বাজারে আসার আগে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুললেও সুপার ফ্লপ করে।

ফিলিপস সিডি-আই :
১৯৯১ সিডি রম ভিত্তিক মাল্টিমিডিয়া গেমিং ডিভাইস হিসেবে ফিলিপস সিডি-আই গেম সিস্টেমটি খুবই কার্যকর ছিল; কিন্তু আকৃতিতে বড় আর দুর্বল ভিডিও মানের কারণে জনপ্রিয়তা অর্জনে ব্যর্থ হয়।

আরডিআই হালসিওন :
১৯৮৫ সালের বিবেচনায় ২৫০০ ইউএস ডলারের বিনিময়ে কোন গেম সিস্টেম অত্যাধিক ব্যয়বহুল এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে গেমটি অত্যাধিক ব্যয়বহল হওয়ার পরে গেমারদের কাছে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়; কিন্তু এতে দুটি ভার্সনের গেম খেলা সম্ভব হতো বলে গেমাররা খুব শিগগিরই তাদের তালিকা থেকে এটি বাদ দেন।

গাকেন টিভি বয় :
১৯৮৩ সাল হোম গ্রোন গেম কনসোলের ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এই গেমারদের টার্গের করেই জাপানে তৈরি করা হয় গাকেন টিভি বয় নামের গেম সিস্টেম। সবকিছু ঠিক থাকলেও শুধু ডিজাইন ত্রুটির কারণে এটি সুপার ফ্লপ করে। এতে টি-শেপ বিশিষ্ট জয়স্টিক মেইনবোর্ডে সংযুক্ত করা হয় কিন্তু পাশের হাতলটি সরানো সম্ভব না হওয়ায় গেমাররা খেলায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো না।

ম্যাটাল হাইপারস্ক্যান :
২০০৬ সালে পুরো গেম ইন্ডাস্ট্রির আগ্রহ আর অপেক্ষার বিষয় ছিল আরএফআইডি প্রযুক্তিসম্পন্ন এই ভিডিও গেম সিস্টেমটি। হাইপারস্ক্যান গেম কার্ড ব্যবহারের সুযোগ এবং হাইপারস্ক্যান গেমগুলো সিডি ব্যবহারের সুযোগ থাকায় এই আগ্রহের সৃষ্টি হয়; কিন্তু দীর্ঘ লোডিং সময় নেয়ায় এই ম্যাটাল হাইপারস্ক্যান গেম সিস্টেমটি জনপ্রিয়তা অর্জনে ব্যর্থ হয়।

নোকিয়া এন-গেজ :
২০০৩ সালে নোকিয়ার মাল্টি ইউজ হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস হিসেবে গেম ইন্ডাস্ট্রিতে আসে নতুন এই গেম সিস্টেম। এন-গেজ ডিভাইসটি সেলফোন এবং হ্যান্ডহেল্ড ভিডিও গেম কনসোলের সমন্বিত রূপ হিসেবে তৈরি হলেও এর কার্যক্রম মানসম্পন্ন না হওয়ায় গেমারদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। গেমকার্ড পরিবর্তনে রেয়ার ডোর এবং ব্যাটারি খোলার ঝামেলা ডিজাইন দুর্বলতা যেমন- মাইক্রোফোন এবং স্পিকার বাইরের দিকে থাকায় মোবাইলে কথা বলার সময় নয়েজ হওয়ায় ব্যবহারকারীদের আগ্রহ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়।

টাইগার গেম ডট কম :
নব্বই দশকের শেষভাগে ইলেক্ট্রনিক গেম সিস্টেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাইগার বাজারে আনে টাইগার গেম ডট কম নামের একটি গেম ডিভাইস। ব্যাপক হৈইচৈই ফেলে ১৯৯৭ সালে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি এবং টাচস্ক্রিনসমৃদ্ধ গেমস ডিভাইসটি প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাপক আলোড়ন তুললেও অসম্পূর্ণ গেম লাইব্রেরি, মানহীন অ্যানিমেশন, নিম্নমানের রেজ্যুলেশনসমৃদ্ধ টাচস্ক্রিন সুবিধায় গেমস ডিভাইসটি বেশিদিন বাজারে থাকতে পারেনি। উল্লেখ্য, সহজে বহনযোগ্য হলেও সিরিয়াল ক্যাবল সংযোজন করার ঝামেলাসহ উচ্চাবিলাসী নানা বৈশিষ্ট্যের কারণে গেমারদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জনে ব্যর্থ হয়।

অ্যাপল পিপপিন :
ব্যাপক আলোচনার মধ্য দিয়ে বাজারে আসে অ্যাপলের ডিজাইনে তৈরি পিপপিন নামের এই গেম সিস্টেমটি। বাজারজাত করা হয় ব্যান্ডি এবং কার্টজ মিডিয়ার ব্যানারে। ফলে ১৯৯৬ সালে মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ গেম সিস্টেম হিসেবে তৈরি ‘পিপপিন’ বাজারে আসার পর থেকেই নিজের পরিচিতি সংকটে ভুগতে থাকে। দুই প্রতিষ্ঠান নিজেদের পরিচয়ে পরিচিত করতে গিয়ে এই সমস্যা হয়। এ ছাড়া নেটওয়ার্কে খেলা এবং মাল্টিমিডিয়া প্লেয়ারের সঙ্গে সঠিক সমন্বয় সাধন করতে হওয়ায় ব্যর্থ হয় গেমারদের আস্থা ভাজনে। অথচ ৬৬ মেগাহার্জ প্রসেসর এবং ১৪.৪ কেবিপিএসসমৃদ্ধ হওয়ার পরও অতিরিক্ত এর মূল্য ৬০০ ইউএস ডলার।


প্রতিবেদনটি এখানে প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:২৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×