somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত নেতা

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাসূল (সা.)-এর খলিফা বা প্রতিনিধির দু’ধরনের দায়িত্ব বা কর্তব্য রয়েছে; যথা-
(ক) বাহ্যিক শাসন ও (খ) আধ্যাত্মিক শাসন।
ক. বাহ্যিক শাসন
অর্থাৎ শাসন পরিচালনা, আইনের বাস্তবায়ন, অধিকার সংরক্ষণ, ইসলামী রাষ্ট্রের সংরক্ষণ ইত্যাদি।
এক্ষেত্রে খলিফা বা প্রতিনিধি অন্যান্য শাসকদের মতই শুধু এতটুকু পার্থক্য যে, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা ইসলামী শাসন ব্যবস্থার একটি বৈশিষ্ট্য ও আবশ্যক কাজ।
খ. আধ্যাত্মিক শাসন
আধ্যাত্মিক শাসন এই অর্থে যে, খলিফা বা প্রতিনিধির কর্তব্য হচ্ছে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয়গুলি (যা কোন কারণে বলা হয়নি) মুসলমানদের নিকট তুলে ধরা।
খলিফা বা প্রতিনিধি একজন শাসকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অবশ্যই ইসলামী বিধি-বিধান ও কোরআনের তাফসীর বা ব্যাখ্যাও জনগণের সামনে বর্ণনা করবে যাতে ইসলামের চিন্তাধারাকে যে কোন ধরনের বিচ্যুতি থেকে রক্ষা এবং বিভিন্ন ধরনের সন্দেহ-সংশয় হতে মুক্ত রাখতে পারে। সুতরাং খলিফাকে অবশ্যই রাষ্ট্রের অধিবাসীদের মধ্যে ইসলামের ভিত্তি, মানদণ্ড ও শরীয়তের বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জ্ঞানী ও বিজ্ঞ হতে হবে। অর্থাৎ সবার চেয়ে বেশি মহানবীর প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের ঝর্ণা ধারা হতে পানি পান ও মহান রাসূল (সা.)-এর বিদ্যমান থাকাকালীন সময়ে যথেষ্ট পরিমাণ তাঁর থেকে জ্ঞান ও নৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সৌভাগ্যের অধিকারী হতে হবে। সুতরাং ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য এরূপ ব্যক্তিত্ব বিদ্যমান থাকা অপরিহার্য যিনি রাসূল (সা.)-এর পবিত্র অস্তিত্ব থেকে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত ও নৈতিক শিক্ষা লাভ করেছেন। সেই সাথে ইসলামের অগ্রবর্তী অবদানের অধিকারী তেমন ব্যক্তির মধ্যে সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে, নিজের স্বার্থের উপর মুসলমানদের ও ইসলামের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দ্বীনকে রক্ষার জন্য আত্মোৎসর্গ করার দৃষ্টান্ত থাকতে হবে।
খলিফার শাসনকার্যের ক্ষেত্রে মুসলমানের সমস্ত সম্পদের উপর তার শাসন কর্তৃত্বের অধিকার থাকবে বিশেষ করে খুম্‌স, যাকাত, ট্যাক্স বা রাজস্ব, যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বা গণিমত, খনিজ ও অন্যান্য সাধারণ সম্পদ ইত্যাদি যা খলিফার অধীনে থাকবে এবং খলিফার দায়িত্ব হচ্ছে এগুলোকে কোন প্রকার অনিয়ম ও অনাচার ছাড়াই জনগণের মাঝে বিতরণ করা; অথবা ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণকর কোন কাজে লাগানো। সুতরাং তাকে অবশ্যই দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত হতে হবে যাতে সংবেদনশীল বিশেষ মুহূর্তেও ভুল না করে। ঠিক এই দলিলের ভিত্তিতেই খেলাফত হচ্ছে আল্লাহর পক্ষে থেকে নির্ধারিত যা তাঁর পক্ষ হতে উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিকেই প্রদান করা হয়। তাই ঐ পবিত্র পদ মানুষের নির্বাচনের নাগালের বাইরে।
অন্যভাবে বলা যায়, খেলাফত আল্লাহর মনোনীত একটি পদ যাতে মানুষের ভোটের কোন প্রভাব নেই। এ চিন্তার ভিত্তিতে আমরা রাসূল (সা.)-এর স্থলাভিষিক্ত নির্ধারণের ক্ষেত্রে অবশ্যই বর্ণিত দলিল ও ঐশী নির্দেশের উপর নির্ভর করবো এবং রাসূল (সা.)-এর বাণীসমূহ যা এই সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে সেগুলো নিরপেক্ষভাবে পর্যালোচনা করে তার ফলাফলের উপর সিদ্ধান্ত নিব।
ইতিপূর্বেই জেনেছি যে, গাদীরের ঘটনা একটি প্রামাণিক ঘটনা যা ইসলামের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং বেলায়াতের (কর্তৃত্বের) হাদীসও একটি তর্কাতীত বাণী যা রাসূল (সা.) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে। আর অর্থ ও ভাবধারার ক্ষেত্রেও কোন প্রকার অস্পষ্টতার চিহ্ন তাতে নেই; যারাই একটু আরবি ব্যকরণ সম্পর্কে জ্ঞাত ও বুদ্ধিবৃত্তিক এবং প্রচলিত সর্বগ্রাহ্য মাপকাঠি সম্পর্কে পরিচিত তারা যদি ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টিতে পক্ষপাতহীনভাবে এই হাদীসটির প্রতি দৃষ্টিপাত করে তাহলে অবশ্যই স্বীকার করবে যে এই হাদীসটি আলী ইবনে আবী তালিবের (আ.) ইমামত, নেতৃত্ব ও প্রাধান্যতার কথাই প্রমাণ করে।
এমন কি এই হাদীসটিকে যদি না দেখার ভান করি তারপরেও আলীর (আ.) ইমামত ও নেতৃত্ব সম্পর্কে শিয়া এবং সুন্নীদের গ্রন্থসমূহে যথেষ্ট পরিমাণ হাদীস বর্ণিত হয়েছে যা আমাদের নিকট বিদ্যমান।
রাসূল (সা.) হতে এই সম্পর্কে যে সমস্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার কিছু নমুনা এখানে দু’টি ভিন্ন অধ্যায়ে তুলে ধরবোঃ
যে সব হাদীস গাদীরের হাদীসের মত সরাসরি আমিরুল মু’মিনীন আলীর (আ.) খেলাফতের দিকে ইঙ্গিত করে, সে সকল হাদীস প্রথম অধ্যায়ে আলোচনা করবো।
আর দ্বিতীয় অধ্যায়ে ঐ সমস্ত হাদীস তুলে ধরা হবে যেগুলোতে আমিরুল মু’মিনীন আলীর (আ.) ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং যা গাদীরের হাদীসের সঠিকতার প্রমাণ বহন করে ও খেলাফতের ক্ষেত্রে তাঁর অগ্রাধিকারকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত করে।
অতঃপর বিদ্যমান হাদীসসমূহ এবং বর্ণনাগত দলিল (শাব্দিকভাবে তাঁর শ্রেষ্ঠতার ইঙ্গিত বহনকারী প্রমাণ) ব্যতীত হযরত আলী (আ.)-এর ব্যক্তিত্ব থেকে যে সকল সত্তাগত যোগ্যতা ও মর্যাদার পরিচয় পাওয়া যায় তার পর্যালোচনা করবো।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×