আমি ব্লগার থাবা-বাবা কিংবা প্রকৌশলী আহমেদ রাজীব হায়দারের ব্লগ আমি কখনোই পড়িনি - পরিচিত ব্লগারদের মাধ্যমে জানতে পারলাম তার সম্পর্কে। যাই হোক একজন মানুষ যিনি কখনো সহিংস আন্দোলনে ছিলেন না, যিনি কোনদিন গাড়ি ভাংচুর করেন নি, যিনি কোন পথচারীকে আঘাত করেন নি - তিনি খুন হলেন - নৃশংস ভাবে খুন হলেন - তাঁকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হলো
জামায়াত-শিবিরের হায়নারা ১৯৭১ এর পলিসি নিয়েছে - জাতিকে মেধাশূন্য করার পলিসি - যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদেরকে মেরে ফেলার পলিসি - একবার ভাবুন ১৯৭১ এর পরে আবার ১৯৭১ এর পুনারাবৃত্তি হচ্ছে - ১৯৭১ এর বিরোধী শক্তি আবারো দেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে - কারন কী? আল্লাহ কী তাদের এসব ক্ষমা করে দেবেন?
আমি 'জিহাদ' বুঝিনা, তবে শাহবাগে যা হচ্ছে তা কী জিহাদ নয়?
মানুষ মেরেই কী জিহাদ করতে হয়? ইসলাম কী সেটা করতেই নির্দেশ দেয়?
শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে যেখানে একজন মুসলমান (তিনি মুসলমান পরিবারেও জন্মেছিলেন এবং তাঁর বাবা-মা নাস্তিক ছিলেন না) আল্লাহর সিপাহীদের হাতে খুন হন (কারন শিবির-জামাতের মতে এটাই জিহাদ এবং আল্লাহ দ্বারা স্বীকৃত) সে দেশে আমার মতো কাফের এবং আপনাদের মতো দুর্বল ঈমানের অনেকেই যেকোন সময় খুন হতে পারেন।
যাই হোক, ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য - গণতন্ত্র মানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা - মত প্রকাশ করতে গিয়ে আজ একজনের গলা কেটে হত্যা করা হলো - কাল আরেকজনকে করা হবে (অবশ্যই হবে, অন্ততঃ জামাতি ফেইসবুক পেইজগুলা সেই ইঙ্গিত দেয়) সুতরাং এদেশে জ়ামাতী শাসনতন্ত্র চালু করা হোক - সবার আগে কাফেরদের মৃত্যুদন্ড দেয়া হোক, তারপর জামায়াত বিরোধীদের, তারপর জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের!
অভিনন্দন জামায়াত-শিবির - জাতির পতাকা তোমরা আবারো খামচে ধরেছো
নিহত ব্লগার এর জন্য আর কিছুই করার নাই - একটা পরিচিত কবিতা তার জন্য কপি-পেস্ট করলাম
"আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যূর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দু:স্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময় ?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
এই রক্তমাখা মটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধেছিলো।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আধাঁর,
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আরষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা – একি হবে নষ্ট জন্ম ?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল ?
জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন।
বাতাশে লাশের গন্ধ
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দুলে মাংসের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ -
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়
এ চোখে ঘুম আসেনা। সারারাত আমার ঘুম আসেনা-
তন্দ্রার ভেতরে আমি শুনি ধর্ষিতার করুণ চিৎকার,
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ
মুন্ডহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বিভৎস্য শরীর
ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে। আমি ঘুমুতে পারিনা, আমি
ঘুমুতে পারিনা…
রক্তের কাফনে মোড়া – কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে
সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা।
স্বাধীনতা, সে আমার – স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন -
স্বাধীনতা – আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা।"