somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের আরো একটি মৃত্যুফাঁদ

১২ ই অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের আরো একটি মৃত্যুফাঁদ

আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে চীনের ইয়ারলাং সাংপো নদীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর অপমৃত্যু ঘটবে এবং বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হবে। অর্থাৎ চীনের এ প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য আরেক মৃত্যুফাঁদ রূপে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ আশঙ্কার কথা স্বীকার করলেও অজ্ঞাত কারণে এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
চীন সরকার ৪০ হাজার মেগাওয়াটের (বিশ্বের বৃহত্তম) এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য একতরফাভাবে কাজ শুরু করেছে। এজন্য ইয়ারলাং সাংপো নদীতে ব্রহ্মপুত্র নদের উৎসমুখে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হলে ২ হাজার ৯০০ কিলোমিটার জলধারার অপমৃত্যু ঘটবে। ফলে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী মারা যাবে। নদী অববাহিকার জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি বাংলাদেশের বৃহত্তর অংশ মরুভূমিতে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
নওগাঁ-৬ আসন থেকে নির্বাচিত সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মো. ইস্রাফিল আলম সংসদের চলতি অধিবেশনে ৭১ বিধিতে এক মনোযোগ আকর্ষণী নোটিশের মাধ্যমে এ ব্যাপারে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ প্রকল্পের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হলে ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদী শুকিয়ে যাবে। ফলে বরিশাল, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, নোয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ এলাকার পানি অতিমাত্রায় লবণাক্ত হয়ে পড়বে; যা সুন্দরবনসহ এ এলাকার জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংসের মুখে ফেলবে। পররাষ্ট্র, পরিবেশ ও পানিসম্পদমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ নোটিশ দেয়া হয়।
জাতীয় সংসদে উত্থাপনের পর সরকার এ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, চীনের এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়বে। এছাড়া দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর প্রবাহ নষ্ট হবে এবং নদীবিধৌত অঞ্চলগুলো ক্রমে মরুভূমিতে পরিণত হবে। এ প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ করে কৃষির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। একইসঙ্গে মৎস্য খাত, পরিবেশের ভারসাম্য এবং নৌযোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অথচ চীন এ প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুযায়ী একতরফা বাঁধ নির্মাণের কোনো অধিকার চীনের নেই।
এদিকে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জাতীয় সংসদে এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের উৎসস্থলে গণচীনের গৃহীত প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। দেশের চলমান অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটাই ভেঙে পড়বে। বিশেষ করে কৃষি খাতে বিপর্যয় নেমে আসবে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। নৌযোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর প্রবাহ নষ্ট এবং একসময় এসব নদীবিধৌত অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে।
সূত্রমতে, যে নদীতে বাঁধ দেয়া হচ্ছে সেটি হিমালয় পর্বতের তিব্বতের অংশ কৈলাসটিলা পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে ইয়ারলাং সাংপো নামে জিমা-ইয়াং জং হিমশৈল রূপে উত্তর হিমালয় থেকে পূর্বদিকে প্রায় ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। পরে তা বিশ্বের সর্বোচ্চ নদী নামচা বারওয়া পর্বতের কাছে বাঁক নিয়ে গতিপথ পরিবর্তন করে দক্ষিণ দিকে ইয়ারলাং সাংপো গিরিখাদ হয়ে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে প্রবেশ করে দুটি প্রধান নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এরপর ডাব্রুগড় ও লক্ষ্মীপুরের মাঝামাঝি এসে নদীটি দুটি চ্যানেলে বিভক্ত হয়ে একটি উত্তরাঞ্চলের খেরকুটিয়া চ্যানেল এবং অন্যটি দক্ষিণাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র নদ নাম ধারণ করেছে। এ নদীটি ভারতের ধুবরী নামক স্থান থেকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে। প্রায় ২০০ বছর আগে ভূমিকম্পের ফলে ব্রহ্মপুত্র নদ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে একটি যমুনা নাম ধারণ করে গোয়ালন্দের কাছে পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে যমুনা নদীতে নাব্যতা সঙ্কট রয়েছে। অন্য শাখাটি বাহাদুরাবাদের উজানে হরিণধরা নামক স্থানে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নামে জামালপুর, ময়মনসিংহ এবং কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরববাজার নামক স্থানে মেঘনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। বর্তমানে নাব্যতা সঙ্কটের কারণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে

সুত্র: যায়যায়দিন
Click This Link
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×