somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপারনোভা: প্রকৃতির এক অজানা রহস্য!!

১২ ই অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সুপারণোভা একধরনের নাক্ষত্রিক বিস্ফোরন যা প্রচন্ড উজ্জ্বল এবং এত বেশি আলো উদগিরিত করে যে তা একটি সম্পূর্ণ গ্যালাক্সির উজ্জ্বলতাকে প্রায়ই ছাড়িয়ে যায়। এ অবস্থা কয়েক সপ্তাহ বা মাস ব্যাপী চলে। এত অল্প সময়ে একটি সুপারনোভা এত বেশি শক্তি নির্গত করতে পারে যে তা আমাদের সূর্য হয়ত তারা সারাজীবনেও নির্গত করতে পারবেনা।

সুপারনোভা বিস্ফোরনের সময় এর অ্ভ্যন্তরস্ত তারার সমস্ত পদার্থকে সেকেন্ড প্রায় ৩০০০০ কি.মি বেগে বাহিরের দিকে ছুড়ে মারে। আসে পাশে অবস্থিত সকল আন্ত-নাক্ষত্রিক মাধ্যমগুলোতে প্রচন্ড শক ওয়েব বয়ে নিয়ে যায়। এ শক ওয়েব কয়েক আলোক বর্ষ দূর পর্যন্ত সুপারনোভা বিস্ফোরনের ধূলাবালি ও ধোয়া বয়ে নেয়।



সুপারনোভার বিস্ফোরন সাধারণত দুইভাবে ঘটে। নক্ষত্রগুলো সাধারণত নিজেদের অভ্যন্তরে চলমান প্রচন্ড নিউক্লিয়ার ফিউশানের ফলে উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত হতে চেষ্টা করে অপর দিকে নক্ষত্রগুলোর নিজস্ব মহাকর্ষ বল এদের বহির্ভাগকে টেনে কেন্দ্রের দিকে নেয়াৱ চেষ্টা করে। এ দুটি বলের ভারসাম্যের কারনেই প্রকৃত পক্ষে কোন নক্ষত্র টিকে থাকে। কিন্তু যখন নক্ষত্রের অভ্যন্তরের নিউক্লিয়ার ফিউশান চলার মত আর কোন জ্বালানি থাকে না তখন এটি প্রচন্ড বেগে নিজের মহাকর্ষের টানে চুপষে যেতে থাকে ফলে প্রচন্ড বিস্ফোরেনের মাধ্যমে এর বাহিরের পদার্থগুলোকে বের করে দেয়। এ বিস্ফোরনই সুপারনোভা।
আমাদের মিল্কি-ওয়ের মত সাইজের গ্যালাক্সিতে প্রতি ৫০ বছরে একটি করে সুপারনোভা সংঘটিত হতে পারে।



১৮৫ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম একজন চাইনিজ জোতর্বিজ্ঞানী সুপারনোভা পর্যবেক্ষন করেন। আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল সুপারনোভা ছিল SN1006। সবচেয়ে বেশি পর্যবক্ষনকৃত সুপারনোভার নাম SN1054(উপরের চিত্রে)। আমাদের গ্যালাক্সিতে সবশেষ সংঘটিত দুটি সুপারনোভা SN 1572 ও SN 1604 খালি চোখেই দেখা গিয়েছিল।যা ইউরোপের জোতির্বিজ্ঞানে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল কারন তারা এরিস্টটলের মত মনে করত চাঁদ এবং গ্রহগুলোর বাহিরের অপরিবর্তনশীল।



প্রতিটি সুপারনোভার নামের প্রথমে SN এবং পরবর্তিতে বছরের নাম এবং তার সাথে বিভিন্ন ইংরেজি বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়। বছরের প্রথম ২৬টি আবিষ্কৃত সুপারনোভার নামের সাথের A থেকে Z পর্যন্ত বড় হাতের অক্ষর বসানো হয়। পরবর্তিতে আবিষ্কৃত সুপারনোভাগুলোর নামের সাথে ছোট হাতের অক্ষর জোড়ায় জোড়ায় অর্থাৎ aa,ab,ac এভাবে ব্যবহৃত হয়। এখন প্রায় প্রতিবছরই প্রচুর সুপারনোভা আবিষ্কৃত হয়। ২০০৫ সালে ৩৬৭টি, ২০০৬সালে ৫৫১টি, ২০০৭ সালে ৫৭২টি সুপারনোভা আবিষ্কৃত হয়েছিল।

সুপারনোভাকে এদের বর্ণালীতে আলোর শোষনের উপর ভিত্তি করে দুইভাবে ভাগ করা হয়। যদি কোন সুপানোভার বর্ণালীতে আলোর শোষণ হাইড্রোজেনের কারনে হয় তাহলে এটি Type II সুপারণোভা অণ্যক্ষ্রত্রে সুপারনোভাগুলো Type I ধরনের।Type I এবং Type II এর মাঝেও আরো প্রকারভেদ রয়েছে। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হচ্ছে এ টিউনটি সাধারণ পাঠকদের বোঝার জন্য একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে তাই আমি আর প্রকারভেদগুলো সম্পর্কে লিখলাম না।



সুপারনোভা এত প্রচন্ড শক্তিশালী যে, পৃথিবীর কাছাকাছা এ ধরনের বিস্ফোরন হলে পৃথিবীর কি হত বলতে পারেন কি ? এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে ৪৪৩.৭ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটে প্রায় ১০০ আলোক বর্ষের কিছু কম দূরত্বে একটি সুপারনোভার বিস্ফোরন হয়েছিল।যার ফলে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে প্রচন্ড গামা রশ্নির কারনে নাইট্রোজেন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নাইট্রোজেন অক্সাইডে রুপান্তরিত হয়ে যায় এবং ওজন স্তর ক্ষয়ে গিয়ে পৃথিবী সূর্যের অতিবেগুনী রশ্নি এবং অণ্যন্য মহাজাগতিক রশ্নির জন্য উন্মোক্ত হয়ে পড়ে। যা পৃথিবীতে বয়ে এনছিল অর্ডোভিসিয়ান অভিশাপ। যার কারনে পৃতিবীর সমুদ্র থেকে প্রায় ১০০ সামুদ্রিক পরিবার(শ্রেণীবিন্যাসের ধাপ)বিলুপ্তিসহ প্রায় ৬০% সাম্রদ্রিক প্রানীর মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়ায়। যা পৃথিবীর ইতিহাসে কর্ডোভিসিয়ান বিলুপ্তি নামে খ্যাত।
আল্লাহর সৃষ্টির কাছে আমরা কত তুচ্ছ কত অসহায়। আসুন সবাই একবার আল্লাহকে স্মরণ করি।

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। কারো ভালোলেগে থাকলে দয়া করে মন্তব্য করুন। আপনাদের মন্তব্য আমাকে আরো লিখতে উৎসাহিত করবে।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া।

Writer/Tuner : TareqMahbub
Source : Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×