somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃত্ত

০৩ রা অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনের ভেতর বার বার কড়া নেড়ে যায় শব্দটা; "বৃত্ত"; ঠিক যেন বৃত্তেরই মতকরে; নিরন্তিম। বোধগম্য কোন অর্থ তৈরীর ক্রমাগত ব্যর্থ প্রচেষ্টায় হাতড়ে চলি অচেনা মনের কোণথেকে কোণে। আবারও বৃত্ত!

কোনএক অসম্ভব কল্পনাকে সাথেকরে আমরা থেমে থেমে হেঁটে চলি বাস্তব সময়ের দিকে অথবা সময়ই এগিয়ে আসে আমাদের দিকে, আমাদের কল্পনা বিলাসকে ভেংচি কেটে। আসলে সবই আপেক্ষিক, সবই একই বৃত্তের শুরুর আর শেষের প্রান্তের গল্প। পরিশ্রান্ত মন যখন শেষ খুঁজে পায়, আমরা দেখি, এগোনো হয়নি এক পাও। এই কষ্টের অনুভূতিটা সবারই একই রকম। কষ্ট কারও বাড়ি আলাদা করে চেনে না।

আমাদের সময়টাকে আমরা দ্রুত পেরিয়ে যেতে চাই, একেবারে আলোর চেয়েও দ্রুত! কিন্তু সময়ের আঠা আমাদের গা ছাড়ে না। আমরা অনন্ত দৌড়াতে চাই, কিন্তু পারি না। আমাদের শ্রম আর উত্তেজনা ঘাম হয়ে ঝরেপড়ে আমাদের লোমকূপ থেকে। মাথাথেকে শুরু করে ঘার-কাঁধ-পিঠ বেয়ে নেমে চলে। কিন্তু আমাদের মাথার ঘাম পায়ে পড়ে না। পাছার প্যান্টটা কোন মতে জায়গামত থাকে বলে আমরা বেঁচে যাই! হা!...হা!...

আমাদের দিন রাত্রির পার্থক্য শুধু সূর্য ওঠা আর ডোবার অপেক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমাদের সবারই অনেক অনেক মিল! পথ চলতে চলতে তাই হঠাৎই মনে হতে পারে, "আমরা সবাই একই রকম"। কিন্তু তখনই হয়তো কারও বেমক্কা ধাক্কায় আমাদের কর্মের ধ্যান ভেঙে যায়। না! আমাদের কোন দোষই নেই! সবদোষ অন্যের! আমরা কোন খারাপ কাজ করতেই পারিনা! সব খারাপ কাজতো অন্যেরা করে! সুতরাং আমরা একে অন্যের উপর টেক্কাদিয়ে নায়ক হতে চাই। আরে হ্যাঁরে ভাই! আমরা সবাই নায়ক! সুতরাং নিষ্পাপ! আর যতদোষ নন্দ ঘোষ! তাই টেক্কাদেয়ার লড়াইয়ে আমাদের পাকা খেলোয়াড়ের মত খেলতে হয়! পাছে নায়কের মুখোশটা খুলে পড়ে! কিন্তু আমাদের ভদ্রতার মুখোশটা খুলে পড়তে থাকে! আমাদের দৈনন্দীন ব্যর্থতার প্রভাবে আমাদের ভাষার ব্যবহারে তারতম্য ঘটে:

- কি?
- সমস্যাডা কি?
- তর সমস্যাডা কি?
- দেইখ্যা চলবার পারস না?
- তুই দেইখ্যা চলবার পারস না?
.......................
...............................

আমরা আসলে কেউই কারো সাথে এঁটে উঠি না। তাই গলাবাজি চালাতে থাকি কোন মতে জেতার জন্য। জয় আমাদের খুবই জরুরী। আমরা সবাই নায়ক! আমরা সবাই নায়ক?

বিজয়ীর খঞ্জরের পর, বোধহয় পরাজিতের গলাই এই পৃথিবীতে সবচে শক্তিশালী! সুতরাং একে অন্যের কাছে পরাজিত হয়ে চলতে থাকে আমাদের গলাবাজি! আমরা একে অন্যের কাছে হেরে যাই ঠিক উল্টোটার অনুভূতি নিয়ে! কারণ আমরা হারতে শিখিনি। হারলে আমাদের জাত যায়! আমাদের কল্পনার নায়কেরা মরে না, বার বার জেগে ওঠে। এবং আবারও বৃত্ত!

আমরা সবাই কোন না কোন একটা কিছুর আশায় ঘরথেকে বেরোই। সেই কোন একটা কিছু আমাদের কখনোই পাওয়া হয়ে ওঠে না। আমাদের কল্পনারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আমাদের মনের নায়ক তখন শুতে-ঘুমাতে এবং আরও অনেক কিছু করতে চায়। কিন্তু আমাদের স্বপ্নের নায়িকারা দেখা দেয় না! সুতরাং আমরা আবারো এঁটে উঠিনা! আমাদের ঘুম ভাল হোক আর নাই হোক, আমরা আবারও কোন একটা কিছুর আশায় ঘরথেকে বেরোই। সুতরাং আরেকটা বৃত্ত তৈরী হতে থাকে!

শালার মধ্যবিত্ত!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৫
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×