somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্যরকম তিন মা ... ... ... ...

০১ লা অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাধারণত কম-বেশী সবাইকেই দেখি যে বাবার মা-কে দাদী,দাদীমা,ঠাকুরমা বলে ডাকতে । কিন্তু আমরা ৩ ভাই-বোন সেই ছোটবেলা থেকেই ঠাকুরমাকে মা (মায়ের আগে নির্দিষ্ট বিশেষণ লাগিয়ে)বলে এসেছি। আর আমরা বাড়ীর সবার বড় বলেই আমাদের পরের সব কাজিনরা ও একই ভাবে ফলো করে ডেকেছে। ছোটবেলাতে এমনো হয়েছে অনেকে আমাদের বাড়ীতে আসার পর যদি দেখত নিজের মাকে ও মা আবার ঠাকুরমা কে ও মা ডাকি তারা বলতো এটা আবার কেমন? তারপর ও কেউ আমাদের ডাক বদলাতে পারেনি। আমাদের বাড়ীতে দাদুরা ৩ ভাই থাকতো,সেই হিসেবে ঠাকুরমাও ৩জন ছিলো। কিন্তু ৩ জনকে যদি শুধুই মা বলে ডাকি তাহলে তো বুঝতে সমস্যা হয় কখন ,কাকে ডাকছি। সেইজন্য আমাদের আপন ঠাকুরমাকে ডাকতাম ঢাকার-মা,কারণ উনি ঢাকাতেই ছেলেদের বাসায় বেশী থাকতেন। মেঝ ঠাকুরমাকে ডাকতাম সিলেটের-মা,উনি বাড়ীতে থাকলেও উনার স্বামী(মেঝ দাদু) চাকরী করতেন সিলেটে। আর সবার ছোট ঠাকুরমাকে ডাকতাম কয়েকটা নামে...ছোট-মা,সিসি-মা,সুন্দরী -মা(উনি সবসময়ই দেখতে অনেক সুন্দরী ছিলেন)

ঢাকার-মার কথা তেমন মনে নেই কারণ আমি স্কুলে থাকতেই তিনি মারা গিয়েছেন। স্মৃতি ঘেটে যেটুকু মনে পড়ে উনার মাথায় অনেক বড়,বড় চুল ছিলো আর গায়ের রং তেমন উজ্জ্বল না হলে ও উনার চেহারার মধ্যে অন্যরকম একটা লাবণ্যতা ছিলো। আর হ্যা ঢাকার-মা বাড়ীর সবার বড় বউ হলেও কখনো বড় ভাব দেখাতো না,কেউ কিছু বললে দু'টা কথা শুনানোর বদলে নিজেই কান্নাকাটি করতো। সিলেটের-মা আমার জীবনে দেখা অন্যতম সেরা আলাভোলা ধরণের মানুষ,যে-যা বলবে সরল মনে তা-ই বিশ্বাস করবে....কখনো যাচাই ও করবেনা কেউ তার সাথে মিথ্যা বলছে কিনা। আমরা নাতী-নাতনীরা অনেক মজা করতাম আগে উনার এই স্বভাবটা নিয়ে।এইবারের ঈদে বাড়ী গিয়ে দেখলাম সিলেটের-মার শরীরটা তেমন ভালো না আর কানে একদমই শুনে না। যে মানুষটার মুখে সবসময় কথার ফুলঝুড়ি ছুটতো সে কিনা একদমই শান্ত হয়ে গেছে। সিসি-মা বাড়ীর সব নাতী-নাতনীদের সবচেয়ে বেশী আদর করে আর সবাইকে নানা নামে ডাকে। আমি বাংলা শ্রাবণ মাসে হয়েছি বলে উনি আমার জন্মের পর থেকে শ্রাবণ নামে ডাকে। বাড়ীর আর সবাই শ্রাবণী ডাকলেও উনি শ্রাবণ-ই ডাকে। অনেকদিন পর দেখা হওয়াতে সিসি-মা কিযে খুশী বলে বুঝানো যাবেনা....কখনো অভিযোগ করছে কেন বাসাই যাইনা,ফোন করিনা...আবার কখনো চুল ধরে দেখছে,হাত ছুঁয়ে দেখছে,শাড়ী ধরে দেখছে...আবার কখনো ছোটবেলার কথা মনে করে কান্না করছে।সিসি-মার সাথে কথা বলার সময় হাত ধরে বসে ভেবেছি উনার স্পর্শে যেমন নিজে বুঝেছি উনি কতটা ভালোবাসেন সেভাবে যদি উনিও বুঝতে পারতেন আমাকে........সারাটাদিন অমিশুক,অসামাজিক আমি শুধু হাসছি আর দেখছি কত ভালোবাসেন উনি...........!!!

যোগাযোগ কম হলেও উনাদের ভালোবাসা এখনো আগের মতই অটুট আছে.....হয়তো বুঝাতে পারিনা মুখে বলে কিন্তু জানি আমার এই তিন মাকে অনেক ভালোবাসি.......২জনের অনেক বয়স হয়ে গেছে.......কামনা করি উনারা যেন যতদিন বেঁচে থাকেন ভালো আর সুস্হভাবে থাকেন......!!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ১:০৪
৫৮টি মন্তব্য ৫৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×