কালের ভাবনা
আমি অতীতের ভোঁতা বল্লম হাতে যুদ্ধক্লান্ত এক বৃদ্ধ সৈনিক।
বর্তমান প্রযুক্তির আধুনিক শিরোস্ত্রাণ আর লেজার গান আমার
হাতে বড্ড বেমানান। অথচ ভবিষ্যতের এক লাগামহীন রোবট
ঘোড়া সদর্পে এসে জুড়ে বসতে চায় আমার অচল ও জরাজীর্ণ
এক্কাগাড়ীতে। সহিস রহমত শেখ কবেই মারা গেছে পাঁচ ভাই
ঘাট লেনের আস্তর খসে পরা এক মাটির ঘরে। এক্কাগাড়ীটা শুধু
কালের স্মৃতি বহন করে পড়ে আছে কলতা বাজারের পুরোনো
এক বাড়ীর গ্যারেজে। আমার হাতের বল্লমে এখন আর আগের
সেই ধার নেই, জৌলুষবিহীন অবস্থায় তামা-পিতলের ঢাল-বর্ম।
আমার আত্মরক্ষার তেমন কোন যুৎসই ব্যবস্থা নেই- তার কোন
প্রয়োজনও নেই। অথচ রোবট ঘোড়াটা আমার দিকে ছুটে আসছে
তীব্র গতিতে। নড়বড়ে চাকার পুরোনো এক্কাগাড়ীটা রোবটের সাথে
তাল মিলিয়ে চলতে পারবেনা জানি। তবু অনিচ্ছাসত্ত্বেও বর্তমানকে
জুড়ে দিতে হবে টগবগে এক ভবিষ্যতের সমুখে। অতীত পড়ে থাক
পেছনে। কালের সাক্ষী হয়ে ভোঁতা বল্লমটা রয়ে যাবে কোন যাদুঘরে।