somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসে ঈদ... প্রবাসের ঈদ...

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সক্কাল বেলাতেই মেজাজটা চরম খারাপ হয়ে গেলো... ইচ্ছা করছে ওরে ধরে একটা আছাড় দেই। ঈদের দিন সক্কাল বেলাতেই এইরকম অত্যাচার সহ্য করা যায়? রাগে গা জ্বলছে...। এই মোবাইলের এর্লামটা এতো কর্কশ...। উফ অসহ্য। গজরাতে গজরাতে উঠলাম ঘুম থেকে। ঘড়িতে দেখি সকাল ৭.০০টা। ওরে বাবা, ধরফড়িয়ে উঠে বেসিনে দাড়াঁতেই মনে পরলো আব্বার কথা। প্রতিটি ঈদের সকালে আব্বা এসে মাথায় হাত বুলিয়ে ডাকতেন বাবা উঠ নামাজের বেশি সময় নাইরে...। নিজেকে তৈরী করলাম ঈদের নামাজের জন্য...। মাঝে একবার রানীকে একটা বকাও দিলাম তৈরী হতে দেরী করলো বলে X(X(X(

রানীকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দিলাম ওসাকা ইসলামী কালচারাল সেন্টারের দিকে। ওসাকায় এই সেন্টারটাই মূলতঃ মুসলমানদের জন্য নামাজ, ঈদের জামাত সহ সকল ইসলামী কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল হিসাবে বিবেচিত হয়। সেন্টারের উপরে দোতলায় মেয়েদের নামাজের জায়গা। আর নিচতলায় ছেলেদের। সেন্টারের উদ্দ্যেশ্যে একাকী পথে হেটে চলেছি আমরা দু'জন...
একাকী পথ-


বারবার মনে পরে যাচ্ছে ঈদের সকালে আব্বার সাথে ঈদগাতে যাবার কথা...। হঠাৎ পেছন থেকে ক্যাচ করে শব্দ। ফিরেই দেখি ব্লগার তোমোদাচি ও জুনিয়র তোমোদাচি (বুঝছেন তো???) দুই চাকার গাড়ীতে করে যাচ্ছেন সেন্টারের দিকে। এখানে সাইকেল না বলে গাড়ী বলার কারণ হচ্ছে, জুনিয়র তোমোদাচি কিছুদিন আগে এক ইফতার পার্টিতে ইফতারের আগে দোয়ার সময় সবাই যখন দোয়া করছে, তখন দোয়া করতে করতে চিৎকার করে দোয়া করেছে... আল্লাহ গাড়ী দাও.... গাড়ী দাও আল্লাহতায়ালা... :P:P:P

কথা বলতে বলতে পৌছে গেলাম সেন্টারে...। সেন্টারের বাহিরে, ভেতরে নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক বাংলাদেশী ভাইদের সাথে দেখা হলো। নামাজের আগে শুরু হলো তোমোদাচি ও জুনিয়র তোমোদাচির মল্লযুদ্ধ...


গাড়ীর জন্য গভীর ভাবে দোয়াও চললো কিছুক্ষণ...


কিছুক্ষণ পরেই শুরু হলো নামাজ, অতঃপর খুতবা। অতঃপর কোলাকুলি...। আর সবশেষে ফটোসেশন...


আমরাও একটু ফটোসেশন করলাম...


শুরু হলো সারাদিনের যাত্রা। সারাটা দিন টো টো করে ঘুরলাম ওসাকার বিভিন্ন বাংলাদেশী ভাইদের বাসায়। কতজন মিলে জানেন? মাত্র ৪৫-৫০ জনের একটা ছোট্ট দল নিয়ে...। সন্ধ্যায় আর দলের সাথে থাকতে পারলাম না। খেতে খেতে শরীর ভীষণ ক্লান্ত মনে হওয়ায় চলে আসলাম বাসায়। সঙ্গে দুইজন বাংলাদেশী ভাই। সেরে ফেললাম ডিনার। কিছুক্ষণ পর উনারাও দৌড় লাগালেন বাস ধরবেন বলে।

যে সব খেয়ে খেয়ে ক্লান্ত হলাম-






আরো ছিলো, ছবিতুলতে ভুলে গিয়েছিলাম।

ফোনটা নিয়ে বসলাম দেশে কথা বলার জন্য...। তারপরের কথাগুলো না বলাই ভালো...। কারণ, কালরাতে চাঁদরাতের একটা পোষ্ট দিয়ে এমনিতেই অনেকের মন খারাপ করে দিয়েছি। আর মন খারাপ করতে চাইনা। শুধু একটা কথাই বলবো... সবশেষে যখন আপাকে ফোন করেছি, দেড়-দুই বছরের ছোট ভাগনিটা কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো মামা... মামা... মামা... মামা... মামা... মামা... মামা...। আর কিচ্ছু বলছিলো না, কারণ ও এই কথাটা ছাড়া আর কিছু ঠিকমতো বলতে পারেনা...

বসলাম ব্লগে এই পোষ্টটা লিখতে...। এই হলো প্রবাসে ঈদ... প্রবাসের ঈদ...। আমরা যারা দেশের বাহিরে আছি, আমাদের শত ব্যাস্ততার মাঝে বের করে নেয়া সময়গুলোতে শেয়ার করে নেই একে অন্যের আনন্দ, দুঃখ, হতাশা, সুখ অপরের সাথে। আগামী পরশু আছে ঈদ পরবর্তী পার্টি...। উল্লেখ্য জাপানে সিলভার উইকের জন্য প্রায় ৫ দিনের একটা ছুটি পাওয়া গিয়েছে উইকএন্ড সহ। আর দ্বিতীয় দিনেই পরেছে ঈদের দিন। তাই খুব উৎসবের আমেজেই কাটবে দিনগুলো। কিন্তু মনটা পরে থাকবে সুদুর এক স্বপ্নীল দেশে...। যেখানে বাবা আমার অপেক্ষায় রয়েছে সন্তানের ফেরার আশায়... মা আমার দিনগুনছে মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করে দেয়ার আশায়। জানি কাল যখন আব্বা ঈদের নামাজ পরে দোয়া করবেন, মা আমার জায়নামাজে বসে আল্লাহর দরবারে হাত তুলবেন... সন্তানের কল্যাণই একমাত্র চাওয়া হবে তাদের। কাল সারাটাদিন হয়তো অনেক ব্যস্ততায় কাটবে উনাদের সময়গুলো। তবুও হয়তো কোন দীর্ঘশ্বাসে ভেসে আসবে সন্তানের মুখ...। আর হাজার মাইল দুর থেকে সন্তানের মুখ থেকে বারবার অস্ফুর্তে হয়তো ভাসবে... মাগো... তোমার আচঁল তলেই আমার সব আনন্দ, আমার সব খুশি...


ভালো থাকবেন সবাই...

ঈদ মোবারক...



সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ১০:০৬
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×