somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদ পালন:D....তয় নামাজ পড়ি নাই...এইটাই আফসুস! ঈদ মরাবক!B-)

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল চান রাত ছিলো এখানে। ইফতারী করে বসে বসে প্রহর গুনছিলাম কখন চাদ দেখবো, কিন্তু চাদ আসলে উঠবে কোন দিক দিয়ে সেটাই বুঝতে পারছি না। আমরা সবাই দেশে নামাজ পড়ি পশ্চিম দিকে কারন কাবা ঘর ওদিকে। মাগার দিকে এসে নামাজ পড়তে গিয়ে দেখি মনে হয় দক্ষিণ দিকে পড়ছে। টয়লেটের মুখ উল্টা দিকে। প্রথম দিকে যখনই টয়লেট দেখেছিলাম তখনই রুমমেটরে ডেকে বলি," উহুদি নাছাড়া গো দেশে লাস্টে ধর্ম খোয়ামু কি করতে, সত্যি কইরা কন, নামাজ কুন দিক দিয়া মুখ কইরা পড়েন?"
: ভাইজান যে কি বলেন, এমুন হাসির কথা আমারে জীবনেও কেউ জিগাই নাই। লাস্ট নামাজ পড়ছিলাম ম্যাট্রিক পরীক্ষার রেজাল্টের আগের দিন। তখন রেজাল্ট আর বাপের মাইর আর পুরান এক গার্ল ফ্রেন্ডের বিবাহ নিয়া টেনশিত আছিলাম!

ছোলিম টাইপ জবাব পাইয়া দুইদিন টয়লেট আটকাইয়া জুম্মা বার নামাজ পইড়া শিওর হইয়া টয়লেট করলাম। ধর্ম নিয়া আমি এতি কনশাস হইলাম এইখানে লাস্ট মুরগী খাইছি মানে আল্লাহর নামে হালালকৃত জবাই কইরা গোস্ত খাইছি ৩-৪ দিন। খাইয়া মনে হইলো রুম মেটের হাত সোনা দিয়া বান্ধাইয়া রাখি মাগার সমস্যা হইলো টার হাত বান্ধাইলে আর খাওন লাগতো না, কারন আমি রানবার পারি না! কিন্তু আসল ভুদাই হইছি একদিন বিকালে। প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়া সোজা শহরে গেলাম একদিন ঘুরতে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে। যাইতে যাইতে হঠাৎ এক সুন্দরীরে দেইখা দুইজনেরই মনে ধরলো। দেখলাম সে ঢুকলো ম্যাকডোনাল্ডে। আমরাও ঢুকলাম তার সাথে। ঢুইকা দেখি পাংখা, যেন বেহেশত খানা। এর মাঝে কুনায় দেখলাম লুকাল একটা পোলা, থোমাস যার সাথে মাঝে মাঝেই "কিশোরী মন" নিয়া ব্যাপক আলোচনা। বেচারা রিসেন্টলি আরবীর প্রেমে পইড়া মুসলিম হওনের ধান্ধায় আছে! যাই হোউক ওরে দেইখা যখন দেখলাম প্রাইস চার্ট তখন মাথাটাই ঘুইরা গেলো বার্গারের দাম দেইখা। রুমমেটরে কইলাম," কুনডা খামু?"
: মুরুব্বী যে কি কন! আই এম লাভিং ইটের দেশের সুড়কি টানাটানি না কইরা বইসা পড়ি!

দুইজনে দুইখান উইথ কোলড্রিংকস লইয়া সমানে খাইলাম বেজায় মৌজ কইরা! খাইয়া দাইয়া আরো একখান কোলড্রিংকস নিয়া বাইর হইলাম আর হাটতে হাটতে বাঙ্গালী রেস্টুরেন্টের সামনে দিয়া একখান শব্দ দেইখা মাথায় জিলিক দিলো। আমি আমার রুমমেটরে খুচা মারলাম," ঐ মিয়া আমরা যা খাইলাম, ঐডার কিমা কিসের গুস্তের?"
রুমমেট হা হইয়া চাইয়া আছে! আমার চক্ষু ভিজা বাল্টিক সাগর হইয়া গেলো!

যাই হোউক, শহরের অলিতে গলিতে আমাগো দুঃখের কাহিনি না কইয়া কালকার কাহিনী কই! ইফতারী করনের পর রুমমেটরে কইলাম," এই প্রথম দেশের ঈদ করমু, কালকা তো মন খারাপ কইরা থাকতে হইবো আর আপনে যে তইপ্যার বিরহের গান শুরু করছেন, মনে তো হয় অহনই মন খারাপ করি। তা আপনের মন খারাপ কইরা বইসা থাকনের প্লান কখন থিকা!"
: কথাতো মুরুব্বী মূল্যবান কইছেন! তার আগে কন রাইটে কি খাইবেন?
: যেই নাম না জানা ফল দিয়া ইফতারী করাইলেন, আল্লাহ মালুম এইগুলান হালাল না হারাম!
: কেন ফল কি বিসমিল্লাহ কইয়া পারতে হয় নাকি?
: ইহুদি নাছাড়াগো দেশে কিছুই অসম্ভব না!
: আপনেতো মুরুব্বী দেখতাছি পুরাই তাবলীগ হইয়া গেলেন!
: মনের দুঃখে লুঙ্গী পইড়া মুজড়া নাচতাছি না এইডাই অনেক!
: মুজড়া কি?
: গুগলান! পাইয়া যাবেন!

আমি বুঝলাম না ব্যাটা কি লেইখা সার্চ দিলো ৪-৫ মিনিট, কিছুক্ষন পর এ্যাডাল্ট সাউন্ড শুরু হইয়া গেলো। আর ওমনি দরজায় নক পড়লো! আমি কি করুম কি করুম কইয়া টয়লেটে ঢুকলাম, আর রুম মেট খাটের তলে ঢুইকা কয়," আমি নাই বাসায়, আমি নাই!"
বাইরে থিকা আওয়াজ আইলো," ঐ মিয়ারা আমি শুভ্র, ঘরের ভিতর কি করো, ডিম পারো নাকি? বাইর হও দুরত!"
আমরা দুইজনেই বাইর হইলাম। বাইরে মাঠে গিয়া বিশাল বাঙ্গালী ব্রিগেড মানে ৬-৭ জনের একটা গ্রুপ হাতে একখান ফুটবল! মাঠ খালি, শুরু হইলো লাথালাথি। আমি একখান গোল দিয়া একখান গোল ঠেকাইয়া উষ্ঠা খাইয়া সবার আগে অবসরে গেলাম। কিছুক্ষন পর আরো এক হালি বাঙ্গালী আইসা বিশাল একখান টুর্নামেন্ট খেলনের ধান্ধা করলো। পরে দুইটিমে বিভক্ত হইয়া একেক টিমের এক হালি নাম, যেমন খেলোয়াড়-ছেলোয়াড়, সিনিয়র-জুনিয়র, বিএনসিসি-নিখিল বাংলা ইত্যাদি ইত্যাদি নাম লইয়া এতিম বলটা উপর ঝাপাইয়া পড়লো আর আমি গ্যালারীতে বইসা রেফারী করতে থাকলাম। হঠাৎ দেখি কয়েকটা সাদা সুন্দরী মানে হাতে গুনা ৩-৪ টা আইসা বসলো। আমাগো হাপাইনা প্লিয়ারগুলান একেকখান ঝিমানী থিকা বিনা শার্ক এনার্জী ড্রিংক না খাইয়া গেন্জ্ঞি খুইলা খেলতে লাগলো! আরো জোর কইরা ২০ মিনিট খেলার পর সুন্দরী কয়ডা যাওনের সাথে সাথেই সবাই মাঠের উপর টপাটপ পইড়া গেলো। ঘড়ির কাটা তখন ১২ টা!

ঈদের নামাজের টাইম জাইনা রুমে আইসা রাইন্ধা বাইন্ধা শুইতে শুইতে চিন্তা করলাম কুন জায়গায় আইলাম। বোইনের কথা খুব মনে পড়লো। হয়তো এই দিন রাতে বোন আর মা কতকিছু রাধতো আর মামতো গুলো ধুমাইয়া নতুন ইংলিশ মুভী দেখতো বাসায় আর আমি বাজারের টুকিটাকি করে বাবার কাছে হিসাব দিতাম! মিলাতে চেস্টা করলাম কোনটা বেশী আনন্দের?

মানব জাতী আসলেই তার ভবিষ্যত জানে না, আর তাই সে এতটা কনফিউজড এতটা অসহায়!
৬৫টি মন্তব্য ৬৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

**অপূরণীয় যোগাযোগ*

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ২৮ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:১৯

তাদের সম্পর্কটা শুরু হয়েছিল ৬ বছর আগে, হঠাৎ করেই। প্রথমে ছিল শুধু বন্ধুত্ব, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা গভীর হয়ে উঠেছিল। সে ডিভোর্সি ছিল, এবং তার জীবনের অনেক কষ্ট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×