পিয়ারপুর রেলওয়ে স্টেশন। জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ এর মাঝে। জামালপুর থেকে তৃতীয় নম্বর রেল স্টপেজ। সম্ভবতঃ তৃতীয় সারির স্টেশন হবে। স্টেশনের একপাশে একটি ভাঙ্গাচোরা ঘর। বাঁশের তাড়াই’র পুরনো বেড়া। ঘরের মাঝখানটায় এক চিলতে পাকা জায়গা। চকককে। পরিস্কার। নামাজ ঘর।
এক কলিগের সঙ্গে বেড়াতে এসেছি এখানকার এক জায়গায়। বিকেলের একটা লোকাল ট্রেনে ফিরবো। ট্রেন এসে থামলো। দুই নম্বর লাইনে দাঁড়ানো। ক্রসিং হবে সম্ভবতঃ। ভাবলাম আছরের নামাজটা এখানেই পড়ে নেই। আজান হতে আরো প্রায় ১৫/১৭ মিনিট দেরী আছে। খেয়াল করলাম নামাজ ঘরটার আশে পাশে আরোও কয়েকজন মুসুল্লী ঘুরঘুর করতেছে। এগিয়ে গেলাম। ট্রেন তাড়াতাড়ী ছেড়ে যেতে পারে এই ভেবে বয়স্ক এক হুজুর মত দিলেন- এই একটু আগে আজান দিয়ে পড়ে ফেললে কিছু হবেনা। এই বলে নিজেই আজান দিলেন।
আমরা ২০-২৫ জন মুক্তাদী ঐ হুজুরে পিছনে এক্তেদা করলাম। নামাজ শুরু হয়েছে। এক রাকাত, দুই রাকাত পড়া শেষ। ওদিকে ট্রেনও হুইশেল দিলো। এবার তৃতীয় রাকাতের সিজদায় অবনত সবাই। সিজদা থেকে উঠতে হুজুর দেরী করছেন। কেন যেন একটু বেশী দেরী করতেছেন। নাহ্। প্রায় ৪/৫ সিজদার সময় অতিবাহিত করে ফেলেছেন। অনেকেরই ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। না, আর থাকা যায়না। সামনের কাতারের ২/১ জন আস্তেকরে মাথাটা একটু উঁচু করেছে। হুজুরের কোন সমস্যা হলো কী-না। মাথাটা উঁচু করেই তাদের চোক্ষু চরখগাছ ! আরে ! হুজুর কই ? ঈমাম সাব কই ?
হুজুরের সঙ্গে সবাই সিজদায় গেছি। ট্রেনের হুইসেল শুনে হুজুর আমাদেরকে সিজদায় রেখেই সামনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে পালিয়েছে। সিজদাহ থেকে সবাই উঠে হাসবো না কাঁদবো. . .।
মনে হলে এখনও একা একাই হাসি।