somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামের দৃষ্টিতে ভালোবাসা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভালোবাসা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। প্রতিটি মানুষই কাউকে না কাউকে ভালোবাসে ও ঘৃনা করে। আমাদের জীবনে ভালোবাসা আছে বলেই জীবনকে অনেক সুন্দর মনে হয় এবং নানাবিধ কাজে প্রেরণা খুঁজে পাই। আমাদের দ্বীন, ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে এই ভালোবাসা কেননা এর মাধ্যমেই মানুষের মৌলিক অনুভূতির প্রকাশ ঘটে। অন্যদিকে, ঈমান ও তাওহীদের মূল ভিত্তিও এই ভালোবাসা।

ভালোবাসা মূলত ৩ ধরনেরঃ
১) আল্লাহ্‌কে ভালোবাসা
২) আল্লাহ্‌র জন্য ভালোবাসা
৩) সহজাত ভালোবাসা

১) আল্লাহ্‌কে ভালোবাসাঃ
আমাদের স্রষ্টা তথা আল্লাহ্‌র সাথে ভালোবাসা চিরন্তন। আমাদের অস্তিত্ব তাঁর থেকে এসেছে বিধায় তাঁর সাথে আমাদের নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। আমরা ভালোভাবেই জানি যে, কোন কিছুই আল্লাহ্‌র মত নয় এবং আল্লাহ ও কোন কিছুর মত নয়। আমরা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য যত ধরনের ঈবাদত করি সেগুলোর মূল হচ্ছে এই ভালোবাসা। আর, এই ভালোবাসা হচ্ছে আশা ও ভয় মিশ্রিত ভালোবাসা অর্থ্যাৎ ঈবাদত করার ক্ষেত্রে আমরা যেমন আল্লাহ্‌র দয়া, রহমত, করুনা, ভালোবাসা ইত্যাদি পাবার ব্যাপারে সর্বোচ্চ আশা অন্তরে পোষণ করব এবং একইসাথে ইবাদত ত্যাগ করা বা ভুল-ত্রুটির ক্ষেত্রে তাঁর আযাব, গজব,পাঁকড়াও এবং এই দুনিয়া ও আখেরাতে যথাযথ হিসেবের ভয় করব। ঈবাদতের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালোবাসা থাকতে হবে কেননা ভালোবাসাহীন তাওহীদ, ঈমান ও আমল গ্রহনযোগ্য নয়। ক্বুর’আনে এসেছে, মুমিনরা সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে মহান আল্লাহ্‌কে।

ঈবাদতের ক্ষেত্রে, ইবাদতের ভালোবাসার ক্ষেত্রে অন্য কাউকে বা অন্য কিছুকে শরীক করা হচ্ছে শিরক। এই ভালোবাসা ২ ধরনেরঃ
ক) আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে অন্য মাবুদ বা ইলাহকে ভালোবাসা এবং
খ) আল্লাহ্‌কে ভালোবাসার পাশাপাশি অন্য মাবুদ বা ইলাহকে ভালোবাসা

আল্লাহ্‌র ভালোবাসা নবীকেও দেয়া যাবেনা। এছাড়াও ভালোবাসার দাস হওয়া যাবেনা; এটা আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে Blessings বা অনুগ্রহ নয়।

মানুষ সাধারণত মৌলিক ২ কারনে অপর মানুষকে ভালোবাসেঃ
ক) কেউ Favor করলেঃ Favor এর জন্য ভালোবাসলে একমাত্র আল্লাহকেই ভালোবাসতে হবে কেননা এর পুরোটাই আল্লাহ্‌র দেয়া। যে ভাই Favor করেছেন, আল্লাহ তাকে Favor করার মত সামর্থ দিয়েছেন, Favor করার জন্য তার মন-মানসিকতাকে নরম করে দিয়েছেন এবং ঐ ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে দিয়েছেন। অতএব, এখানে পুরোই আল্লাহ্‌র কৃতিত্ব।
খ) সিফাত বা বেশিষ্ট্য (জ্ঞান, ক্ষমতা, সৌন্দর্য, দয়া ইত্যাদি) এর কারনে

আল্লাহ্‌ নিজে সুন্দর এবং সুন্দরকে ভালোবাসেন। আল্লাহ্‌ তাঁর সৃষ্টির প্রতি পরম দয়ালু। কোন ধরনের বিপদ-আপদ আসলে, অতি মাত্রায় মন খারাপ করা যাবেনা বা পেরেশান হওয়া যাবেনা কেননা এটিও আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পরীক্ষা। একটা উদাহরন দেয়া যেতে পারেঃ দুনিয়াতে যদি কেউ এমন পুরস্কারের ঘোষনা দেয় যে, এক সপ্তাহ শুধুমাত্র উনার জন্য কাজ করলে সহস্র কোটি টাকা দেওয়া হবে, তখন উনার পক্ষ থেকে যত কষ্টই দেয়া হোক বা যত কাজই দেয়া হোক না কেন সেগুলোকে আমাদের কাছে কষ্টই মনে হবেনা বড়মাত্রার পুরষ্কারের কারনে। যদি ভোর ৪ টায় আমাদেরকে উঠতে বলে, আমরা আনন্দচিত্তে ভোর ৩ টায় উঠে বসে থাকব। অথচ, আল্লাহ্‌ আমাদের অসীম ও অনন্ত নেয়ামতের আধার জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিলেন কিন্তু আমরা অনেকেই ভোরে উঠে ফজরের সলাতটুকু আদায় করতে ব্যার্থ হই!

জান্নাতের নাজ-নেয়ামত হাসিলের জন্য, আল্লাহ্‌ আমাদের ৫০/৬০ বা ১০০ বছরের আনুগত্যের কথা বলেছেন এবং এর মানে এই নয় যে, সারাদিন সিজদায় পড়ে থাকব! শুধুমাত্র নিয়মমাফিক ৫ ওয়াক্ত সলাত আদায় করা (সারাদিন নয়), রমাদ্বানের একমাস সিয়াম সাধনা পালন করা (সারাবছর নয়), জীবনে একবার হাজ্জ্ব পালন করা (জীবনভর নয়) ইত্যাদি। একজন মদ্যপ বা নেশাখোরের কাছে মদ পান করা বা নেশা ত্যাগ করা অনেক কঠিন মনে হয় কেননা তিনি এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন এবং এটি তার কাছে বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে গেছে অথচ একজন সাধারন মানুষ এতে কোন আনন্দই খুঁজে পায় না বা এর কোন প্রযোজনই অনুভব করেনা! ঠিক তেমনি আল্লাহ্‌র ভালোবাসায় মশগুল থাকলে, নিয়মমাফিক আল্লাহ্‌র আনুগত্য করতে, আমাদের কোন ধরনের কষ্ট বা নিরানন্দ হবার কথা নয়! আর, আল্লাহ্‌র ভালোবাসা পেতে গেলে কিছু কষ্টতো করা লাগবেই, বিনা কষ্টে জান্নাত নয়।

(আল্লাহ্‌র ভালোবাসার ক্ষেত্রে প্রেম, ইশক, আল্লাহ্‌র আশেক ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা যাবেনা, বেয়াদবি হবে কেননা এগুলো মানবীয় ভালোবাসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।)

২) আল্লাহ্‌র জন্য ভালোবাসাঃ
ক) নবী-রসূলকে ভালোবাসাঃ আমরা যদি আমাদের নিজের জীবনের চেয়েও রসূল (সঃ) কে ভালোবাসতে না পারি, তবে আমরা পুর্ন ঈমানদার হতে পারব না।

◅ ▻ আবুল ইয়ামান (রহঃ) .... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ সেই পবিত্র সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে বেশি প্রিয় হই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান | হাদিস নাম্বার: 13)

অন্য হাদিসে বলা হয়েছে,
◅ ▻ ইয়া’কুব ইব্‌ন ইবরাহীম ও আদম (রহঃ) .... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার কাছে তার পিতা, সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশী প্রিয় হই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান | হাদিস নাম্বার: 14)

মুমিনরা নিজের জীবন দিয়ে হলেও নবীর প্রতি ভালোবাসা সমুন্নত রাখে। সুতরাং, আমাদের নিজের জীবন দিয়ে ভালোবাসতে হবে রসূলের (সঃ) এর সুন্নাহকে যেন আমরা জান্নাতে তার সাথে একত্রিত হতে পারি।

একজন বান্দা পরিপূর্ণ ঈমানের স্বাদ পাবে তখনই যখন তার মাঝে ৩ গুন বিদ্যমান থাকবে।

◅ ▻ মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন হাওশাব তায়েফী (রহঃ)......আনাস ইবন মালিক (বা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তিনটি জিনিস এমন যার মধ্যে সেগুলো পাওয়া যাবে, সে ঈমানের স্বাদ পাবে।
১) আল্লাহ ও তার রাসুল তার কাছে অন্য সবকিছু থেকে প্রিয় হওয়া*
২) কাউকে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য ভালবাসা এবং
৩) জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে যেভাবে অপছন্দ করে, তেমনি পুনরায় ফূফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করাকে অপছন্দ করে।
(ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা | হাদিস নাম্বার: 6472)

* আল্লাহ্‌কে ভালোবাসতে হলে কাজের মাধ্যমে প্রমাণ দিতে হবে - আনুগত্য করতে হবে। নবীর প্রতি ভালোবাসা হচ্ছে আনুগত্যের ভালোবাসা তবে এখানে আনুগত্য বলতে তার সকল সুন্নাতের অনুসরন করা এবং আদেশ-নিষেধ গ্রহন করা ইত্যাদি। মুসলমানদের জন্য লজ্জার বিষয় হচ্ছে নবীকে বাদ দিয়ে কোন Celebraty কে অনুসরন করা। রসূলের (সঃ) এর সাথে আমাদের সময় ও স্থানের বিরাট পার্থক্য তবুও আমরা তাকে ভালোভাবে চিনি এবং ভালোবাসি তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনে। তিনি মানুষের প্রতি সবচেয়ে বড় এহসানকারী।

অপর হাদিসে বলা হয়েছে,
◅ ▻ আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না, যতক্ষন না সে কোন মামুষকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসবে, আর যতক্ষণ না সে যে কুফরী থেকে আল্লাহ তাকে উদ্ধার করেছেন, তার দিকে ফিরে যাওয়ার চাইতে আগুন নিক্ষিপ্ত হওয়াকে সর্যাধিক প্রিয় মনে করবে এবং যতক্ষণ না আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছুর চেয়ে অধিক প্রিয় হবেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ৬৫/ আচার ব্যবহার | হাদিস নাম্বার:5615)


নবীর প্রতি ভালোবাসার দাবিঃ
- আনুগত্য করতে হবে
- আদেশ মানতে হবে
- নিষেধ মানতে হবে (মন যেভাবে চায় সেভাবে করলে নিজের প্রবৃত্তি বা মনকে ইলাহ বানানো হবে এবং এটা এক ধরনের শিরক হবে)
- তার দেখানো পথে ঈবাদত করতে হবে
- সুন্নতকে সমুন্নত করতে হবে (নিজের মন মত ভাললাগা-মন্দলাগা যাবেনা)
- সুন্নতের বিরুদ্ধে সমস্ত আক্রমন প্রতিহত করা (সাধ্য অনুযায়ী, সাধ্যের বাইরে হলে সেটা করা সুন্নতের খেলাফ)

◅ ▻ মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ......... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (সাঃ) একবার তাঁর কাছে আসেন, তাঁর নিকট এক মহিলা ছিলেন। রাসূল (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘ইনি কে? আয়িশা (রাঃ) উত্তর দিলেন অমুক মহিলা, এ বলে তিনি তাঁর সালাতের উল্লেখ করলেন। রাসূল (সাঃ) বললেনঃ ‘থাম, তোমরা যতটুকু সামর্থ্য রাখ, ততটুকুই তোমাদের করা উচিৎ।আল্লাহ্‌র কসম! আল্লাহ্ তা’আলা ততক্ষন পর্যন্ত (সওয়াব দিতে) বিরত হন না, যতক্ষন না তোমরা নিজেরা ক্লান্ত হয়ে পর। আল্লাহ্‌র কাছে সবচাইতে পছন্দনীয় আমল তা-ই, যা আমলকারী নিয়মিত করে থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান | হাদিস নাম্বার: 42)

খ) মুমিনদের মধ্যে পারস্পারিক ভালোবাসাঃ
কেয়ামতের দিন, মুত্তাকি ছাড়া সবাই একে-অপরের শত্রুতে পরিণত হবে। মুমিনদের প্রতি ভালোবাসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং একে বাড়ানো দরকার।
- সালামের মাধ্যমে (সালামের মাধ্যমে মুমিনদের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়, বৃদ্ধি পায়।

◅ ▻ আবু বকর ইবন আবু শায়বা (রহঃ)……আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষন না ঈমান আন আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষন না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বাতলে দেব না যা করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসার সৃষ্টি হবে ? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ মুসলিম | অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান | হাদিস নাম্বার: 100)

- উপহার বিনিময় (ছোট-বড় যেকোন উপহারে পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। কেয়ামতে তাদের জন্য বিরাট পুরষ্কার রয়েছে। ৭ জন ব্যাক্তি যারা আল্লাহ্‌র ছায়ায় থাকবে, তাদের মধ্যে ঐ দুই ব্যাক্তিও থাকবে যারা শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালোবাসে এবং মৃত্যুর পুর্ব পর্যন্ত তা বজায় রাখে। মুসলিম ভাইকে আল্লাহ্‌র জন্য ভালোবাসলে তাকে তা জানিয়ে দিতে হবে।)

◅ ▻ মুহাম্মদ ইবন বাশশার (রহঃ)...... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ যে দিন আল্লাহ্‌র রহমতের ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ্‌ তা’লা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার রবের ইবাদাতের মধ্যে, ৩. সে ব্যক্তি যার কলব মসজিদের সাথে লাগা রয়েছে, ৪. সে দু’ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালোবাসে আল্লাহ্‌র ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহ্‌র জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহ্‌র জন্য, ৫. সে ব্যক্তি যাকে কোন উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহ্বান জানোায়, কিন্তু সে এ বলে তা প্রত্যাখ্যান করে যে, ‘আমি আল্লাহ্‌কে ভয় করি’, ৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানেনা , ৭. সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহ্‌র জিকির করে, ফলে তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ১০/ আযান | হাদিস নাম্বার: 627)

অন্য বর্ননায় এসেছে,
◅ ▻ মুসাদ্দাত (রহঃ)… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ যে দিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবেনা সে দিন আল্লাহ তা‘আলা সাত প্রকার মানুষকে সে ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক। ২. যে যুবক আল্লহর ইবাদতে নিমগ্ন থেকে যৌবনে উপনীত হয়েছে। ৩. যার অন্তরের সম্পর্ক সর্বদা মসজিদের সাথে থাকে। ৪. আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে দু‘ব্যক্তি পরস্পর মহব্বত রাখে, উভয়ে একত্রিত হয় সেই মহব্বতের উপর আর পৃথক হয় সেই মহব্বতের উপর। ৫. এমন ব্যক্তি যাকে সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (অবৈধ মিলনের জন্য) আহবান জানিয়েছে। তখন সে বলে, আমি আল্লহকে ভয় করি। ৬. যে ব্যক্তি গোপনে এমনভাবে সাদকা করে যে, তার ডান হাত যা দান করে বাম হাত তা জানতে পারেনা। ৭. যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লহকে স্মরণ করে এবং তাতে আল্লাহর ভয়ে তার চোখ থেকে অশ্রু বের হয়ে পড়ে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ২১/ যাকাত | হাদিস নাম্বার: 1340)

◅ ▻ মুহাম্মাদ ইবন মুসান্না ও ইবন বাশাশার (রহঃ)……আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউই মুমিন হতে পারবেনা, যতক্ষন সে তার ভাই-এর জন্য (অন্য বর্ণনায় তার প্রতিবেশীর জন্য) ও তা পছন্দ করবেনা, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ মুসলিম | অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান | হাদিস নাম্বার: 76)

অপর হাদিসে,
◅ ▻ যুহায়র ইবন হারব (রহঃ)……আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ সে মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, কোন বান্দা ততক্ষন পর্যন্ত মুমিন হতে পারবেনা, যতক্ষন সে তার প্রতিবেশী (অন্য বর্ণনায় ভাই-এর) জন্য তা পছন্দ না করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ মুসলিম | অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান | হাদিস নাম্বার: 77)

যার সাথে যার ভালোবাসা বা মোহাব্বতের সম্পর্ক, হাশরের ময়দানে সে তার সাথেই থাকবে। অতএব, আমরা যদি কোন তথাকথিত Celebraty কে ভালবাসি তবে বিচার দিবসে তার সাথেই একসাথে থাকব।

আল ওয়ালা আল বারাঃ
একমাত্র আল্লাহ্‌র জন্যই ভালোবাসা, ঘৃনা, বন্ধুত্ব ও শত্রুতা পোষন করা অর্থ্যাৎ মুমিনদের সাথে ব্যাক্তিগত বিরোধ থাকলেও আল্লাহ্‌র জন্যই তাকে ভালোবাসতে হবে অপরদিকে অবিশ্বাসীদের প্রতি বন্ধুত্ব থাকলেও আল্লাহ্‌র জন্যই তার সাথে শশ্রুতা পোষন করতে হবে। অবিশ্বাসীদের প্রতি আমাদের সম্পর্ক হবে শত্রুতার এবং মনে কোন ভালোবাসা থাকবে না। মুমিনরা সবসময়ই বন্ধু এবং অবিশ্বাসীরা সবসময়ই শত্রু তবে অবিশ্বাসীদের দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই নম্রতা ও বিনয় দেখাতে হবে।

শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র জন্যই কিছু দিতে হবে এবং আল্লাহ্‌র জন্যই কিছু দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

◅ ▻ আবুল ইয়ামান (রহঃ) ......... সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) একদল লোককে কিছু দান করলেন। সা’দ (রাঃ) সেখানে বসা ছিলেন। সা’দ (রাঃ) বললেন, রাসূল (সাঃ) তাদের এক ব্যক্তিকে কিছু দিলেন না। সে ব্যক্তি আমার কাছে তাদের চেয়ে অধিক পছন্দনীয় ছিল। তাই আমি বললাম, ইয়া রাসূল (সাঃ)! অমুক ব্যক্তিকে আপনি বাদ দিলেন কেন? আল্লাহ্‌র কসম! আমিতো তাকে মু’মিন বলেই জানি। তিনি বললেনঃ (মু’মিন) না মুসলিম? তখন আমি কিছুক্ষণ চুপ থাকলাম। তারপর আমি তার সম্পর্কে যা জানি, তা প্রবল হয়ে উঠল। তাই আমি আমার বক্তব্য আবার বললাম, আপনি অমুককে দানের ব্যপারে বিরত রইলেন?আল্লাহ্‌র কসম! আমিতো তাকে মু’মিন বলেই জানি। তিনি বললেনঃ ‘না মুসলিম?’ তখন আমি কিছুক্ষণ চুপ থাকলাম। তারপর তার সম্পর্কে যা জানি তা প্রবল হয়ে উঠল। তাই আমি আমার বক্তব্য আবার বললাম। রাসূল (সাঃ) আবারও সেই জবাব দিলেন। তারপর বললেনঃ ‘সা’দ! আমি কখনো ব্যক্তি বিশেষকে দান করি, অথচ অন্য লোক আমার কাছে তার চাইতে বেশি প্রিয়। তা এ আশঙ্কায় যে (সে ঈমান থেকে ফিরে যেতে পারে পরিণামে), আল্লাহ্ তা’আলা তাকে অধোমুখে জাহান্নামে ফেলে দেবেন। এ হাদীস ইউনুস, সালিহ, মা’মার এবং যুহরী (রহঃ)-এর ভাতিজা যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান | হাদিস নাম্বার: 26)

মুসলিম পুরুষদের জন্য আহলে কিতাবদের (ইহুদী ও খ্রিষ্টান) সতী-সাধ্বী নারীদেরকে বিবাহ করা বৈধ। স্ত্রী হওয়ার কারনে, তার সাথে স্বাভাবিক ভালোবাসা থাকবে এবং দ্বীনের কারনে অপছন্দ করবে (বাবা-মা, সন্তানের ক্ষেত্রেও এমন)।

ক্বুর'আনে বলা হয়েছে,
“মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও,অথচ তারা যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে, তা অস্বীকার করছে। তারা রসূলকে ও তোমাদেরকে বহিস্কার করে এই অপরাধে যে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টিলাভের জন্যে এবং আমার পথে জেহাদ করার জন্যে বের হয়ে থাক, তবে কেন তাদের প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের পয়গাম প্রেরণ করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর, ত আমি খুব জানি। তোমাদের মধ্যে যে এটা করে, সে সরলপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। (1) তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে, কোনরূপে তোমরা ও কাফের হয়ে যাও। (2) তোমাদের স্বজন-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি কিয়ামতের দিন কোন উপকারে আসবে না। তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। (3) তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে। কিন্তু ইব্রাহীমের উক্তি তাঁর পিতার উদ্দেশে এই আদর্শের ব্যতিক্রম। তিনি বলেছিলেনঃ আমি অবশ্যই তোমার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করব। তোমার উপকারের জন্যে আল্লাহর কাছে আমার আর কিছু করার নেই। হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা তোমারই উপর ভরসা করেছি, তোমারই দিকে মুখ করেছি এবং তোমারই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন। (4) “(Surah Al-Mumtahina: 1-4)

ঈমানের উপর কুফরীকে গ্রহন করলে, বাবা-ভাইকেও বন্ধুরুপে গ্রহন করা যাবেনা কেননা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতাকারীদেরকে মিত্র হিসেবে গ্রহন করেনা মুমিনরা।

৩) সহজাত ভালোবাসাঃ
পিতা, পুত্র, বাবা, মা, স্বামী, স্ত্রী, বন্ধু, খাদ্য, সম্পদ, ব্যাবসা, বানিজ্য, খ্যাতি, সামাজিক মর্যাদা এবং যেকোন বস্তুকে ভালোবাসা। এদের প্রতি জাগতিক ভালোবাসা থাকবে তবে দ্বীনের বিরোধী হলে অপছন্দ করবে। তবে, এই সহজাত ভালোবাসা যদি ইসলাম পানলে বাঁধা দেয় বা বিরত রাখে তবে তা দূষণীয় ও নিন্দনীয় হবে।

◅ ▻ আমর ইব্‌ন খালিদ (রহঃ)......... উকবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা নাবী (সাঃ) (মদীনা থেকে) বের হয়ে (উহুদ প্রান্তরে গিয়ে) উহুদের শহীদগণের জন্য জানাযার নামাযের মত নামায আদায় করলেন। এরপর মিম্বরের দিকে ফিরে এসে বললেন, আমি তোমাদের অগ্রগামী ব্যক্তি এবং আমিই তোমাদের সাক্ষ্যদাতা। আমি এই মূহুর্ত্বেই আমার হাউয (কাউসার) দেখতে পাচ্ছি। আমাকে পৃথিবীর ধনভান্ডারের চাবি দেওয়া হয়েছে অথবা বললেন (বর্ণনাকারীর সন্দেহ), আমাকে পৃথিবীর চাবি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ্‌র কসম! আমার ইন্তেকালের পর তোমরা শির্‌কে লিপ্ত হবে- আমার এ ধরণের কোনো আশংকা নেই। তবে আমি আশংকা করি যে, তোমরা পৃথিবীর ভোগবিলাসে মত্ত হয়ে পড়বে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান) | হাদিস নাম্বার: 3785)

আল্লাহ্‌ অবশ্যই আমাদেরকে পরীক্ষা করবেন এসব ভালোবাসার বস্তু বা ব্যাক্তি দ্বারা। আর, যাকে যত বেশী পছন্দ করেন তার পরীক্ষাও তত কঠিন হবে। যেমনঃ আল্লাহ্‌র বন্ধু বা খলিল হচ্ছে ২ জন – হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এবং দুজনের পরীক্ষাই অন্যান্য নবী-রসূলের তুলনায় কঠিন ছিল।

নারী-পুরুষের ভালোবাসাঃ
বর্তমানে আমাদের সমাজে টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন, নাটক, সিনেমায় ভালোবাসার নামে যা প্রচার করা হয় তা হচ্ছে, অস্থায়ী ও কলুষিত ভালোবাসা। বিদেশী এক জরিপে দেখা গেছে, বিবাহপুর্ব প্রেম-ভালোবাসার পরিণতিতে যে বিয়ে হয় তার ৭৫% ই পরবর্তীতে ভেঙ্গে যায়।

নারী-পুরুষের একে অপরের প্রতি এই ভালোবাসাটা স্বাভাবিক। সুতরাং, কাউকে ভালো লাগলে, শরীয়তের বাঁধা না থাকলে এবং বিয়ের জন্য উপযুক্ত মনে হলে, ২ টা কাজ করতে হবে।
ক) সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেয়া
খ) বিয়ে [প্রস্তাব গৃহীত হলে] অথবা ভুলে যাওয়া [প্রস্তাব গৃহীত না হলে] (বিয়ের ক্ষেত্রে কোন পক্ষের অসম্মতি থাকলে, ভুলে না যাওয়ার মানে হচ্ছে, শয়তানের পক্ষ থেকে বিপথগামী হওয়ার জন্য দরজা খুলে রাখা)

- অনেক পরিবারেই দেখা যায়, স্ত্রী বাইরে বের হওয়ার সময় অনেক সাজগোজ করে কিন্তু নিজের ঘরে যখন অবস্থান করে তখন ময়লা বা নোংরা কাপড়-চোপড় পরিধান করে এমনকি স্বামীর সন্তুষ্টির জন্য সাজগোজ করার প্রয়োজন ও অনুভব করে না! অথচ,এমনটা হওয়া উচিত ছিল না, শুধুমাত্র স্বামীর জন্যই স্ত্রীরা সাজগোজ করবে।
- প্রয়োজনের খাতিরে নারীদের কাছ থেকে কিছু চাইতে হলে পর্দার আড়াল থেকে চাইতে হবে এবং এমনটাই করতেন সাহাবীরা রসূল (সঃ) এর পত্নীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে। আর, সাহাবী বা নবী পত্নীদের চেয়ে নিশ্চয়ই আমাদের মন পরিষ্কার নয়!
- একজন গায়েরে মাহরাম পুরুষ ও নারী নির্জনে মিলিত হলে সেখানে তৃতীয় আরেকজন থাকে এবং সে হচ্ছে শয়তান। দাওয়া দেয়ার অজুহাতেও নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা করা যাবে না! আমরা স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল, তাই শয়তানকে কোনভাবেই সুযোগ দেয়া যাবেনা। Publicly দাওয়া দেয়া পুরুষের কাজ, নারীদের নয়। আর, Mixed Environment এ দাওয়া না দেয়াই উত্তম কেননা আগে নিজেকে রক্ষা করতে হবে এরপর দাওয়াতী কাজ করতে হবে।

◅ ▻ কুতাইবা ইবন সাঈদ (রহঃ)..............ইবন আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন পুরুষ যেন অপর কোন মহিলার সাথে নির্জনে অবস্থান না করে, কোন স্ত্রীলোক যেন কোন মাহরাম সঙ্গী ব্যতীত সফর না করে। এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূল (সাঃ)! অমুক অমুক যুদ্ধের জন্য আমার নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আমর স্ত্রী হাজ্জে যাবে। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, ‘তবে যাও নিজ স্ত্রীর সঙ্গে হাজ্জ কর’। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি | অধ্যায়ঃ ৪৮/ জিহাদ | হাদিস নাম্বার: 2798)

অপর হাদিসে বলা হয়েছে,
◅ ▻ হযরত ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, "যখনই কোন পুরুষ পর নারীর সাথে নির্জনে দেখা করে তখনই শয়তান সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত হয় ।" (সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-২১৬৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-৫৫৮৬)

- আমাদের সন্তানদেরকে ও কলুষিত ভালোবাসার ফিত্না থেকে নিরাপদ রাখতে হবে। কেননা, বাসায় শুধুমাত্র ক্বর’আন ও হাদীসের পাঠ দিয়েই এর থেকে নিরাপদ রাখার চিন্তা করা অলীক স্বপ্ন এবং প্রায় অসম্ভব, আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের কারনে। সবার আগে ঈমান রক্ষা করা কর্তব্য। ইসলামের ছায়াবিহীন পরিবেশে সন্তানদের পাঠানো এক ধরনের জুয়া খেলার মত। আর, সন্তানরা বিপথে গেলে এবং জাহান্নামী হলে, এর দায়ভার আমাদেরকেই নিতে হবে এবং আমাদেরকেও জাহান্নামী হতে হবে।

আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে সব ধরনের কলুষিত ভালবাসার করাল গ্রাস থেকে হেফাজত করুন। আমীন

---------------------------------------------------------------------------------------------------
http://www.hadithbd.com (হাদিসের বিশাল সংরহশালা)
http://tanzil.net/#trans/bn.bengali/60:1 (প্রায় সব ভাষায় ক্বুর'আনের অনুবাদ এবং তেলাওয়াত)

_______________________________________________________________________
এটি OIEP আয়োজিত সাপ্তাহিক হালাকা বা আলোচনার সারমর্ম (৩০/০৮/২০১৩ ঈসায়ী)

ক্লাশে উপস্থিত থেকে, আলোচনা থেকে নিজের জন্য সংগ্রহকৃত চুম্বক অংশ (কিছু নিজের কথা ও বাড়তি কয়েকটি হাদিসসহ) এবং এখানের ভুল-ত্রুটি একান্ত অনিচ্ছাপ্রসূতঃ । যদি কোন প্রকার ভুল-ত্রুটি কিংবা কমতির হয় তার জন্য আমি বৈ অন্য কেউ দায়ী নয় এবং এর জন্য আপনাদের কাছে ও মহান আল্লাহ্‌র কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা আহ্বান করছি । আল্লাহ আমাদের সকলকে তার সন্তোষমূলক কাজ করার তাওফীক দান করুন এবং সকলকে হেদায়াতের উপর ইস্তেখামাত থাকার তাওফীক দান করুন । আমীন

[ ফেসবুকের বড় স্ট্যাটাসগুলো ও নোটসমূহ (ইসলামিক কবিতা ও অন্যান্য) আমার ব্যাক্তিগত ব্লগ http://www.tanin87.blog.com এ ইনশাআল্লাহ্‌ যেকোন সময় পাবেন ]
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×