রোজার মাসে সকাল বেলায় ঘুমোনো টা একটা মোটামুটি বদ অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছে ... সেহরী করে ফজর নামাজ পড়ে একটা ঘুম না দিলে এখন কেমন জানি লাগে, এর মাঝে যদি কেউ ডিস্টার্ব করে তাইলে কেমন লাগে কন দেখি ? তবুও সমস্যার পরিমানটা প্রকট বলেই আপাতত মেজাজ বিলা করছি না ... সমস্যা টা কার জানেন ? আমাদের সবার পরিচিত বিয়ের জন্য উন্মাদ ব্লগার এর ... এইবার শুনেন কাহিনী কি হইসে তার সাথে ...
>> হ্যাল্লো বস ঘুমাও নাকি ?
--- কে রে বাপ সকাল সকাল আমার ঘুমটা ভাঙ্গালে ? (ফোনে দেখা যায় প্রাইভেট কল)
>> আরে আমারে তুমি চিনলা না
--- ঘুমের মধ্যে ডাইকা তুলসো কি আমারে গেজ গেম খেলানোর জন্য ? জলদি বইলা ফালাও মামা তুমি কিডা ...
>> আরে আমি সেই মানুষ টা যে তুমারে একটা কথা বলেই কান ঝালাপালা কইরা দিতাসি আর তুমি সেটা শুনতেছ ই না ...
--- তুমি তাইলে নাঈম ব্রো না হয়া যাওনা ...
>> ধরসো ঠিক, কিন্তু দুপুর বেলা ঘুমাও ক্যান , কাম নাই ?
--- মামা, এখন তুমার দুপুর, আমার কইলাম ভোর ... খবর আছে ?
>> ওহ !! এই কথা , তা তুমি আমরে চিনলানা ক্যান ?
--- একেতো তুমি ভোর বেলা ঘুম ভাঙ্গাইসো তার উপর নম্বর প্রাইভেক কইরা রাখসো , আর কি কমু কও ... আগে কও নাম্বার হাইড করসো ক্যান ?
>> আর কইও না, এই নম্বর দেখলে মাইয়ারা আর রিসিভ করে না, এইল্লিগা এই কাম করসি ...
--- ঘটনা কিতা মামু , ঝেড়ে কাশো একটু ...
এর পরে কিছুক্ষন সময় পার হয়ে গেল তার কোন খবর নেই, একটু পর পর খালি শুনি তার দীর্ঘশ্বাসের শব্দ ... কিছুক্ষন পরে আমিই তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম --
--- হুমম, বুঝছি ঘটনা কৈ পয়াচ খাইসে, আন্টি জানে ?
>> হু , জানে আম্মা কইসে মাইয়া দেখুম নাকি ? আমি কইসি আমি নিজে পছন্দ করি ? ... এইটা শুনে আম্মা অনুমতি দিসে
--- সে তো ১৯৫৩ সালের ঘটনা কম করে হলেও ২০ বার শুনেছি, নতুন আপডেট দাও
>> আম্মারে এই কথা কইসি দেখে উনি আমর মেয়ে দেখে না আমারেই ব্যাবস্হা করা লাগবে ...
--- তো সমস্যা কৈ , তোমার পরিচিতদের মধ্যে একজনরে পছন্দ কইরা ফালাও
>> সেই খানেই তো সমস্যা, কারে পছন্দ করি ...
--- বুঝছি, আইচ্ছা কও তোমার সেই বাল্যকালের দোস্তের খবর কি যে তোমারে নিয়ে সবসময় শপিং এ যেত ?
>> সে শপিং এ আমারে নিয়ে গিয়ে যেমন ছিল্লান দিত একদিন খালি কইসিলাম আমি কি তোর সরকারী ব্যাংক নাকি রে আমন ছিলিস ক্যান আমারে ?
--- এর পরে ?
>> এর পরে আর কি , সে আরেক জনের পকেট কাটা শুরু করেছে ... আমি সাইড লাইনে খাড়ায়া তার তামশা দেখতেসি
--- আইচ্ছা সে তাইলে বাদ ! এবার পাশের বাড়ীর ঐ জনের খবর কি বলো তো, তুমি ব্যালকনিতে দাড়ালে যে তুমারে কোনাইচ্যা হাসি দিতো ?
>> আর কইও না তার কথা, সে আমারে সেই জাতীয় কোনাইচ্যা খোঁচা মেরেছে ...
--- মানে ?
>> সে আর আমি তখন প্রাই ব্যালকনিতে দাড়ায়া ভিন্ন ভিন্ন এ্যন্গেলে কোনাইচ্যা হাসি দিতাম, একদিন খেয়াল করে দেখি আমার সামনের বাড়ীর ছেলেটাও দাড়ায়া দাড়ায়া ওর দিকে কোনাইচ্যা হাসি মারতেসে , এর পরে একদিন ইফতারি খেয়ে আমি আমি আর ঐ পোলা দুজনে একসাথে রাস্তার মোড়ের দোকানে গেছি এমন সময় দেখি সে এসেছে ... আর আমার দিল টা ভেঙ্গে চুরে খান খান করে দিয়ে গেছে ...
--- কি কইসে তুমারে ?
>> আমার দিকে তাকায়া কইলো -- ভাইয়া একটু ঐ দিকে আসবেন প্লিজ . আমি ভাবলাম আমারে ডাকতেসে এই ভেবে কইলাম কোনখানে যামু ? সে কইলো আপনারে ডাকিনাই তো ডাকসি ঐ ভাইয়াকে , আপনি আসবেন ক্যান ? ততক্ষনে বুঝলাম আসল কাহিনী
--- আসল কি কাহিনী ?
>> কি আর কমু রে ভাই, এতদিন সে আমার দিকে না, তাকাইতো ঐ পোলার দিকে আর আমি ভাবতাম ... কি না কি (আবারো দীর্ঘশ্বাসের শব্দ)
--- হুমম, এইখানেও ক্যারফা তাইলে ... আচ্ছা তোমার ঐ কলিগের নামটা জানি কি যে তুমারে লান্চে বাড়ীর খাবার এনে খাওয়াইতো প্রায় সময় আর নিজে ক্যান্টিন থেকে কিনে খেত ?
>> ওর নাম এখন আমি আর মুখে আনুম না, তুমিও আর কইও না তার কথা
--- ক্যান কি হইসে ? তার আবার সমস্যা কোন খানে ?
>> সে আমারে কোনোদিন কয় নাই যে উনি বিবাহিত ...
--- আয় হায়, কও কি ?
>> ঠিকই কই, ডেইলি যে খাবার আমারে সে খাওয়াইত সেইটা আসলে ওর শাশুড়ী রান্না করে দিতো আর তাকে সাথে আনতেই হইতো, কিন্তু শাশুড়ির হাতের খাবার সে খাবে না বলেই আমারে গিনিপিগ বানায়া খাওয়াইসে এতদিন ... আর নিজের ক্যান্টিনের জিনিস খাইসে ... সেই খাবারের কথা মনে পড়লে এখনো আমার গা গুলায় (ওয়াক ওয়াক !!!)
--- হইসে হইসে , ওয়াক ওয়াক কইরো না , এটাও তো বাতিল মনে হচ্ছে ... কাজিন টাজিন নাই তোমার ?
>> ওগুলোর কথা আর কইওনা ভাই , এক একটার থেকে বড় পোংটা , আমার পাত্রী খুজার কাহিনী ক্যামনে জানি জেনে গেছে ওরা সবাই ... এর পর থেকে আমারে ক্যামনে ভাঙ্গাবে তার চিন্তায় সব কটার যেন দিন কাটে না রাতে আসে না সকাল হয়না অবস্হা
--- তাইলে এখন উপায় ?
>> উপায় খুজার জন্যই তো ফুনাইলাম তুমারে
--- আমি আর কি করুম রে ভাই, নিজেরটাই জুটাইতে পারলাম এখনো ... তবে, এক কাজ করি সামু তে বিজ্ঞাপন দেই কি বলো ?
>> যেইটা ভালো মনে করো করো , আমার খালি বিয়া করার দরকার ....
--- সত্যি সত্যি দিমু কইলাম
>> দেও দেও, দিতেই তো কইতাসি ...
--- তাইলে সামু ব্লগারদের জন্য একটা মেসেজ দাও ... সেইটা টাইটেল বানায়া আজকেই পোষ্টাইতেসি ...
>> পাত্রী চাই দোয়া চাই, জলদি বিয়ে করতে চাই ...
--- তথাস্তু, রাইতের মধ্যে সামুতে পেয়ে যাবা তোমার ব্লগ ....
এখন আমাদের নাঈম ভাই এর জান প্রান আশা ভরসা সবকিছু আপনাদের হাতে সপে দিয়ে আমি মুক্ত হইলাম , দেখেন আপনারা উনার জন্য কিছু করতে পারেন কি না ...
বেচারা ফাস খাইয়া শহীদ হইতে চাইতেছে আপনারা তারে একটা ফাসির দড়ির ব্যাবস্হা কইরা দ্যান, পিলিঝ !!!