somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুলো আর কালু :)

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ ভুলো আর কালুর কথা বলবো। ভুলো আর কালু –নাম দু’টো বলতেই যেন ভুলো তার খুব গম্ভীর মুখ নিয়ে আর কালু আনন্দের টগ্‌বগ্‌ করতে করতে আমার মনে ঘুরে গেল!

ভুলো-কালুকে আমরা মামা-ভাগ্নেই মেনে নিয়েছি। যদিও ভুলোর দিক দিয়ে সে সম্পর্ক ভুলো মানতে চাইত না। তবে কালুর কথা সে বিষয়ে বিশেষ জানি না। আসলে জলপাইগুড়িতে আমাদের বড় লোহার গেট কখনো খোলা পেলেই ভুলো বেরিয়ে যেত, আর কালু আমাদের গেটের কাছেই প্রায় সারাদিন আড্ডা মারত। ফলে, ভুলো বেরিয়েই দাঁত ক্ষিচিয়ে কালুকে তাড়া করত(মানে, এটা আমার ধারণা, কারণ আমি থাকলেতো আর বেরতে পারত না!)। আমি তখন ভুলোর খোঁজ়ে দৌড়াতাম। গন্তব্য মোটামুটি যানাই থাকত বা রাস্তায় কাউকে জিজ্ঞেস করলেই হত।
আমাদের বাড়ি থেকে আসামমোড় হাইওয়ে একদম কাছে। তবে সেটা কালুর এলাকা নয় তাই রক্ষে! সাধারণত কিছু দুরে একটা গলি ছিল, তার মধ্যে দিয়ে কিছুটা গেলেই ছোট শষ্যের ক্ষেত। সেখানেই দুটোকে পাওয়া যেত। আমাকে দেখেই কালু লেজ পায়ের ফাঁকে করে শুয়ে পড়ত। যদিও ভুলো মনে হয় তখনই বেশি তড়পাত! হা...হাঃ! আমি ভুলোকে কোলে নিয়ে আসতাম। তখনও তিনি গড়গড় করতেন!

ভুলো আসার আগের কিছু ঘটনা আমার মনে আছে। তখনও আমরা শিল্পসমিতি পাড়ায় থাকি। কিছুদিন আগেই পাপাকে বিলোটকাকুই(ওখানে রিক্সা খুব দরকার হতো, বিলোটকাকু আমাদের রিক্সা চালাত)বোধহয় দুটো কুকুরছানা দেয়। সারাদিন আমাদের পেছন পেছন ঘুরত। খুব বিস্কুট খেত। একটা ছিল কালো, উলের মত গোল। তখন খুব বৃষ্টি হচ্ছে! কালো বলটাকেই সবাই বেশি আদর করতাম। কিন্তু দু’দিন পরেই সেটা মরে গেল। তার চার-পাঁচ দিনের মাথায় খয়েরী রঙের অন্যটা। সদ্য কালোটা মারা গেছে বলে ওকে খুব যত্ন করা হচ্ছিল, কিন্তু এটা একটু দুর্বল আর ক্রিমিগ্রস্ত ছিল মনেহয়। এ মারা গেল রাতের দিকে। প্রচন্ড কষ্ট হয়েছিল। একে প্রথমদিকে অত ভালবাসি নি। কিন্তু মারা যেতে এর জন্যই বোধহয় বেশি কাঁদলাম!

এই ঘটনার কিছুদিন পরেই শুনলাম আসাম মোড়ের বাড়িতে একটা কুকুর আনা হয়েছে। আসাম মোড়ে আমাদের বাড়ির পাশে একটা ছেলে থাকত, একটু বেশি মাত্রায় হিরোগিরি করত, তবে পাড়ার মধ্যে নয়! সারাদিন খুব জোরে ইংলিশ গান শুনত। জ্যাঠিমা আবার লতার ভক্ত ছিলেন। জ্যাঠিমা একটু সফিসটিকেটেড ছিলেন।
তো, ছেলেটির কুকুর পোষার মনে হয় সখ ছিল। পরেও দেখেছি খুব সুন্দর দামী দামী কুকুর এনেছে। তুলিকে যেন আমি এখনো দেখতে পাই। গোল সাদা তুলোর বল! মেয়ে কুকুর, খুব আদিখ্যেতাও হত। কিন্তু বড় হতে সেটার লোম কেন যানি উঠে গেল! একটু ঘা মতও হল। প্রথমে ওকে ওরা বাড়ি থেকে বার করে দিল। আমি তুলিকে রুটি নিয়ে কত ডাকলাম! এলো না। তারপর শুনলাম ওদের ভাড়াটে নাকি দড়ি বেঁধে অনেকদুর ছেরে এসেছে!

এই ছেলেটি হোলিচাইল্ডের কোন নানের কাছ থেকে ছোট্ট ভুলোকে কোলে করে বাড়ি নিয়ে এসেছিল। দেশি কুকুর বলে তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। ছেলেটি মুখ চুন করে বাইরে বসেছিল। তখন ভুলোকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে নেওয়া হল।

ভুলোর প্রথমদিনের কথা আমার এখনও মনে আছে। আসাম মোড়ের বাড়ি গেছি। পেছনে তখন বোধ হয় মুরগীর পোলট্রি। একটা যায়গায় পাটকাঠি দিয়ে কোন কারণে ঘেরা। তার মধ্যে একটা খয়রী ছোট্ট কুকুর। কিন্তু খুব তার রাগ! ছোট্ট ছোট্ট দাঁত দিয়ে পাটকাঠি ভাঙ্গার চেষ্টা করছে, আর উল্টে উল্টে পরছে। দেখে হাসি পেল। কিন্তু তবু পাত্তা দিইনি। কারণ তখনো সেই ওই দুটোর শোক হয়ত ছিল। তারপর মাঝে মাঝে ভুলোকে শিল্পসমিতির বাড়িতেও আনা হত। শুভদেরও তার কিছু আগে একটা কালো দেশি মেয়ে কুকুর এনেছে। ভুলো এলে ওরা খেলতো। তাই দেখে পাড়ার আরেকটা ছোট ছেলে তাদের বাড়ির পেল্লাই একটা কুকুর নিয়ে আসত। বাড়ির পিছনে উঠোনে ওরা খেলত। এই করে করে ভুলোর সাথে বন্ধুত্ব হল। তখন ভুলো আমায় তেলও মারত। পেছন পেছন লেজ নেরে নেরে খুব ঘুরত। যানত না পরে কি কপালে আছে।

এরপর বাপ্পা হোস্টেল গেল আর আমরা আসাম মোড়ের বাড়িতে চলে এলাম। তখন থেকে ভুলো হল আমার বন্ধু। আমরা যা খেতাম, ও-ও তাই খেত। মুখের খুব টেস্ট হল। একটু এদিক ওদিক হলে খেত না। আমি খাবার নিয়ে ওর সাথে ঘুরতাম। ও দৌড়াত। আবার ভাল খাবার হলে পেট ঠুঁসে খেত। আমার খুব মনে আছে একটু বড় হয়েছে ভুলো। আমি মজা করে এই বড় বড় সাইজের ভাতের গোল্লা পাকাতাম। ওর মনের মত হলে ও অমন তিনখানা গোল্লা খেয়ে নিত। তারপর পেটের দু’দিকটা অদ্ভূত রকম ফুলিয়ে তিনি টুক টুক করে বাগানে নেমে যেতেন!

তখনও ভুলোর এক বছর হয় নি! আমাদের আসাম মোড়ের বাড়ির চারপাশে ঝোপঝার ছিল। খুব বড় বড় মেঠো ইদুর, ছুঁচো, এমনকি ঢোরা সাপ, ব্যাঙ সব চলে আসত। ভুলো তাদের শাসন করত। একদিন একটা ছুঁচো দিল মুখের সামনেটা কামড়ে! ভুলোর মুখটা ভামের মত ফুলে গেল। নেতিয়ে পরল! এমনিতেই সব সময় ওর হাত–পা কাটত। সারা জীবন খুব ভুগেছে!
তো, সেবার সবাই ধরেই নিলাম ভুলো মারা যাবে। পাঁচ-ছয়দিন ওমন মুখ ফোলা, নেতিয়ে পরে ছিল। একটা বেতের চেয়ারে বিছানা করে শোয়ান হল। পাউরুটিকে জলে ভিজিয়ে ছোট্ট হোমিওপাতিকের গুলির মত খাওয়াতাম। হাঁ করতে পারত না। ড্রপারে জল খেত। কিন্তু ভুলো সেবার বেঁচে গেল। ভুলো পনেরো বছর আমাদের সাথে ছিল।

এসময় হোলিচাইল্ড স্কুলের উল্টোদিকে একদম ভুলোর মত দেখতে কিন্তু একটু বড় একটা মেয়ে কুকুর পাঁচটা ছানা দিল। খুব সুন্দর দেখতে তাদের! সব ক’টা কালো। ক’টাকে লোকে নিয়ে গেল। শেষে দু’টি রইল। মা-কুকুরটা আমরা বেরলেই পেছন পেছন নেজ নেরে আসত। তো, ওকে আমরা খেতে দিতাম। যে দু’টো রইল তারা একটু চলার মত হতেই মাটা দুই সন্তানকে নিয়ে আমাদের বাড়ির গেটে চলে আসত ঠিক ভুলোর খাবার সময়গুলো। ভুলোর থালায় যা থাকত গেটের তলা দিয়ে চালান করে দিতাম।
বাচ্চাগুলো একটু বড় হতে মাটা আর আসত না। তখন দু’টির মধ্যে যেটি একটু বড় সে প্রায় সব খেয়ে নিত। আর অন্যটা ভেবলার মত দুরে বসে থাকত। ধিরে ধিরে ভ্যাবলাটার জন্য মায়া হতে লাগল। বড়টাকে সরিয়ে দিতাম। আস্তে আস্তে সেই ভেবলা, ওরফে আমার কালু বেশ গুন্ডা হয়ে গেল। আর বড়টাকে খেতেই দিত না। সেটা ওরই দিদি ছিল। আমাকেও বেশ ভয় পেতে লাগল। শেষে আর আসত না। কেমন যেন খারাপ লাগত। পরে দুরে দুরে অনেকবার দেখেছি। মুখটা দুঃখি দুঃখি লাগল। আলাদা মাঝে মাঝে খাওয়াতামও! শেষে বেশ বড় হল। দু’একবার বাচ্চাও হল। তারপর আর দেখতাম না। খোঁজ নিয়ে যানলাম গাড়ি এ্যাকসিডেন্টে মারা গেছে। তারপর থেকে কালু বিশেষ ধরনের কিছু গাড়ি রাস্তায় দেখলেই চ্যাঁচামেচি করে তাড়া করত।

এবার আমার কালুর কথা বলি। খুব দুষ্টূ! সব সময় মনের ভেতর কি যে আনন্দ নিয়ে ঘুরত! আমাদের দেখলেই এমন জোরে জোরে লেজ নেরে চারপাশে ঘুরবে যে পা-ই নারতে পারবেনা! পাপা ভোরে বা রাতের দিকে পায়েচারি করতে বেরলে, সামনে সামনে কালু ঘাড় উঁচু করে হাটত। কি ডাঁট! কোন মেয়ে কুকুরের দিকেও তাকাত না। হাঃ...হাঃ!

কালুর গা-টা ছিল চকচকে কালো। মনে হবে কেউ যেন বার্নিস করে দিয়েছে! কালু-ভুলো সব ওদিকের কুকুরেরই লেজ বেশ থোপা-থোপা আর লোম এখানকার দেশি কুকুরের তুলনায় বেশ বড় বড়। কালুর মুখের সামনেটা আবার সাদা। কান দুটো ছিল লটকানো মত। চারপায়ে যেন কেউ সাদা মোজা পরিয়ে দিয়েছে। আর লেজের শেষ দিকটাও অনেকটা দুধ সাদা। এক কথায় আমার কালু ছিল পাড়ার ডন-হিরো! আবার কপালে এই বড় সাদা তিলকও ছিল! এটা একটু ভুলোরও ছিল। তাই-ই পাপা ভুলোকে আদিখ্যেতা করে রাজপুত্র ডাকত!

কালু যখন বেশ ছোট, মার পিছে পিছে ঘোরে তখন পাপাকে অনেক বলে–ক’য়ে কালুকে গেটের এপারে নিয়ে এলাম। ভুলো খুব রাগ দেখালো। ওকে অন্য ঘরে আটকে রাখলাম। কালুর গায়ে ওসুধ দিলাম। চান করানো হল। পেট ভরে মাংস-ভাতও খেল। প্রথমদিন প্রচন্ড আনন্দে আমাদের সারা বাড়ি নেচে বেরাল। তারপরদিনই কি একটা পরাধিনতার গন্ধ হয়ত পেল। বড় গেটের ওপারে মাকে দেখে ঘাবড়ে থুম মেরে বসে রইল। মাও একটু কুই-কুই করল। সেদিন কালু বুঝল ও আর ওপারে যেতে পারবে না। মনমরা রইল। আমারও কেমন যেন লাগল। বিকেলে মাটা আবার এলো কালুকে আমি গেটের বাইরে ছেরে দিলাম। পাশেই বড় মাঠ। মা-আর ছেলে দৌড়ে সেখানে চলে গেল। আর কি আনন্দে নাচা-নাচি! হুটো-পুটি! এই হল বন্ধন মুক্তি! মা-ছেলের আনন্দ দেখে আমার ও খুব ভাল লাগল।
ওই মাঠটাতে লোকে গরু-ছাগল বেঁধে চরাতে রেখে যেত। কালু তাদের সাথেও খেলত। যারা খেলতে চাইত না, তাদের পায়ে কুট-কুট করে কামড়ে দিত।

তবে কালু ভুলোকে খুব সন্মান করত! ভুলোর সামনে কখন লেজ সোজা বা কান খাঁড়া করে আসত না। আমাদের তখন ছাদটা হয়েগেছে। তবে বরাবর নেড়া ছাদ ছিল। প্রথমেতো ভুলোকে ঠেলে ঠেলে ছাদে ওঠানো হল! তারপর সেটাই হল তার রাজত্ব। সামনে দিকে একটু নিচু কার্নিসে তিনি হেলান দিয়ে বসে পুর রাজত্ব চালাতেন। ওখানে সব একতলা বাড়ি। পাশাপাশি মাত্র দুটো বাড়ি। তার পাশেই বড় মাঠ। বাড়ির সামনে দিয়ে চওড়া রাস্তাটা চলে গেছে। ওদিকে খুব বেশি লোকজন যাতাযাত করত না। সারাদিন ছাদে বসে কালুকে নইলে পাশের বাড়ির কুকুরটাকে, নাহয় পাশের মাঠের জীবজন্তুগুলোকে ধমকাতো। ও উপরে বসে নিচে মাটির সবাইকে বকত। পাশের বাড়িগুলোর ছাদে কেউ উঠত না। আমাদের বাড়ি লোকে চিনতো অ্যালসেসিয়ানদের বাড়ি নামে। আমার বন্ধুরাও ভুলোকে অ্যালসেসিয়ান ভাবত। খুব গাট্টা-গোট্টা ছিল। আর মুখটা অসম্ভব গম্ভীর, জ্ঞানী জ্ঞানী। সাকুল্যে একবারই কাজের মাসির পাগলী মেয়েকে ভাল রকম কামড়ায়, যখন সে নাচানাচি করছিল। ওঃ না! আর একজনকেও কামড়ায়, সে কথা পরে; সে কথা তেমন কেউ যানে না আমি আর পাপা ছারা।

ভুলো সারা বাড়ি পাহারা দিত। আর আমার সারাদিনের যেহেতু সঙ্গী! তাই আমি ওকে প্রচুর ব্যায়াম করাতাম। ধর একটা মাংসের হাড় মাটিতে শক্ত করে পুঁতে দিলাম। ভুলো পুর বাগান খুঁড়ে দিত সেটার জন্য। আমার তাতে বেশ লাভ হত। বাপ্পা এলে হাত উচূ করে দাড়াত আর ও অনেক দূর থেকে প্রচন্ড বেগে দৌড়ে এসে হাতটা ডেঙাতো। বাপ্পার কিছু কিছু খেলা দেখে আমার ভয় লাগল। কিন্তু ভুলো সে সব খেলতে আবার খুব ভালবাসতো। যেমন একটা খুব মোটা শক্ত দড়ির সামনে বড় গিট বেধে তাতে মাংস বা হাড় আটকে দিল। ভুলো সেটা ঝাঁপিয়ে পরে নিত। বাপ্পা তখন দড়িটাকে বনবন করে ঘোরাত। বলতে নেই ভুলোটা বেশ ভারি ছিল। শেষ দিকে যদিও একটু রোগা হয়ে গেছিল।

কিছুতেই চান করতে চাইত না। ওকে চান করান একটা যুদ্ধ ছিল। একবার টিউবকলে বেঁধে বাপ্পা চান করাতে গেল। আমি যখন ব্যাপারটা দেখতে গেলাম, তখন দুজনেই কাদা মেখে হাফাচ্ছে। বাপ্পারও জ়েদ চেপে গেল চান আজ ওকে করিয়েই ছারবে! সেই করতে গিয়ে হাত-পা ছরে একেক্কার কান্ড। আমি তাই কখনও ভুলোকে অন্য কারোর হাতে ছারতাম না। চানের সময় ভুলো আমায় খুব ভয় পেত। আমিও মনে মনে ওকে ভয় পেতাম, কিন্তু বুঝতে দিতাম না। খুব চ্যাঁচিয়ে চ্যাঁচিয়ে বকেই যেতাম। ও কান পেছনে করে ভয়ে কাঠ হয়ে বসে থাকত। বুড়ো হওয়ার পর মাঝে মাঝে গড়গড় করত।

ভুলোকে ভ্যাক্সিনের জন্য প্রতি বছর টাউনে পশুহাসপাতালে রিক্সায় করে নিয়ে যেতাম। ওর একটা মোটা প্রেসকিপসনের ফোলডারই হয়ে গেছিল। সারা বছর কিছু না কিছু হতেই থাকত। ডাক্তার টনিক ট্যাবলেট সব লিখে দিত। আমিও সব খাওয়াতাম। শেষে একজন মনেহয় ডাক্তার নয়, আমাদের বাড়ি এলো। দেখে-শুনে বল্ল সব ডাক্তার ওর উপর এক্সপেরিমেন্ট করে গেছে। আসলে ভুলোর ক্রীমির লক্ষণ ছিল। উনি বল্লেন বাড়িতে শিউলি, নিম গাছ আছে তার পাতা বেটে খাওয়াতে। একদিন ছেড়ে ছেড়ে ওকে তাই খাওয়াতাম। সব কিছু একটু টেস্ট করে খাওয়ান আমার স্বভাব। একদিন নিমপাতা বাটা একটু খেয়েই আমার কান দিয়ে ধোঁয়া বেরনোর জোগার। আহা ব্যাচারা ভুলো কিন্তু সব খেত, মানে খেতে বাধ্য করতাম।

জলপাইগুড়িতে কালীপূজোয় আমরা সোয়েটার পড়ে ঠাকুর দেখতে যেতাম। ঠান্ডা ওখানে তা’তাড়ি পরে যেত। তার উপর আসাম মোড়টা লোকবসতিপূর্ণ না হওয়ায় ঠান্ডা আরো জেঁকে পড়ত। একদিন দেখি বাপ্পা খুব জোরে সাইকেল চালিয়ে এসেই কিছু না বলে পাই পাই করে ছাদে দৌড়েছে। ‘কি হল, কি হল’ করে পেছন পেছন যেতেই দেখি ভুলোকে পাঁজাকোলা করে সিড়ি দিয়ে নেমে আসছে। সকালে রোদ উঠলে ভুলো উপরে চলে যেত। আমরা দিনে উপরে তেমন যেতামই না। তো, এত ঠান্ডা পরেছে! ভুলো বোধহয় কার্নিসে দাড়িয়ে টলছিল। বাপ্পা দুর থেকে দেখে দৌড়ে এসে নামালো। নইলে নিচে পরে সেদিনই ভুলো শেষ হয়ে যেত।
আমরা যেখানে থাকতাম সেখানে কিছুই তেমন পাওয়া যেতনা। টাউনে আসতে হত। কি করা যায়! ভুলোর দাঁতে দাঁতে লেগে গেছে! বাপ্পা একজন মানুষের ডাক্তারকেই ধরে আনল। তিনি কিন্তু ভাল ছিলেন। এসে ওকে দেখেই গরম দুধ খাওয়াতে বল্লেন। দু’তিনটে কম্বল চাপানো হল। উনি কি একটা ইঞ্জেকসনও ভুলোকে দিয়ে দিলেন। এখন ভেবে একটু অবাক হচ্ছি।
ভুলো কিন্তু খুব ঠান্ডায় আমাদের সোয়েটার পরেই ঘুরে বেরাত! শোয়ার জন্য বিভিন্ন যায়গায় গদি, বিছানা করে রাখলেও পছন্দ ছিল আমার, নয়ত বাপ্পার খাট। বাপ্পার খাট ঘাটা থাকত। তাই আমার ঘরে নিজেই খাটে উঠে শুয়ে থাকত। পাপা দেখলে বকতো তাতে একটু বিরক্ত হয়ে নেমে আসত।

যখন আমি গলা সাধতাম, তখন ভুলো অনেক ধৈর্য নিয়ে চুপ করে বসে তা শুনতো। ভুলোর আনন্দ হলে আবার মাঝে মাঝে আমার সাথে গলা মেলাবার চেষ্টাও করত। কিন্তু আমি আবার তা সহ্য করতাম না! হাঃ...হাঃ!

পাপা অফিস থেকে এলে ঢাউস কালো ছাতাটা ভুলো মুখে করে বেঁকে বেঁকে দৌড়ে ঘরে নিয়ে যেত। সকালের কাগজ কোন ভাবে ওর নাগালে এলে কুটি কুটি করে ছারত। চা খাওয়ার সময় বিস্কুটের জন্য হেঙ্গলামো করত। এটা এখন আমার পেঁচি মানে কোকিলা-সুন্দরী করেন। মাসি বিকেলে চা বল্লেই ইনি ক্যা-ক্যা করে দু’ডানা থরথর করে আদিখ্যেতের ডাক ডাকবেন!

মাধ্যমিক পর্যন্ত ভুলো ছারা তেমন কোন বন্ধু ছিলনা, স্কুলে ছারা। ইলেভেন থেকে বাইরে টুকটাক যাওয়া শুরু করলাম। ভুলোকেও অত সময় দিতাম না। ওর নখ বারতে লাগল। এবার নখ কাটার লোক আসত। সেদিনগুলো খুব ভয়ের ছিল। প্রতিবার খুব ব্লিডিং হত। কিন্তু কলকাতায় দেখেছি অন্য ধরনের কাঁচি ব্যাবহার করে ওতে অত ব্লিডিং হতনা।

আমরা যখন কলকাতায় আসবো তখন ভুলোকে কি করে আনা হবে তাই নিয়ে বড় বড় মিটিং হয়ে যেত। শেষে পাপা বড় পাঞ্জাবী ট্রাকে দু’জন সিকিউরিটির সাথে ভুলোকে কলকাতায় পাঠালো, যদিও সঙ্গে কিছু মালপত্রও ছিল।

কলকাতায় ওর জন্য একটা ছোট বাগান মত করা হয়। সেখানে ও টয়লেট করত। কখনও ঘরে করত না। শেষদিকে যখন আর দাঁড়ানোরও ক্ষমতা নেই তখনও বাগানে আসা চাই! আমি কোলে করে এনে ধরে থাকতাম।
ভুলো দেখতে রাগী হলেও খুব শান্ত প্রকৃতির ছিল। আমাদের জলপাইগুড়ির বাড়িতে সব সময় অনেক কাজের লোক থাকত। কে পেছনে কি করছে দেখা সম্ভব ছিল না। তবে জীবজন্তু হয়ত সব মনে রাখে। একটা ছেলেকে পাপা সিউড়ি থেকে এনেছিল। খুব চুপচাপ থাকত কিন্তু ভুলোর উপর একটু অত্যাচার করত। পাপা প্রথম দেখেই বারন করে, কিন্তু ছেলেটা কি করত কে যানে! ওকে দেখলেই ভুলো অদ্ভূত অন্য রকম গর্জাত। আমরা দু’জনকেই বকতাম। এবার ছেলেটা পাপার সাথে সিউড়ি চলে যাবে। আমারা খাওয়া দাওয়া করে রাতে বারান্দায় বসে কথা বলছি। মাটিতে ভুলো আর কিছু দুরে ছেলেটা বসে। আচমকা লোডসেডিং হল। তার ভেতরই কথা চলছে হঠাৎ ভুলো কোকিয়ে উঠে গর্জে ছেলেটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। ছেলেটাও অসম্ভব সাহসী চুপ করে বসে রইল। পরে দেখা গেল মাথাটা খুবলে খুবলে কামড়েছে। দেখে আমার রক্ত হিম হয়ে গেছিল। এরপরে আর কোনদিন ভুলোরর ওই রূপ দেখা যায়নি।

কলকাতায় আসার পর সবাই একবার পুরী যাবো ঠিক হল। ভুলোকে বেহালার একটা ক্রেসে রাখা হল। খুব ভাল সব ব্যাবস্থা! কিন্তু এসে শুনলাম খুব রাগ দেখাত। আর থালাটাও কামড়ে বারটা বাজিয়ে দিয়েছে। তারপর আর ওকে রেখে সবাই কখনও কোথাও যাইনি।

আমাকেও একবার কুকুরে কামড়ায় এখনও হাতে ন’টা দাগের হালকা চিহ্ন আছে। তবে ভুলো নয়, এটা জিমির স্মৃতি। আমরা খুব ছোট থেকে কলকাতার বাড়িতে ওকে দেখছি। চাচা ওকে দেখভাল করত। চাচা আমাদের বাড়ি কাজ করত। অদ্ভূত লোক ছিল! জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সব করত। চাচার ছবি দেব। চাচা একবার দাদুর মারের হাত থেকে আমায় বাঁচায়। জিমি সিড়িতে এমনি শুত। সবার খাওয়ার পর এটোকাটা খেত। ঘরে ঢুকত না। দাদুর তৈরী কুকুর। আমরা ছোটতে প্রতি বছর কলকাতা ঘুরতে আসতাম। তখন ক’বছর আসা হয়নি। আর জলপাইগুড়িতে ভুলোর সাথে থেকে থেকে আমার ধারণা হয় ওদের হাতে করে খাওয়াতে হয়। কারন কালুও কোনদিন আমায় কামড়ায়নি। তো আমরা পরদিন ভোরের ট্রেনে জলপাইগুড়ি ফিরবো। দিদা রাতে খাওয়া হয়ে যেতে দুটো রুটি দিয়ে বল্লো জিমিকে দিয়ে দিতে। শুধু রূটি! আমার কষ্ট হল। তবু তাই নিয়ে সিড়ির কাছে গিয়ে ওকে ডাকলাম। জিমি তখন খুব বুড়িও হয়েগেছে। চোখ ঘোলাটে, পায়ে বড় বড় নখ নিয়ে খুট খুট করে হাটে! মায়া হল রুটি ছিরে হাতে করে খাওয়াতে গেলাম। জিমি উল্টো বুঝল। কোনদিন ওভাবে হয়ত কেউ খাওয়ায় নি! আমার হাতেই কামড় বসালো। দেখে দাদুই প্রথম কাগজ পাকিয়ে জিমিকে তেরে গেল। আমিই বারণ করলাম। কারণ দোষটা আমার ছিল। জিমি ততক্ষনে ভয়ে জড়সড় হয়ে সিড়িতে বসে। আমার হাত দিয়ে দরদর করে রক্ত পরছে। তখন পূজোর সময়। কিছু করা গেলনা। ভোরে ট্রেনে উঠে রাতে শিলিগূড়ি পৌছলাম। সেদিন বোধহয় অস্টমী ছিল। জলপাইগুড়ি ফেরার গাড়িও পেলাম না। একটা হোটেলে যে করে হোক কাটান হল। হাত রুমালে বাঁধা, ফুলে ঢোল। পাপাকে এমনিই দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছিল, ব্যাথার কথা বলে আর টেনসনে ফেললাম না। পরদিন বিকেলে জলপাইগুড়ি পৌছে ডাক্তারের কাছে যাওয়া হল। চব্বিশ ঘন্টা হয়েগেছে বলে উনি খুব রাগ করলেন। কিন্তু জিমি তারপরও অনেক দিন ছিল।

দাদু জিমিকে কাগজ পাকিয়ে ভয় দেখাত। একবার মনে আছে দাদু জলপাইগুড়ি গেছে। দাদু বেশ রাগী আর গম্ভীর প্রকৃতির রাশভারী মানুষ ছিলেন। তো, ভুলো তখন যা পাচ্ছে তাই চেবাচ্ছে। এঘর-ওঘর লন্ডভন্ড করছে। দিদা একদিন জিমির মত খেতে দিল, শুঁকেও দেখল না। দাদু ওর উপর খুব রেগে গেল! কাগজ পাকিয়ে বকতে গেল, ভুলো ভাবলো দাদু বুঝি ধরাধরি খেলতে চাইছে। দাদুও শাসন করবেই! এবার ভুলো এঘর–ওঘর ছোটে, দাদুও পিছন পিছন যায়। আমিতো দাদুকে খুব ভয় পেতাম! ভুলোর কান্ড দেখে থ! দাদুও বুঝল এ জিমি নয়! হুম্‌! করে গিয়ে বারান্দার ইজিচেইয়ারে গা এলিয়ে দিল। ভুলোও লক্ষী ছেলের মত দাদুরই পায়ের কাছে শুয়ে পরল। দাদু শুধু একবার আড়চোখে ওকে দেখে নিল।

এখানে আসার পর প্রতিদিনই প্রায় চারতলায় ছাদে ঘুরতে নিয়ে যেতাম। এখানেও একদিন সদর দরজা খোলা পেয়ে কাট্টি মারেন। আমি ভাবছি কোথায় খুঁজবো! চারদিকেই পথ! ওমা! উনি নিজেই দেখি গুটি গুটি ফিরছেন!

শেষের দিকে বাপ্পা কোলে করে ছাদে দিয়ে আসত। কেমন উদাস হয়ে গেছিল। একদিন খুড়তুতো বোন দেখে খাটে পাশে হেলান দিয়ে ভুলো শুয়ে, একদম পাশেই কয়েল জ্বলছে, ডেকে দিল আড়চোখে ব্যাপারটা দেখেও সরল না। আমি এসে সরিয়ে দিলাম।

শেষ দিনগুলোর কথাও মনে আছে। শেষে আর মাথাও তুলতে পারে না। খাইয়ে দিলে খায়। দুদিন কিচ্ছু খেল না। মাথার কাছে বসে থাকতাম। একদিন একটা ডেয়ো পিঁপড়ে দেখি চোখের পাতায় বসে। আস্তে করে ছারিয়ে দিলাম। অদ্ভূত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। খুব কষ্ট হত। আমি না থাকলে কুই কুই করে কেঁদেই যেত। বাপ্পা আমাকে বেরতে বারণ করল।

শেষে একদিন সকালের দিকে ভুলো চলে গেল। আমাদের কত্তদিনের সঙ্গী! তখন পাপা অফিস যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। পাপা বেরিয়ে গেল। প্রায় দু’ঘণ্টা পর একটা পশু-সমাধিক্ষেত্রের গাড়ি, ফুলের রিং এসব নিয়ে এলো। পাপা অল্পতেই একটু নার্ভাস হয়ে যেত। কিন্তু পাপা সেদিন খুব শান্ত ভাবে সব পরপর করে গেল। আমি যে কি কৃতজ্ঞ সে দিনটার জন্য!
তার ক’দিন আগেই কাকুদের সাদা কুকুরটা মারা গেল হঠাৎ। বোনকে আর পাওয়া যায় না! বন্ধুদের বাড়ি খোঁজ খোঁজ! কাকু কুকুরটাকে একজন রিক্সাওলাকে দিয়ে কোথায় পাঠিয়ে দিল। পিসিরাও তাই করে।
পাপা! আমার পাপা! পাপা যানত ভুলো আমাদের পরিবারেরই সদস্য। পনেরো বছর! আমার জীবনের খুব খুব সুন্দর অনেকগুলো সময়ের স্মৃতিতে ভুলো-কালু জ্বলজ্বল করে। পাপা-আমি সেই ছোট্ট গাড়িতে করে শহর ছারিয়ে অনেক দূরে ভুলোকে রাখতে গেলাম।

যেখানে গেলাম সেখানে গিয়ে মনটা শান্ত হল। চার দিকে কত্ত কুকুর, কত্ত বেড়াল! যদিও বিড়ালগুলো বিশাল জালে ঘেরা স্থানে ছিল। একটা বুড়ো, অন্ধ বিশাল বাঁদর, পাখি -কতকিছু ছিল সেখানে। পাপা অফিসে কাজ করছিল। আমায় ঘিরে দশ-কুড়িটা কুকুর বসে-দাড়িয়ে যেন সঙ্গ দিচ্ছিল। বেশ খানিক্ষণ থাকতে হয়েছিল। ওদের সবার জন্য রান্না হচ্ছে দেখতে গেলাম।

তারপর পাপা ডাকল। সকাল থেকে আমি একটুও কাঁদিনি, কারণ ভুলো শান্তি পেল যানতাম। আমার ভাই-বোনরা আমায় দেখে অবাক হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহুর্তে যখন অনুভব করলাম আর কোনদিন ভুলোকে দেখতে পাব না, তখন হয়ত ভেঙ্গে পরি। পাপা তুলে আনল। আমরা ফিরলাম। কতো কষ্ট করে ফিরলাম। একটূ জায়গায় তিনজন মানুষ(ড্রাইভার নিয়ে) প্রায় চারঘণ্টা ঠায় বসে! পাপার সব চেয়ে কষ্ট হয়েছিল। তখন বুঝলাম পাপা আসলে কে! পাপা আমায় কি ভাবে চেনে! সেদিন পাপা ভুলোর জন্য আর আমার জন্যেও ওত কষ্ট করেছিল।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৫৯
৬৪টি মন্তব্য ৬৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরাধের সেকাল ও একাল

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

সেকাল
--------------------------------------------------------
স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা হেনরি বেভারিজ ছিলেন বৃটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের একজন সদস্য৷বেভারিজ ১৮৭০ সালের মার্চ হতে ১৮৭১ সালের মার্চ এবং ১৮৭১ সালের জুন থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×