somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ছোটবেলা ২

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার ছোটবেলা ১


নতুন বাসায় আমার , আম্মু আর ভাইয়ার সাথে নানু আর বড় মামাও আসল । আম্মু অফিসে যায় , সারাদিন আমি নানুর কাছেই থাকি । আমরা যখন নতুন বাসায় আসলাম এইখানে আমার বয়সএর অনেক পিচ্চি খুঁজে পাইলাম :) । কিন্তু তাও আমার সারাদিন করার কিছু ছিল না সারাদিন সাজুগুজু করে আয়নার সামনে দাড়ায়ে খেলতাম আর নিজে নিজে কথা বলতাম :P । একদিন নানু আমাকে কাজের মেয়ের কাছে রেখে বাজারে গেসে এসে দেখে আমি সারা মুখ নেলপলিশ দিয়ে ভরায়ে ফেলসি :P , নানুরতো এটা দেখে মাথা পুরা গরম :| । বাসায় রিমুভার ছিলনা , আবার বাজারে গিয়া রিমুভার এনে আমাকে পরিস্কার করল ।
আমি বাসায় থেকে সারাদিন এসব উলটা পাল্টা কাজ করতাম , তাই আম্মু ঠিক করল আমাকে স্কুলে ভর্তি করায়ে দিবে । আমার তখন ৪ বছরও হয়নাই। তাও আমাকে আর আমার পাশের বাসার ফ্রেন্ড আদনানকে আম্মু আর আন্টি নিয়া গেল উদয়ন এর ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য । তখন এখনকার মতন এত ঝামেলা ওয়ালা পরীক্ষা ছিল না । আমাকে শুধু আমার নাম আমার আব্বুর নাম আর বাসার ঠিকানা জিজ্ঞাস করল আর একটা কি যেন ছড়া শুনাইলাম আর ছবি দেখায়ে দেখায়ে কিসের যেন নাম বলত বলল আমি আমার মাথার তালগাছ নাড়ায়ে নাড়ায়ে উত্তর দিলাম (আম্মু তখন আমার মাথার উপরে তালগাছ ঝুটি বানাইয়া দিত ) । তারপর যেদিন রেজাল্ট দিল ঐদিন দেখলাম আমিতো টিকসি কিন্তু আমার বন্ধুটা টিকে নাই /:) । শুরু হইল আমার প্রথম স্কুল জীবন নার্সারিতে ।

স্কুলে যাওয়া নিয়া আমার একটাই অভিযোগ ছিল প্রতিদিন সকালে আম্মু আমাকে স্কুলে নিয়া যাইত আর সবার আব্বু আসত নিয়া । আমি রোজই ঘ্যান ঘ্যান করতাম এটা নিয়া ,সবার আব্বু আসে আমাকে তুমি কেন নিয়া আসো X(? আমার বান্ধবীর আব্বু আমাকে অনেক আদর করতেন উনি ওকে কোলে না নিয়া আমাকে কোলে নিয়া ঘুরতেন যাতে আমি মন খারাপ না করি ।আমাকে ছুটির সময় নানু নিতে আসত আর নানুর একটু দেরী হইলেই শুরু হয়ে যাইত আমার কান্নাকাটি :((। আমাদের একজন ম্যাডাম ছিল উনি আমাকে খুব আদর করত ,নানু যতক্ষন না আসত আমাকে নিজের কাছে রাখতেন , আমি বলে কেঁদে কেঁদে ওনাকে বলতাম আমার নানু মনে হয় আমাকে আর নিতে আসবে না :P
এর কিছু দিন পরেই ভাইয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ছেড়ে এই স্কুলে বাংলা মিডিয়াম এ ভর্তি হইল । তখনতো আমার অনেক মজা :D । আমার ক্লাস শেষ হইলেই আমি ভাইয়ার ক্লাসে গিয়া বসে থাকতাম ও আর ওর বন্ধুর মাঝখানে :P । পরে একসাথে নানু আমাদের ২ জনকে নিয়া আসত বাসায় ।
এর কিছুদিন পর আমার একটা মামাতো বোন হইল , আমার খালাতো ভাইবোনরা সবাই তখন বিদেশে । মামী প্রায়ই ওকে নিয়া আমাদের বাসায় চলে আসত , একদিন আমি স্কুল থেকে এসে দেখি মামী ওকে নিয়া আসছে আর আমাদের জন্য রাইস রান্না করে আনসে। আমাকে রাইস খেতে দিয়ে ওকে বিছানায় রেখে মামী নানুর সাথে মনে হয় পাশের রুম এ কথা বলতেসে । আমি খাইতেসি আর দেখি ও আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকায়ে আসে ।ও তখন অনেক ছোট সলিড খাওয়া তখনও খায় না ।আমার মনে হইসে ওর মনে হয় খাইতে ইচ্ছা হইতেসে তাই ও আমার দিকে তাকায়ে আসে :P , আমি রাইস নিয়া ওর মুখে ঢুকায়ে দিলাম । আরতো ওর নাকে মুখে উঠে শেষ /:) । মামী আর নানু এসে তারপর ওকে সামলাইল , আমি যে কি ভয় পাইসিলাম /:)

আমরা তখন পাড়ার সবাই একসাথে বাইরে খেলতাম বিকালে , কত রকম খেলা গোল্লাছুট , দাড়িয়াবান্ধা , মাংসচোর , এলন্ডিলন্ডন ,আরো কত কিছু , এখনকার পোলাপাইনতো এইগুলার নামও জানেনা । আমি একটু গুন্ডা টাইপের ছিলাম । আমার যখন রাগ উঠ্ত আমি আমার ঐ বন্ধু আদনানকে এক ধাক্কা দিয়া ফালায়ে দিতাম , ও পুরা পাটকাঠীর মতন ছিল একটা ফুঁ দিলেই উড়ে যাইত :P ।আর ঘরের ভেতরতো আমি আর ভাই মিলা ক্রিকেট খেলতামই আর বাইরে ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলতাম । আমি আর ভাইয়া মিলে একদল আর বাকিরা একদল । আমি সবসময় গোলকিপার থাকতাম :P ।ভালই গোল ঠেকাইতাম :)

(চলবে)

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ৩:১৮
৫৯টি মন্তব্য ৫৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টে যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×