somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মামা !!!!!

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মামা -প্রতিদিনের সব চেয়ে বেশী ব্যবহৃত সব্দ গুলোর একটি হয়ে গেছে সেই কবে থেকে। অফিসের বস বাদে বাদবাকি সবাইরে মোটামুটি এই এক সম্বোধনেই সব কাজ সারা।

মামা একটা সিগারেট, মামা এক কাপ চা -ভাল কইরা বানাইয়েন , এই মামা যাবেন, মামা আলু কত, মামা..। মোটামুটি প্রয়োজনের সব যোগানদাতকে এক মামা ডাকেই সারা।

মাঝেমাঝে ভাবি আচ্ছা চাচা কেন বলা হয়না । মামাতে সম্ভবত এক ধরনের অযাচিত অধিকার বোধ কাজ করে, আব্দারটাও মনে হয় একটু বেশী খাটে- মামা পটল আজকে দুই টাকা কম রাখেন :)

কখন যে বাপেরে ভুল করে মামা বলে ফেলি এই ভয়ে থাকি। ছোট ভাই কম্পুর এজিপি কেবল লাগাতে না পারায় একবার বলে ফেলেছিলাম- মাম্মা এটা তোমারে দিয়া হইবোনা, সর আমি লাগাইয়া দিই । পাশের রুম থেকে আম্মু জানতে চাইল কিরে তোর মামা আসছে কখন :-*

প্রিয় মামাদের তালিকায় আছে ভার্সিটির ক্যান্টিন বয় (মামা একটা চা আর একটা বিড়ি লইয়া আস) , পাড়ার টং দোকানের চা ওয়ালা, অফিসের সামনের সিগারেট বিক্রেতা ..........................।

মামা শব্দটা যেন সবসময় জিহ্বার আগায় কিলবিল করে ।মাঝেমাঝে তৈরী করে বেগতিক দশার। শেরাটনে একটা পার্টি ডিনার শেষে চা পরিবেশন করছে ওয়েটার। ওনারা আবার দুধ চিনি আগে মিশাইয়া দেননা । যা দিছে তাতে তেমন একটা মিষ্টি না হওয়ায় এক বন্ধুতো সাজুগুজো করে থাকা ওয়েটাররে হাতের ইশারায় কাছে ডাকল, আসার পর বলে বলল- মামা চিনি কম হইছে, আরও দুইটা চিনির প্যাকেট নিয়া আসেন। এই সম্বোধনে অনভ্যস্ত ওয়েটার কিছুক্ষন তাকাইয়া থেকে (কিন্চিৎ অপমান ও ফিল করতে পারে) চিনি আনার জন্য হাঁটা ধরল। পাশের আরেক বন্ধু ওরে দিল ঝারি- এই শালা এইখানে ওয়েটাররে তুই মামা ডাকলি , ওতো ভাবব তুই জঙগল থেইকা আইসস। নির্বিকার বন্ধুর উত্তর অফিসের সামনে টং দোকানে দিনে পাঁচ বার কই মামা দুধ চিনি বাড়াইয়া দেন , আর এখানে কইলে সমস্যা। ও যা ভাববো ভাবুকগা ।

এই মামা ডাক নিয়া ব্যাপক ঝামেলা পাকাইছিলো আমার আসল বড় মামা। কোরবানীর আগে ছোট খালার বাড়ীতে ওনি খাসী নিয়া যাবেন।বহুত জোরাজুরি কইরা আমারে বাধ্য করলেন সাথে যাইতে হবে। গরু ছাগলের হাঁটে আমি ঢুকুমনা , ট্যাক্সীতে আপনে খাসী ধইরা বসে থাকবেন, আমি শুধু সাথে যামু, এই শর্তে রাজী থাকলে আছি। উপায় না পাইয়া তিনিও রাজী হইলেন। সত্যিসত্যি আমি হাঁটে না ঢুকে সামনের একটা চার দোকানে দাঁড়াইয়া গেলাম। অগত্যা তিনি একা গেলেন। আমি বসে বসে চা সিগারেট খাইলাম। চল্লিশ-পঞ্চাশ মিনিট পর ওনি এসে হাজির। নারে কোন সুবিধা করতে পারলমনা। চল চা খাই- চলেন।

দোকানে ব্যাপক ভীড় । বয় বেয়ারারা আমাদের দিকে তাকানোর ও টাইম পাইতাছেনা। আমি কয়েকবার বেয়ারাকে এই মামা এডিকে আহ, শুন- টাইপ হুঙ্কার দিলাম। তারা তাকায়ওনা দেখছি। আরও কয়েক দফা ট্রাই এর পর পর বড় মামা গেলেন ক্ষেপে । কি মামা মামা কইরা চিল্লায়তাছিস কতক্ষন ধরে। ও তোর মামা হইল কবে থেইকা ।

কটমট কইরা তিনি জোরে হাঁক দিলেন এক বেয়ারার দিকে তাকাইয়া- এই এদিকে শুন ! চা সিঙ্গারা নিয়া আই। বেয়ারা কথা এবার গায়ে লাগাল। অর্ডার নিতে আসল। মামা আমার দিকে তকাইয়া ভাবলেশহীন মুডে বলল আর কিছু খাবি নাকি।

বুঝলাম আসল মামার সামনে যারেতারে মামা ডাকাই তার খুব গায়ে লাগছে। আমি মনে মনে ভাবি তোমারে একবার ভার্সিটি নিয়া ছাইরা দিতে পারলে ভাল হইত, বুঝতা মামা ,মামা কত প্রকার ও কে কে ।
৩৮টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×