somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পঞ্চাশ তম পোষ্ট আর দু:খময় একটি দিন ...

২২ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পরশু রাতে ঘুমাতে যাবার আগে স্বভাবমতোই ব্লগে একবার ঢুঁ দেওয়া... "আপনার ব্লগ দেখুন" এই লিংকে ক্লিক করে নিজের পাতায় গিয়ে দেখি ঊনপঞ্চাশ পোষ্ট হয়ে গেছে... ঊনপঞ্চাশ পোষ্টের সাথে সাথে ছয়মাসও কখন যে কেটে গেলো খেয়ালও করি নাই.. ভাবতেই ভালো লাগছিলো, ডায়পার ব্লগার থেকে প্রমোশন পেয়ে হাফপ্যান্ট ব্লগারের ক্যাটাগরিতে উঠলাম, গর্বভরা বুকে ঘুমাতে যাবার সময় ভেবে রেখেছিলাম পরদিন সকালেই এক ফাঁকে দিয়ে দেবো হাফসেন্চুরী পোষ্ট...

পরদিন শুক্রবার, চার্জ চলে যাওয়ায় মোবাইলও ছিলো বন্ধ আর ঘুমটাও ভাঙ্গলো অনেক দেরীতে। চার্জে লাগিয়ে কিছুক্ষন পরে ফোন অন করতেই একটা এসএমএস, সবচেয়ে কাছের এক বন্ধুর ফোন থেকে, সেই ভোর ছয়টায় পাঠানো... ওর বাবা হাসপাতালের আইসিইউতে.. পড়েই চমকে উঠলাম। এইতো কদিন আগে চট্টগ্রামে উনার সাথে দেখা, কি উজ্জল হাসি -- এই এসএমএস টা তাহলে কিভাবে সম্ভব??? দেরী হয়ে গেছে, ঘড়িতে তখন এগারোটা, করলাম ফোন। রিং হতে হতেই বুঝলাম আরেকটা এসএমএস এসেছে, ওটা দেখা হলো না। বন্ধুকে বললাম কি অবস্থা এখন, ও শুধু বললো তুই কি আগের এসএমএসটা নিয়েই আছস, আব্বু তো আর নেই, এই তো গোসলের জন্য নিয়ে গেলো এই মাত্র... ব্রেইন স্ট্রোক, একটা মাত্র ঘন্টা টিকে ছিলেন, তারপর সব শেষ...

শেষ যেবার দেখা উনি বলছিলেন আংকেল নিজের তো পরের প্রজন্ম এসে গেলো, এবার বন্ধুর জন্য একটা মেয়ে টেয়ে দেখো... হাসতে হাসতে বলেছিলাম আংকেল আপনি যা ইয়াং হইছেন, ছেলের জন্য কি দেখবো ভাবতাছি আন্টিরে না জানায় আপনার জন্যই মেয়ে দেখবো... এমনটাই ছিলেন উনি, ছেলের বন্ধুদের সাথে বন্ধুর মতো আড্ডা দিতেন, কয়েক বছর আগে উনার যখন বাইপাস হলো আত্মীয় স্বজনদের থেকে আমাদের আগে ডেকেছিলেন। নিজের লোকজন যখন অনেক দূরে তখন মিগ৩৩ এ চ্যাট থেকে পরিচয় এমন একজন ছেলের বন্ধু যখন রক্ত দিতে সেই দূর থেকে হাসপাতালে এসে হাজির হয় তখন আমাদের এই ভার্চুয়াল সম্পর্কের প্রশংসায় উনাকে কি যে খুশি হতে দেখেছি... হয়তো আজকেও উনি খুশিই হবেন, উনার ছেলেকে একা রেখে যান নি, আমরা কাছের বন্ধুরা তো আছিই, ভার্চুয়াল বন্ধুরাও ছেড়ে যায়নি....

মনটা খারাপ, তাই ব্লগে ঢোকাই হয়নাই.. সন্ধার পরে ফেসবুকে বন্ধুর প্রোফাইলে আসা শোকবানী গুলো পড়তে গিয়ে এক বন্ধুর প্রোফাইল স্ট্যাটাসে দেখলাম নাহিদার চলে যাওয়ার কথা... তখনও বুঝিনাই কোন নাহিদা, এক বুক আশংকা নিয়ে ঢুকলাম সামহোয়ারইন এ, যা ভেবেছিলাম তাই। সবার মায়া ছিন্ন করে ছোট্ট বোনটা চলেই গেলো...ইস বিধাতা মাঝে মাঝে এতো নির্মম কেনো যে হয় :(

পঞ্চাশ তম পোষ্ট লিখতে বসে একগাদা দু:খের কথা বলে বসলাম। কি করবো দিনটাই যে এমন কেটে গেলো। সবসময় মজার পোষ্ট লিখতে ইচ্ছা করে, সিরিয়াস হতে ভালো লাগেনা একটুও... আজকে কেনো জানি ইচ্ছা হচ্ছে না, মন খারাপটা শেয়ার করতে ভালো লাগছে...

ব্লগে আসা রাগিব ভাই এর একটা পোষ্টের লিংক ধরে, নিকের বয়েস ছয়মাস হলে কি হবে পড়ার বয়েস কিন্তু অনেক বেশী..রাগিব ভাই, নুশেরা আপু, সাইফাই সিজার, শান্তির দেবদূত, স্বপ্নজয় এদের লেখা থেকে যত অনুপ্রেরণা... সবসময় সাথে থাকে প্রিয় দুই ছোটো ভাই জইন আর শাওন.... ভালো হোক খারাপ হোক স্বজনপ্রীতি তে এরা ওস্তাদ... জেডা পর্ষদের সাথে মিশে ভার্চুয়াল সম্পর্কটাকে অনেক কাছের মনে হয়... চান্কু, শ্রাফু, ফ্রাতন্বী, নাজমুল, সোডা, শাওন... রাকিব কিংবা তায়েফের সাথে কলেজ লাইফে তেমন কথা হয়েছে বলে মনে পড়ে না, আজকে ব্লগে কাছের বন্ধু কিন্তু এরাই... শামসীর ভাইএর মতো বড়ভাই পাওয়া আমার কাছে অনেক কিছু, না দেখেও এতো আপন লাগে ভাবাই যায় না....মুক্তবয়ান আর সিউল দের মতো ছোট ভাই পাওয়াও কম কথা নয়...

মাত্র অল্পকদিনে যারা অনেক কাছে টেনে নিয়েছেন সবাইকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা... আমার এই পোষ্টটা আমার খুব প্রিয় সেই আংকেল আর নাহিদার জন্য... আল্লাহ এদেরকে যেখানেই রাখুক, ভালো রাখুক...........................................................................................


উপরের ছবিটি ফ্লিকার থেকে নেওয়া। ফটোগ্রাফার: কাজী তাহসিন আগাজ অপুর্ব....
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:০০
৫৫টি মন্তব্য ৫১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×