প্রথমে পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা , এই ব্লগের সকল ভাইসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে। এসে গেল পবিত্র রমজান।এক বছর পরে আবার এলো এই পবিত্র বরকতের মাস। বিশ্বের সকল মুসলমানের কাছে এই মাস খুব কাংখিত।এই মাসে আল্লাহ আমাদের জন্য অনেক বরকত দান করেচেন।এবং সুরা ইউনুসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেনঃ
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ (يونس: )58
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। সূরা ইউনুস : ৫৮
তারমানে কি, আমরা দুনিয়াতে যা কিছু পার্থিব সম্পদ সঞ্চয় করি তা এই রমজান মাসে আল্লাহর বরকতের কাছে কিচুই না।তাই আমাদের উচিত পার্থিব চিন্তাধারা বাদ দিয়ে এবং লোভ লালসার উর্ধে থেকে এই রমজানের মাসের পবিত্রিতা রক্ষা করা এবং রোযা রাখা।
ইসলামের পাচ স্তম্ভের একটা এই রমজান।
রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদিসে এসেছে :—
من آمن بالله ورسولـه، وأقام الصلاة، وآتى الزكاة، وصام رمضان، كان حقاً على الله أن يدخله الجنة ... رواه البخاري
যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, জাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো...। বোখারি
সুতরাং কেউ যদি রোজা পালনের বাইরে থাকে তাহলে সে সম্পুর্ন ইসলাম পালন করলো না। এই মাস আমাদেরকে সংযম করতে শিখায় (যদিও আমরা বাংগালিরা এই মাসকে ভোগের মাস বলেই জানি)।এ মাসে ত্রিশটি রোজা রাখা প্রতিটা প্রাপ্তবয়স্ক মুসল্মানের জন্য ফরজ। আমাদের জন্য আল্লাহ এ মাসে অসীম বরকত প্রধান করেচেন। এই মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
ঃ যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। বর্ণনায় : (নাসায়ি)
রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কোরআন একবারে নাজিল হয়েছে। সেখান হতে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। কোরআন নাজিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল-কোরআনই নয় বরং ইবরাহিম আ.-এর সহিফা, তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানী বর্ণিত একটি সহি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
রমজান মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা বলেন :—
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ﴿3﴾ تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ ﴿4﴾ سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ ﴿5﴾ (القدر: 3-5)
লাইলাতুল কদর সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনি উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। সূরা আল-কদর : ৩-
ক্ষমা পাওয়ার মোক্ষম সুজোগ রয়েচে এই মাসে। রাসুল (সাঃ) লানত দিয়েচেন তাদেরকে, যারা এই মাসেও তার কৃত ঘুনাহ মাফ করাতে পারেনি। তাই মামারা এই মাসের এই সুজোগ আমি কিন্তু ছাড়চি না, চেষ্টা আমি করে যাব।আপনারাও এই মাসের পবিত্রিতা রক্ষা করে চলবেন এবং রোজা রাখা ফরজ তাই রোজা রাখতে হবে।মনে রাখতে হবে রমজান ধৈর্য ও সবরের মাস। এ মাসে ঈমানদার ব্যক্তিগণ খাওয়া-দাওয়া, বিবাহ-শাদি ও অন্যান্য সকল আচার-আচরণে যে ধৈর্য ও সবরের এত অধিক অনুশীলন করেন তা অন্য কোন মাসে বা অন্য কোন পর্বে করেন না। এমনিভাবে সিয়াম পালন করে যে ধৈর্যের প্রমাণ দেয়া হয় তা অন্য কোন ইবাদতে পাওয়া যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন :—
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ. الزمر: 10
ধৈর্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে। সূরা যুমার : ১০
তাই ধৈর্য আর সিয়াম সাধনা এবং আল্লাহর ইবাদত হোক, রমজান মাসে আমাদের মূল লক্ষ।
ও বলতে ভুলে গেচি, আমরা(মধ্যপ্রাচ্যবাসি) কিন্তু এইমাত্র সেহেরি খেলাম, আজ রোজা রাখব।এই লিখার ফাকে সেহেরি খেয়ে শেষ করলাম।এখন ফজরের আজান দিচ্ছে তাই আজকের মত আংগুলের গুতাগুতি এখানে শেষ।