যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে মুক্তি না দিলে চট্টগ্রামের আদালতসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ভবন উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।
Published : 01 Sep 2013, 05:56 PM
এই হুমকি সম্বলিত একটি চিঠি রোববার বিকাল ৪টার দিকে জেলা মুখ্য বিচারিক হাকিম রুহুল আমীনের কার্যালয়ে পৌঁছায়।
চিঠিতে অগাস্ট মাসের মধ্যে সালাউদ্দিন কাদেরের মুক্তি দাবি করা হলেও সেটি পৌঁছেছে এক দিন পর।
চট্টগ্রাম আদালত পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রেজাউল মাসুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দাবি পূরণ না হলে আদালতের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর ভবন, বিদ্যুৎ ভবন, কাস্টমস ভবনও উড়িয়ে দেয়ার হুমকি রয়েছে চিঠিতে।
ডাকে পাঠানো ওই চিঠিটি প্রেরক হিসাবে সাতজনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। নিজেদের ফটিকছড়ি ও রাউজানের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করেছেন তারা।
মুখ্য বিচারিক হাকিমকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, “সাকা চৌধুরীকে মুক্তি না দিলে আপনার লাশ পরিবারকে উপহার দেয়া হবে।”
এ ঘটনায় মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের পক্ষে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে বলে রেজাউল মাসুদ জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাকা চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে। তিনি ফটিকছড়ি সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ।
একাত্তরে রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যাসহ ধর্ষণ, অপহরণ, হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে সালাউদ্দিন কাদেরের মামলাটি বিচার শেষে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিনকে ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর গত বছর ৪ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরু হয়।
কম্পিউটার টাইপে ভুল বানানে লেখা এক পৃষ্ঠার ওই চিঠিতে বলা হয়, “সাকা চৌধুরী মুক্তি না হলে চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিং বোমা মেরে উড়ায়া দেব। বিদ্যুৎ ভবন, বন্দর ভবন, রেল ভবন, কাস্টম ভবন, পুলিশ কমিশনার ভবন ইত্যাদি বোমা মেরে উড়ায়া দেব।”
“যদি মুক্তি না হয়, তাহলে আপনার লাশটা পারিবারকে উপহার দেব। মুক্তি যদি না দেন তাহলে আপনাদের পরিবারের সবাইকে লাশ করে দেব।’’
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম বরাবরে দেয়া চিঠির বিষয় ছিল ‘সাকা চৌধুরীর মুক্তি চাই।’
এর নিচে লেখা রয়েছে- ‘আমরা সবাই সাকা চৌধুরীর মুক্তি চাই। আমাদের নাম গুলো দেয়া হল’।
ক্রমানুসারে নামগুলো হল- ১) দোলন, শীলপাড়া, পথের হাট, নোয়াপাড়া; ২) মুন্নী দাশ পিতা-বাদল দাশ, শীল পাড়া, পথের হাট, নোয়াপাড়া; ৩) জসিম উদ্দিন, মুসলিমপাড়া, পথের হাট, রাউজান; ৪) কামাল আহমেদ, মুসলিমপাড়া, পথের হাট; ৫) প্রদীপ দাশ, গ্রাম-কাশি, পটিয়া; ৬) মান্না হাসান মিয়া, মুসলিমপাড়া, রাউজান ও ৭) মহিউদ্দিন আহমেদ, মুসলিমপাড়া, ফটিকছড়ি।
কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে এবং এতে জড়িতদের গ্রেপ্তারে তদন্ত ও অভিযান শুরু হয়েছে।