আমার ক্ষুদে পন্ডিত আজকাল নানা রকম নতুন নতুন তথ্য দিয়ে আমাকে চমৎকৃত করতে চেষ্টা করে। তার হয়তো ধারনা, আম্মুটা ছাই কিচ্ছু জানেনা।
সেদিন পড়তে বসে হটাৎ কি মনে হল উৎসাহের সাথে বলল আম্মু, জানো, আমি না মুসলমান! জানি তার নব্য জ্ঞানের উৎস কি। বছর তিনেকের বড়, নিত্যদিনের বন্ধু অরণী তাকে এত জ্ঞান দিয়ে সম্মৃদ্ধ করছে। জানতে চাইলাম আমি কি? বলে, তুমিও মুসলমান। এরপর জানা গেল দু পেয়ে সব প্রাণীই নাকি মুসলমান। বেশ ভাল কথা, এটা নিয়ে বেশী জ্ঞান বাড়ানোর ইচ্ছা না থাকায় আর কথা বাড়াইনি।
আজ সকালে বলল, আম্মু লাল পিপড়া লাল লাল ঝাল মরিচ খায়, আর লাল লাল লবন খায় সেজন্য লাল পিপড়া কামড় দিলে জ্বালা করে। হাসব কিনা ভাবছি। বললাম কে বলেছে? অরণী বলেছে! সে তো জানে! একদিন লাল পিপড়া জাফনাকে নাকি কামড়ে দিয়েছিল, অনেক জ্বালা করেছিল.......এগুলোও বলল।
শুনতে মজা লাগলেও, একটু হলেও গবেষণা করি, তাই এসব কথা ভাল লাগল না........মেয়েকে জ্ঞান দেয়া শুরু করলাম............আম্মু পিপড়া কামড়ে দেয়ার পর তার লালা থেকে একরকম এসিড বের হয়, এসিড গায়ে লাগলে জ্বালা করে। কোন পিপড়াই লাল মরিচ খায় না বুঝেছ? বরং লাল মরিচের ঝালের কাছে পিপড়া আসতেই পারে না। মেয়ে যাই বুঝুক..........পিপড়ার লালার এসিড টা কি সেটা জানতে একটু গুগুল এ ঢুঁ দিলাম।
পিপড়া আক্রমনের শিকার হলে প্রথমত কামড়ে দেয়, তারপর তার এবডোমেন থেকে ফরমিক এসিড নিঃসরন হয় যেটা জ্বালার অনুভূতি তৈরী করে। ফায়ার এন্ট নামক এক ধরনের পিপড়া শুধুমাত্র পিপারিডিন নামক এলকালয়েড তৈরী করে যেটা বেশ বিষাক্ত।
পিপড়া গন্ধ শুকবার জন্য তাদের লম্বা এন্টেনা বা শুড়টা ব্যবহার করলেও, একে অপরের সাথে যোগাযোগের জন্য অথবা খাবারের খোঁজে যাবার সময় গতিপথের নিশানা রাখবার জন্য সাধারনত মাটিতে ফেরোমন নামক রাসায়নিক তরল নিঃসরন করে, যেটা অনুসরন করে দলের অন্য পিপড়ারা পথ খুঁজে পায়। যাত্রাপথে কোন পিপড়া আঘাত পেলে সে এলার্ম ফেরোমন নিঃসরন করে ফলে অন্যরা দ্রুত গতিপথ পাল্টে ফেলে। আবার কিছু কিছু পিপড়া প্রজাতি অন্য পিপড়াদের বিভ্রান্ত করবার জন্য প্রোপাগান্ডা ফেরোমন নিঃসরন করে।
যাক বাবা মেয়ের জন্য এটুকু শিখলাম।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১১ রাত ১০:২৩