somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোলেমানী খোয়াবনামা ও একটি ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের না জানা ব্যাখ্যা

০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এস এস সি পরীক্ষা শেষ । অফুরন্ত সময় হাতে, ভর্তি পরীক্ষা দেয়া লাগবেনা , সো টেনশন ও নাই। যে বই পাই তাই গেলার চেষ্টা করি। বাসায় খুজতে খুজতে হঠাৎ এক বই হাতে এল- " সোলেমানী খোয়াবনামা " তার নাম। বইটা নিয়ে বসে দেখলাম এত ব্যাপক গবেষনা ধর্মী বই দেখছি। ব্যাপক তথ্য ও নানামুখী সাজেশন।

এই বই পড়ে ব্যাপক গিয়ান লাভ করে আমি যে ধীরে ধীরে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছি এটা বুঝতে বেশ টাইম লেগে গেল। আমার সব কর্মকান্ড এই বই নিয়ন্ত্রন করা শুরু করল।

বই এর শুরুতে ছিল যাবতীয় স্বপ্নের ব্যাখ্যা- নিজের মাথায় বাড়ি দিতে দেখলে কি হবে, অন্যের মাথায় বাড়ি দিলে কি হবে। সুন্দরী মেয়ে দখলে কি হতে পারে, সুন্দরী মেয়ের হাতে মার খেতে দেখলে কি হবে ;)। মোটমুটি যত ধরনের স্বপ্ন দেখা সম্ভব তার সব ব্যাখ্যাই আছে।



তার পরের অধ্যায়ে আছে নানা রকম সাইনের ব্যাখ্যা। চোখের কোন পাতা নড়লে কি হবে, শরীরের কোন মাংশপিন্ড নড়লে কি হবে, ঘুম থেকে উঠার পর শ্বাস কোন নাক দিয়ে বের হচ্ছে- তার প্রভাবে দিন কেমন যাবে এই সব। তারপর ছিল তেলাপোকা উড়লে কি হবে, টিকটিকি কোন দিক থেকে ডাকলে কি হবে ...................আরও কত কি।

এর পরের অধ্যায়ে আছে হস্ত রেখা ও তার ব্যাখ্যা।

ঘটনা ধীরে ধীরে খারাপ হতে লাগল । ঘুম থেকে উঠেই এই বই নিয়ে বসি। কোন নাক দিয়ে শ্বাস নিচ্ছি , কি স্বপ্ন দেখলাম , টিকটিকি ডাকল কিনা, তেলাপোকা উড়ছে কিনা।

খেলতে বের হবার আগেই বুঝে যাচ্ছি আজকে কয় রান করব। মাঠে গিয়ে ডাব্বা মারার পর ভাবি বেপারনা, এমনইত হবার কথা ছিল /:)

নিজেই বুঝতে পারছি আমি একটা গ্যাড়াকলে পড়ে গেছি। যে করেই হউক বের হয়ে আসতে হবে। যাক অবশেষে উদ্ধারকারী হিসেবে আবির্ভত হল আমাদের বাড়ীওয়ালার মেয়ের বিশাল বই এর কালেকশন। মাসুদ রানা থেকে শুরু করে সেবার রোমান্টিক কালেকশন, ওয়েষ্টার্ন- আর ও কত কি। তার কাছ থেকে নিয়ে পড়া শরৎ চন্দ্রের পরিনীতা এত ভাল লেগে গেল যে বইটা মেরেই দিলাম :P

তালগাছ টাইপের হওয়াতে বই দেয়া নেয়াতেই সব সীমাবদ্ধ থাকলেও লাভের লাভ হল আমার মাথা থেকে সোলেমানী খোয়াব নামার ভূত দূর হয়ে গেল।

মানি আর না মানি রাশি চক্রের আকর্ষনটা এখনও রয়ে গেছে। শনিবারে প্রথম আলোর ছুটির দিনে হাতে নিয়ে তাই সবার আগে ঐ পাতাতেই চোখ বুলাই। ভাল কিছু দেখলে ভাল লাগে, আর খারাপ কিছু দেখলে কাওসার আহমেদ কে দুটা গালি দিয়ে বলি " তোরে কইছে তুই বেশী জানস" । একবার ক্ষেপে গিয়ে ওনারে একটা মেসেজ পাঠইয়া দিলাম। উনি রিপ্লাই দিলেন এত চিন্তার কি আছে /:) । তারপর এই ভূত ও এখন প্রায় নেমে গেছে।

গতমাসে বাসায় গিয়ে ঘটল আরও মজার ঘটনা। আমরা আড্ডা দিচ্ছি। এমন সময় ফোন। রাত একটায় বাইরের কলই হবে ল্যান্ড ফোনে। হলও তাই। বড় আন্টি (মেঝ খালাকে কেন জানি আমরা বড় আন্টি ডাকি, আর ডঃ লুলের মাকে (বড় খালা) শুধু খালাম্মা ) ফোন করেছেন। একটু কথা বলে বলল তোর আম্মুকে দে। কথা বলতে বলতে আম্মু দেখি ফোন টেবিলে রেখে বোক শেলফ থেকে খোয়াবনামা নিয়ে আসল। শুরু হল আব্বু সহ আমাদের হাসাহাসি। হুমম কি দেখছিস আবার বলত। হাঁটুতে ব্যাথা পাইছস- শোন ভাল স্বপ্ন , হঠাৎ টাকা পাবার সম্ভাবনা আছে। আমরা হাসি B-)

কয়েক দিন পর আন্টি ফোন দিয়ে গল্প করার এক ফাকে আমাকে বলল -শোন সুবাহ (কাজিন) স্কুলে ১০০০ ডলারের স্কলারশিপ পাইছে । আমি হাসতে হাসতে বলি, যাক আপনার হাঁটুতে ব্যাথা পাবার স্বপ্নত ফলে গেছে দেখছি। চুপথাক বলে আন্টিও হাসা শুরু করল।

যায় হউক এইবার মূল ঘটনায় আসি। আজকে সকালে এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। এর কোন ব্যাখ্যাও পাচ্ছিনা, এই মুহুর্তে আমার কাছে কোন খোয়াবনামাও নাই ।



স্বপ্নটা এমন- খুব ক্লোজ এক বন্ধুর বাসায় গেছি। আড্ডা দিয়ে ফিরে আসার সময় ওর মা আর বড় আপা ডেকে বলল, ওয়েট কর, তুমি ওকে যে গরুটা গিফট করেছ সেটার পায়াটা আজকে রান্না করেছি, খেয়ে যাও। বলতে না বলতেই রুটি, চিতল পিঠা সহ সে পায়া হাজির। খাওয়া শুরুর আগেই বুয়া দরজায় নক করে আমাকে বাঁচিয়ে দিলেন এই ভয়ংকর জিনিস খাওয়ার হাত থেকে। :-*

এরপর দুই বন্ধুকে ফোন দিলাম , ডিটেলইস বললাম। ওরাত হাসতে হাসতে শেষ । বলল মামা কপালে আরও দুঃখ বাকি আছে এখনও। যে ঘটনা ঘটাইছ তার পরিণতি ভয়াবহ।

উল্লেখ্য গতবছর বাসায় না জানিয়ে ঐ বন্ধু বিবাহ করিয়াছে ,আর আমরা তিনজন ছিলাম তার সাক্ষী। ;)

এই স্বপ্ন নিয়া ব্যাপক দুঃশ্চিন্তায় আছি, তার উপর সাক্ষী তিনজন থাকলেও গরুর পায়ার নিমন্ত্রন আমি একাই কেন পাইলাম এ ব্যাপারটা কিছুতেই বুঝতেছিনা। /:)
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×