শাকিলকে দেখলে বেশ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। তার জোড়াজোড়ির ক্ষমতা প্রবল। দেখা গেল, অফিস থেকে বাসায় চলে যাবো, কোনোভাবে শাকিলের সামনে পড়ে গেছি অথবা শাকিল ফোন করেছে। সে যাত্রায় বাড়ী ফেরা মোটামুটি ঈদের সময় বাড়ী ফেরার মতো অনিশ্চিয়তার দোলাচলে দুলতে থাকে।
ঘটনা যেমন দিনে ঘটে, একইভাবে রাতেও ব্যাতিক্রম নেই।
গভীর রাত। আনুমানিক বারোটা। মৌচাকের মোড়-এ একজনের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি, হঠাৎ শাকিলের আগমন। সে যাত্রায়, যাত্রা ভঙ্গ। শুধু ভঙ না, ভেঙ্গে চুরচুর।
মোটমুটি রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের অফিস যেভাবে ভাঙ্গে, অনেকটা সে টাইপ।
শাকিলের ব্যাপক জোড়াজোড়ি, আরে ভাই দুর! বাসায় গিয়া কী করবেন? চলেন বাবুর বাসায় থাকি।
আমার বোঝা হয়ে গেছে, এখন খবর। শাকিল মোটামুটি জ্বিনের পর্যায়ে। আছর করলে শেষ। তো আমি যেমন বাসায় যাওয়ার ব্যাপারে নাছোড় বান্দা। শাকিল সমান উদ্দ্যমে আছর বান্দা।
অবশেষে বিদায় নেয়া জন বাবুর বাসায় রাত্রী যাপন এবং নির্ঘুম সারারাত বাংলা সাহিত্যের গুষ্ঠি উদ্ধার।
যেটা সকাল নাগাদ এমন একটা সিদ্ধান্তে পৌছলো যে, শাকিল ফারুক এবং আমার মতো বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর উল্লেখযোগ্য কেউ নেই।
তবে নতুনদের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ ভালো করছেন।
যদিও শেষ দিকে আমি আমার নাম প্রত্যাহার করে শাকিলকেই একমাত্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। কারণ, আমি নিজেই শাকিলের লেখায় মুগ্ধ।
মুগ্ধ শাকিলের অনেক গুনেও।
শাকিল যেমন ভালো লেখে, শাকিলের আরেকটা বড় গুন সে প্রচন্ড পরিশ্রমী।
শাকিল আড্ডাবাজ। শাকিল ভ্রমণ বিলাসীও।
সঙ্গে আরো একটা বিশাল গুন আছে।
যে রাধতে পারে সে চুল বাধতে পারে- নারী প্রধান এই ডায়ালগকে শাকিল বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাধার মতো পর্যাপ্ত চুল না থাকায়, চুল না বেধেই শাকিলের ভালো রান্না করতে পারে।
যে রান্না খাওয়ার জন্য আমাদের আয়োজন করে আরেকবার থাকতে হয়েছে।
সে এক অসাধারণ রান্না।
এমনি অনেক অসাধারণ গুনের অসাধারণ ছেলে সামুর নিয়মিত ব্লগার শাকিলের আজ জন্মদিন।
ব্যাক্তি জীবনে অযথাই বারবার হতাশার অভিনয় করা শাকিল অসম্ভব আশা জাগানীয়া মানুষ। অন্তত আমি শাকিলকে নিয়ে অনেক আশাবাদী। শাকিল তার রাস্তায় হেটে গেলে সফল হবেই।
কারণ, সাহিত্যের কঠিন ভূমিতে শাকিল নিবেদিতজন।
আমি জানি, আমি বিশ্বাস করি নিবেদিতজনেরা কখনোই ব্যর্থ হয়নি, ব্যর্থ হয়না ।
শাকিলও হবে না।