somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

না , অন্যের বিপদে এত হাসা ঠিক হইতেছেনা।

০৬ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সপ্তাহের প্রথম দিন, অফিসে ঢুকে সারি নাই বড় বসের ফোন। একটু টাসকি খাইলাম। নরমালি আমার হাত ও অত লম্বা না যে হুদাই ওনার দরজার হাতলে হাত রাখুম , আর ওনার ঘাড় ও অত চিকন না যে ঘুরাইলেই আমারে দেখতে পাবেন। ব্যাপারটা সাত সকাল বলে চিন্তাটা আরেকটু বেশী। মস্তিস্ক স্ক্যান শুরু করল শেষ সাত দিনের কার্যক্রম। কিছুই ধরা পড়লনা। এমন সময় আমার ম্যানেজার ভাইয়াও বললেন তুমি ভাইয়ার রুমে যাও। ঘটনা কি আর ভাবছি- ধূর এত টেনশনের কি আছে, একমাত্র অফিসে দেরী করে যাওয়া ছাড়া আমার বিরুদ্ধে আর কোন অভিযোগ সম্ভব না। গত তিন বছরে এক দু দিন ছাড়া এই দেরী করাত প্রতদিনই আমার নিয়তি- যেদিন আগে বের হই সেদিন ও সিএনজি পাইনা, আমার কি দোষ। দোষ কপালের ,ঘুম ভাঙ্গেনা আমি কি করি। ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য আমার মার জান যায় যায়।(Click This Link )

যাই হউক গেলাম বসের রূম এ। নরমাল কথা বার্তা- একটা প্রবলেম হইছে আমি সলভ করতে পারব কিনা। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কথা বলছি এমন সময় এক কলিগ এর ফোন। একবার কেটে দিলাম, আবারও ।

এইবার বললাম আমি বসের রূমে, একটু পরে আসতেছি। কথা শেষ করে গেলাম। তার চেহারা দেখি বিধ্বস্ত । ভাই কি হইছে। পোলাপান সিসটেমের বারটা বাজাইয়া দিল নাকি !!!!

ভাই শুরু করলেন- আমারেত তুমি ভাল করেই চিন, কারো সাথে কোন কিছুতেই আমি নাই। কিন্তু এটা কি হইল। ভাই কি হইছে-চিন্তিত ভাবে জিগায়।

সেদিনের পিকনিকে ম্যাজিক বক্স যখন আমার হাতে আসল লেখা ছিল "আপনার চোখে ফটো সুন্দরী যিনি ক্যামেরা দেখলেই বলেন আমার একটা ছবি তুলে দেন" তাকে দিন। তোমরা পিছন তেকে কইলা অমুকরে দিতে- আমিও দিলাম। আমার বউ ও ছিল তোমাগো সামনে। এই পর্যন্ত ব্যাপারনা। এরপর তোমাগো কেউ একজন কইছে- পুরানো প্রেম আবার এসে গেল !!! কথাটা কে কইছে তুমি বাইর কইরা দাও। তুমি কও আমার কি এ ধরনের কিছু ছিল। সাথে সাথে কই নাত- কখনোত কিছূ দেখিনাই, শুনিনাই।

ভাই পিকনিকে কেউ হয়ত ফান করছে আরকি। কি !! এইটা ফান। আমার লাইফ শেষ হইয়া যাইতেছে আর তুমি কও ফান। লাইফ শেষ হওনের কি আছে , ঘটনা খুলে বলেনত।

তুমিত দেখছ এর আগে বউরে নিয়া কোন ফাংশনে আসিনাই।এটাই প্রথম।প্রথম বারেই ক্যাচাল লাগাইয়া দিস। ভাইর চেহারা পুরা ফ্যাকাসে হইয়া গেছে। বলে চলেন- আজ কালকার মেয়ে, টিভি ,সিনেমা সব জায়গায় দেখে অফিসে কত রকম ঘটনা ঘটে, পরকিয়া ,..... আরও কত কি। এসব দেখে ওত এমনিতেই টেনশনে থাকে, তার উপর এই কথা শুনেত ঐ রাত থেকে আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিছে। হা নার বাইরে কথা কয়না।


ধূর, ভাবি আপনার লগে ফান করতেছে- আরে না সে সিরিয়াস, কয়-কিছু না থাকলেত পোলাপান নাকি এসব কথা কইতনা। আরে ভাবিরে আপনে কন নাই আমাগো পোলাপান কত ফাজিল। কইছি, কিছুতেই কিছু হইতেছেনা !! কে কইছে এখন আমার ওরে দরকার, ওরে দিয়াই বলাতে হবে যে এটা ফান ছিল।

এখন কেমনে বাইর করি কে কইছে- আমি কইলাম। ভাইর এক কথা-তোমারে করতেই হইব। আমার সুখের সংসারে তোমরা আগুন জ্বালাইয়া দিস।

কোন উপায় না পাইয়া শেষে কইলাম এক কাজ করি , আমিই ভাবিরে ফোন দিয়া বলি। তার চেহারায় দেখি একটু আলো দেখা যায়তেছে। কিন্তু !!! কোন কিন্তু নাই আমি কইতাছি। তুমি পারবা। হ পারুম। তাইলে আমি যে তোমারে কিছু কইছি ওরে কইবানা। ওক্কে, ভাবির নাম্বার দেন। ওর নাম্বার লাগবনা, অফিসের ইমার্জেন্সী নাম্বার বাসায় আছে, তুমি ঐটাতে কর ।মনে মনে কই হালা তোমার উপকার করতে চাইলাম গায়ে পইরা আর তুমি বউ এর নাম্বার দিতেও ডরাইতেছ !!! কি আর করা। :-*

সিড়িঁতে আইসা বিড়ি ধরাইয়া নিজের মনে কতক্ষন হাসলাম আর ভাবতেছি তোমার বউ তোমারে লইয়া মজা করতেছে তুমি বুঝতেছনা। দিলাম ইমার্জেন্সী নাম্বারে ফোন। ২য় বারে ভাবি ধরল।

আসসালামুআলাইকুম ভাবি, আমি শামসীর- .. ভাই এর কলিগ, আপনার সাথে পিকনিকে পরিচয় হইছিল। হ্যাঁ ভাইয়া কেমন আছেন, ওত অফিসে। আমি জানি, আপনাকে ফোন দিছি একটা কথা বলার জন্য। হ্যাঁ ভাইয়া বলেন। আমার হাসি আইসা পড়তেছে, কন্ট্রোল করলাম।

ভাবি, ঘটনা হইছে কি, ঐদিন পিকনিকে ভাই যখন বক্স পাইল, তখন আমরা আসলে মজা করতেছিলাম। ওর সাথে ভাইয়ের কোন কিছুই নাই, এটা জাস্ট ফান, আপনি কিছু মনে কইরেননা। কইতেছি আর আমার নিজেরেও কেমন ভাই এর মত ভোদাই মনে হইতেছিল। তবুও এতে যদি বেচারার কোন লাভ হয়।

কথা শেষ করার আগেই ভাবি হাসা শুরু করল, আরে ভাই আমিত জানি এটা ফান, তাই আমিও ওর সাথে একটু মজা করতে ছিলাম, ও ভাবতেছে আমি খুব সিরিয়াসলি নিছি ব্যাপারটা B-)। আমিও হাইসা দিলাম:D। ভাল থাকবেন কইয়া ফোন রাইখা ভাবতেছি, ভাই তোমার কপালে আজকে আরও বড় দুঃখ আছে, কলিগরে দিয়া ফোন করাইছ, কথা আরও দুইদিন বন্ধ থাকব। ....ভাইরে ফোন দিয়া জানাইলাম, কইছি, আর কোন প্রবলেম হইবনা।

হাসতে হাসতে ডেস্কে আইসা দেখি পোলাপানও হাসতেছে। কিরে কি হইছে। আরে ভাই এর কান্ড শুনেন, পিকনিকের দিন কি করছে। ও ও ছিল লিফটে, এটা সে আমলেই নেয় নাই। বউরে কয়- আচ্ছা আজকে আমারে অন্য দিনের চেয়ে বেশী স্মার্ট আর সুন্দর লাগতেছেনা ?
এই কথা শুইনা ভাবি হাসতেছে আর ও দম বন্ধ কইরা রাখছে যাতে হাসি বাইর হইতে না পারে। ....................আরেক চোট হাইসা নিলাম সবাই মিলে।;)

না অন্যের বিপদে এত হাসা ঠিক হইতেছেনা।
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×