তুমি একা নও
আরো একটা দিন অতীত হলো
এখানে আমি পুরোপুরি একা
কী ক’রে এমন হলো যে
এখানে তুমি নেই আমার সঙ্গে
তুমি কখনো বিদায় বলোনি সত্য
কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে
কেনো তোমাকে চলে যেতে হয়েছিল
এইভাবে আমাকে শীতল ফেলে রেখে
প্রতিদিন ঠায় বসে থাকি নিজেকে শুধাই
কী ক’রে ভালোবাসা নিরুদ্দিষ্ট হয়েছিল
কিছু একটা আমার কানে গুঞ্জন তোলে
আর বলে ‘তুমি একা নও জেনো
আমিও যে আছি তোমার সঙ্গে এইখানে’
অথচ নির্জন আমি বিবিক্ত আমি
প’ড়ে রই তোমা থেকে বহুদূর
অন্য এক রাতে আমি শুনতে পেলাম
তুমি কাঁদছো আমার জন্যে আমাকে
আসতে বলছো তোমার কাছে
যেন তোমায় জড়িয়ে ধরি
হ্যা আমি তোমার প্রার্থনা শুনতে পাই
তোমার ভার বইতে চাই
অথচ তার জন্যে প্রয়োজন তোমার হাত
যেন তা স্পর্শ করতে পারি
যেতে পারি এই নশ্বরতা ছাড়িয়ে
জেনো তুমি একা নও
আমিও তোমার সাথেই আছি
যদিও আমরা দূরে
তথাপি হৃদয়ে আমার তুমি
একা নও যেন
তিনটি শব্দ পরপর
গুঞ্জরিত হোক তোমার ঠোটে
আমি দৌড়ে চলে আসবো
তখন তুমি আর আমি একসাথে একই সঙ্গে
কারণ তুমি একা নও
আমিও তোমার সঙ্গে
তোমার হৃদয়ে
যদিও তুমি দূরে এবং আমিও।
মাইকেল জ্যাকসন আমার কাছে এমন এক গায়ক, যার সঙ্গে আমার পরিচয় খুব শৈশবে। পশ্চিমের প্রথম যে মানুষটির সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় গানের ভেতর দিয়ে নাচের ভেতর দিয়ে। সব গান গান নয়, সব নাচও তাই, কারণ তাকে শিল্প হয়ে উঠতে হয়। বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করেই বলছি শিল্প তৈরি করবার কোনো নিয়ম নেই, তা অমোঘ প্রতিভার ভেতর দিয়ে তৈরি হয়। সেই প্রতিভা হয় সর্বগ্রাসী। সেই প্রতিভা শিকার হয় সর্বষড়যন্ত্রের। সে উন্মাদ হয়, যন্ত্রণাক্লিষ্ট হয়, কিন্তু তাকে শুনবার কেউই থাকে না। এটা এক ধরনের অভিশাপ, এক ধরনরে উপহার, এক ধরনের নির্বাচন। যেন অমরত্বের বিনিময়ে সমস্ত ঐহিক জীবন সমর্পণ করতে হয়। মাইকেলকে তাই আমি তুলনা করতে চাই কিংবদন্তির কবি জা আর্তুর র্যাঁবো’র সাথে, যদিও র্যাবো প্রস্থান করেছিলেন মাত্র ৩৭ এ। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
[মাইকেল জ্যাকসনের ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত ‘ইতিহাস-অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ- বই ১’ নামের অ্যালবাম থেকে নেয়া। গানটি বাংলা কবিতার আকারে অনুবাদ করাতে এখানে সেখানে পাল্টে দেয়া হয়েছে।]