somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হযরত খিযির রেজালুল-গায়ব বা রূহানী জগতের ঐ সমস্ত মহান সত্তার অন্তর্গত, যাদেরকে আল্লাহপাক দুনিয়াবাসীর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দায়িত্বে নিয়োজিত রেখেছেন

০৫ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পবিত্র কুরআনে হযরত মূসার আ. জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বর্ণনায় দুই নদীর সঙ্গমস্থলে যে রহস্য পুরুষের সাক্ষাতের কাহিনী বলা হয়েছে, হাদিস শরীফের বর্ণনায় দেখা যায় যে, ঐ রহস্যপুরুষের নাম ছিল হযরত খিযির। পবিত্র কুরআনে শুধুমাত্র 'আমার প্রিয় বান্দাগণের মধ্যে এক বান্দা' বলা হলেও বুখারী ও মুসলিম শরীফসহ বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থের বর্ণনায় সে বান্দার নাম খিযির বলে উল্লেখিত হয়েছে। তবে খিযির কি তার প্রকৃত নাম না উপাধী এ নিয়েও বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়। অধিকাংশ বণনাকারীর মতে তার নাম খিযির হলেও কেউ কেউ তার নাম বালিয়া ইবনে মালহাম এবং উপাধী খিযির বলেছেন। উল্লেখ্য যে, খিযির অর্থ সবুজ। বর্ণিত আছে যে, ইনি যেখানে অবস্থান গ্রহণ করেন সেই ভূখ- উষর মরুময় হলেও সবুজে ভরে উঠে, এজন্য তাকে খিযির নামে অভিহীত করা হয়েছে।
খিযির কি নবী ছিলেন না ওলী এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত রয়েছে। মুহাদ্দেস ও মুফাসসেরগণের অধিকাংশের মতে তিনি একজন নবী ছিলেন। কেননা, পবিত্র কুরআনে যে ভাষায় এবং যেরূপ গুরুত্ব সহকারে তার প্রসঙ্গটি বিবৃত হয়েছে, তা কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালার সর্বোচ্চ সম্মানিত বান্দা নবীগণের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়া স্বাভাবিক।
খিযির সম্পর্কিত সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়টি হচ্ছে, তিনি কি চিরজীবি, অর্থাৎ এখনও জীবিত আছেন এবং কেয়ামত পর্যন্ত জীবিত থাকবেন, না অন্যান্য সকল নবী রাসূলগণের ন্যায় (একমাত্র হযরত ঈসা আ. ব্যতীত) তারও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে গেছে?
হাদিস এবং তফসীরের অধিকাংশ ইমামগণের মতে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তবে কোন কোন হাদিস-তফসীরবিদ এবং সুফী সাধকগণের বিরাট এক অংশ বলে থাকেন যে, হযরত খিযির জীবিত আছেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির বিশেষ কল্যাণে নিয়োজিত আছেন।
ছুফীগণের অনেকেরই অভিমত হচ্ছে, হযরত খিযির রেজালুল-গায়ব বা রূহানী জগতের ঐ সমস্ত মহান সত্তার অন্তর্গত, যাদেরকে আল্লাহপাক দুনিয়াবাসীর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দায়িত্বে নিয়োজিত রেখেছেন। কিন্তু ইমাম ইবনে তাইমিয়া, ইবনে কাইয়্যেম এবং ইবনে হিব্বান উন্দুনুসী রহ. ন্যায় শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দেসগণ হযরত খিযিরের সশরীরে জীবিত বা রূহানীভাবে সক্রিয় থাকার ধারণা নাকচ করেছেন।
অন্যদিকে ইমাম শাফেয়ী রহ. তার মুসনাদে এই মর্মে একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের পরপরই এক অপরিচিত ব্যক্তি হাজির হয়ে সাহবায়ে কেরামকে সান্ত¡না দিতে গিয়ে বলেন, আল্লাহ তায়ালার নিকট সবুরই হচ্ছে প্রতিটি বিপদ এবং হারানো সম্পদের ক্ষতিপূরণ।
সুতরাং এই কঠিন শোকের সময় আপনারা একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা করুন। কেননা, মহা বিপদের প্রতিদান নিতে যারা বঞ্চিত হয়ে যায়, তাদের চাইতে হতভাগা আর কেউ হতে পারে না।
একই বর্ণনা শব্দের সামান্য বিভিন্নতাসহ বাইহাকী শরীফেও রয়েছে। সাহাবীগণ বলেছিলেন, কঠিন শোকের সেই মুহূর্তটিতে আগত সেই ব্যক্তি ছিলেন হযরত খিযির আ.।
বুখারী ও মুসলিম শরীফে ইমাম যুহরী বর্ণিত এক হাদিসে বলা হয়েছে যে, কেয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে দাজ্জাল আবির্ভূত হয়ে সমগ্র দুনিয়ায় চক্কর লাগাতে থাকবে। শেষ পর্যন্ত মদীনা শরীফের বাইরে অবস্থান গ্রহণ করবে। এ সময় মদীনা থেকে একজন সুদর্শন যুবক বের হয়ে দাজ্জালের মোকাবেলা করবেন। দাজ্জাল অনেক চেষ্টা করেও সেই যুবকের মোকাবেলায় জয়যুক্ত হতে পারবে না। হাদিসের ভাষায় 'সর্বোত্তম সেই ব্যক্তিই' হবেন হযরত খিযির আ.।
এ ধরনের আরও বহু বর্ণনা এবং ছুফী-দরবেশগণের অসংখ্য ব্যক্তিগণ অভিজ্ঞতার আলোকে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, হযরত খিযির আ. সশরীরে না হলেও অন্ততঃ রূহানীভাবে পৃথিবীর বুকে সক্রিয় রয়েছেন এবং আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে পৃথিবীর বুকে নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, এরূপ তথ্য অস্বীকার করা যায় না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×