somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Daily Incident

০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাসা থেকে বেরুলাম দুপুরের দিকে। যাবো ধানমন্ডি। আমার বাসা উত্তরা, আগে বাসা ধানমন্ডির কাছেই ছিলো কিন্তু ট্রান্সপোর্টের অসহ্য ঝামেলার জন্যে বাসা চেঞ্জ করে চলে এলাম উত্তরা। এখন যে খুব শান্তিতে আছি তা বলবো না তবে আগের চেয়ে অনেক ভালো। ঢাকা শহরের ট্রান্সপোর্ট এতটাই খারাপ যে যারা গাড়ীতে চলেন সোজা কথায় বুঝবেন না। আগে প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে পাক্কা চল্লিশ মিনিট বসে থাকতে হতো। যেই ফোন করতো বলতাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আছি। পরে ফোন কর।

টানা চল্লিশ মিনিট বাসে ঝুলে দাড়িয়ে থাকা যে কি কষ্টকর সেটা বলে বোঝানো শক্ত, সারাদিন অফিস করে তারপর যদি এরকম কষ্ট হয় সেটা কি আর ভালো লাগে? যদি এমন হতো ঠিক আছে গেলাম না বাসে করে, ট্যাক্সিতে করে বা সিএনজিতে করে- সেটাও তো হচ্ছে না।

যাই হোক প্রসঙ্গে ফিরে আসি, উত্তরা থেকে আসাদগেট যাবার একমাত্র বাস হচ্ছে আরএফ আর নামে নতুন সার্ভিস। আগের বেভকো সার্ভিসের বাসগুলোই রঙ পাল্টে হয়ে গেছে সূচনা। আগে দুলদুল নামে আরেকটা সার্ভিস ছিলো আজিমপুর পর্যন্ত আর গাবতলী পর্যন্ত সেটার আজিমপুর রুট বন্ধ হয়ে গেছে। তার মানে আমি যদি আসাদগেট যেতে চাই তাহলে সূচনা ছাড়া গতি নেই।

সূচনা আবার দুরকমের এসি আর নন এসি। আমি ঠিক জানিনা কিভাবে তারা অনেকগুলো জায়গায় সিমেন্টের ছোট ছোট কাউন্টার তৈরি করে ফেলেছে ফুটপাতের উপর যেখানে এগুলো তৈরি করার কথা নয়। উত্তরায় আছে, ফার্মগেটে আছে...

কয়েকদিন এটার এসি বাসে উঠে শক্ষা হয়ে গেছে। কারণ বেভকো বাসগুলো দ্রুত চলাফেরা করতে পারেনা অন্যবাস গুলোর মতো। অনেক দেরী হয়ে যায়। আর কাউন্টারের তো শেষ নাই। তাই আজ উঠলাম নন এসি বাসে। বাস ছাড়লো একটু পরই। কিন্তু একটু সামনে যেতেই মেজাজ গরম হয়ে উঠলো। বাস চলছে টিমে গতিতে। ঠেলাগাড়ী বললেও কম বলা হবে না। পাশ দিয়ে সব গাড়ী বেরিয়ে যাচ্ছে হুস হুস করে। রাগে দাঁত কিড়মিড় করা ছাড়া উপায় নেই।

গাড়ীটা কেন আস্তে চলছে তার কারণ হচ্ছে- গাড়ীটা হচ্ছে লং ও“টে চলা কোন বাস তার আয়ু শেষ হয়ে যাবার পর এখানে ছেড়ে দিয়েছে। গাড়ীর ইঞ্জিনের দম নেই। একটা গিয়ারে টানতে গেলেই আস্তে আস্তে তার পাওয়ার কমে যায়। তাই আবার ফাষ্ট গিয়ারে নিয়ে আবার টানতে হয়। বুঝলাম আমার আজ অনেক সময় লাগবে যেতে। কি আর করা বাংলাদেশের বাস!

উপরের যে ঘটনাটা বললাম, সেটি কিন্তু আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্যে প্রতিদিনকার প্রবলেম। কিছুই করার নেই আমাদের। পরিবহন শ্রমিকদের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে আছি। কিসে যাবেন, রিকশায়? হাহ্ সেটার কথা যদি বলতে হয় তাহলে ধানমন্ডিতে যান। আমি একদিন ধানমন্ডি পনের নাম্বার বাসস্ট্যন্ডে দাড়িয়ে আছি। একটা রিকশা কে বললাম, যাবা এই সামনে আনাম র‌্যাংকস প্লাজা। হেটেই যাওয়া যায়, একমিনিট ও লাগবে না। কিন্তু সাথে একটা ভারী ব্যাগ ছিলো। রিকশাওয়ালা চাইলো দশ টাকা। আমি চোখ কপালে তুলে বললাম, এতটুকু যেতে দশ টাকা? সে খ্যাক খ্যাক করে হেসে বললো, জে।

সিএনজি নেবেন? হাঃ হাঃ। বলতে গেলে তাদেও হাতে পায়ে ধরলেও তারা স্ট্রেইট মানা করে দেয়। যাবেই না। দশ বিশ টাকা বেশি তো পরের কথা। অবশ্য আপুরা বললে তারা রাজি। সেদিন অফিসের এক কলিগের সাথে যাবো। সিএনজি একটাও যাবেনা। আমি দাড়িয়েই আছি দাড়িয়েই আছি। পরে আমার অবস্থা দেখে তার মায়া হলো, সে বললো, সরেন, দেখেন এবার যায় কিনা। সে সানগ্লাসটা কপালে তুলে বিদেশি ঢঙে সিএনজিকে বললো এই যাবা। সিএনজি ওয়ালা তার চোখের দিকে তাকিয়েই ফিট। উঠেন।
আমার দিকে তাকিয়ে বললো, হেঃ হেঃ দেখেন কিভাবে ম্যানেজ করতে হয়। আমি ভাবলাম হায়রে কপাল!

ট্যাক্সি ক্যাবও একই রকম। পার্থক্য যে এটার ভাড়া দিতে গেলে মানিব্যাগটা আপনার অনেক হালকা মনে হবে। ইয়োলো ক্যাব কিন্তু এসি চলে না। কারণ নাকি নষ্ট। অবশ্য পার্মানেন্ট নষ্ট সেটা আর ঠিক হবেনা কখনও। সেদিন তো কালো এক ক্যাবে উঠেছি মাঝ রাস্তায় এসে (এয়ারপোর্ট রোডে) হঠাৎ তার দরজা খুলে গেলো। আমার কলিগ সভয়ে বললো, আরেকটু হলেই তো পড়ে যেতাম। আমি বললাম, শোকর করেন যে পড়েন নাই।

আমি যতবারই এই রকম ঝামেলায় পড়ি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি যে আমাকে একটা গাড়ি কিনতেই হবে। আমি হয়তো কিনেই ফেলতাম আর এক বছরের মধ্যে কিন্তু এখন মনে হচ্ছে নাও হতে পারে কারণ বাজেটে গাড়ীর দাম বেড়ে গেছে। আমি ভাবি যে আর কত চিপা খাবো।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:২৯


সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

দোয়া ও ক্রিকেট

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৪


দোয়া যদি আমরাই করি
তোমরা তাইলে করবা কি?
বোর্ডের চেয়ারম্যান, নির্বাচকের
দুইপায়েতে মাখাও ঘি।

খেলা হচ্ছে খেলার জায়গা
দোয়ায় যদি হইত কাম।
সৌদিআরব সব খেলাতে
জিতে দেখাইত তাদের নাম।

শাহাবুদ্দিন শুভ ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!!

লিখেছেন অন্তর্জাল পরিব্রাজক, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:২১



দয়া করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!! X( এরা ছাগলের দলই ছিল, তাই আছে, তাই থাকবে :-B !! এরা যেমন ধারার খেলা খেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বকুল ফুল

লিখেছেন নীল মনি, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪

বকুল ফুলের মিষ্টি গন্ধে ভরে থাকে আমার এই ঘর। আমি মাটির ঘরে থাকি। এই ঘরের পেছন দিকটায় মা'য়ের হাতে লাগানো বকুল ফুলের গাছ৷ কী অদ্ভুত স্নিগ্ধতা এই ফুলকে ঘিরে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×