somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টিপাইমূখ ড্যাম:- ভাটি-প্রবাহ কথা।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথায় বলে অজ্ঞতাও অনেক সময় অনেকের কাছে প্রশান্তি বয়ে নিয়ে আসে।
তাঁদের কথাবার্তায়, অঙ্গভঙ্গীতে এবং আচার-আচরনে টিপাইমূখ ড্যামের ভয়াবহতার পরিধির আন্দাজ সম্যক
উপলব্ধি হয়ত না করতে পেরে, হয়তবা জেনেও না জানার ভান করে, বেশ স্বস্তিতে আছেন বলেই প্রতীয়মান।
বিভিনড়ব বক্তব্য, লেখা, প্রবন্ধ, প্রতিবেদন, বিবৃতি ও প্রাপ্ত তত্ত্ব-উপাত্ত্ব বিচার বিশে−ষণ করে সাজানো-গোছানো ও
প্রক্ষিপ্তকরণ, সঙ্গতিময় পরিসংখ্যানের বিন্যাস করণ এবং যুক্তিসঙ্গত অনুমিতি-ধারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লেখাটি রচিত
হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত ইতিকথা:
(১) ফারাক্কা ব্যারাজ: ষাটের দশক থেকেই বিষয়টি একটি জলন্ত ইতিহাস। একাধিক দেশ প্রবাহিনী গঙ্গার ভাটিতে
বাংলাদেশের পানির চাহিদা ও ন্যায্য হিস্যার কথাটা অনেকটা অনির্বিত্ত্ব রেখেই ভারত কলকাতা বন্দরের নাব্যতা
বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভাগিরথী নদী দিয়ে গঙ্গার পানি প্রত্যাহারের নিমিত্তে ১৯৭২ সনে অনেকটা একতরফাভাবে ফারাক্কাব্যারাজ নির্মান কাজ শুরু করে।
প্রথমে পরীক্ষামুলভাবে পানি প্রত্যাহারের কথা হলেও ১৯৭৪ সনেই বাংলাদেশ উপলব্ধি করতে পারে যে তার
সীমানা থেকে মাত্র ১১ মাইল দুরে অবস্থিত ব্যারাজের পানি প্রত্যাহারের ফলে ভাটিতে বাংলাদেশে গঙ্গার পানি
প্রবাহ কখনও অর্ধেকে আবার কখনও প্রায় শুন্যের কোঠায় গিয়ে দাঁড়ায়।
১৯৭৬ সনে ফারাক্কা ব্যারাজের কার্যকারিতা পূর্ণমাত্রায় শুরু করার পর ভাগিরথী নদীই নয়, উজানে বিহার ও উত্তর
প্রদেশে স্থানে স্থানে পানি প্রত্যাহার করা শুরু হলো। ভারতের আশ্বাসের ব্যত্যয় ঘটায় বাংলাদেশের ৮০টি নদীর
পানি প্রবাহ কমে গিয়ে বিপদাপনড়ব নিু পর্যায় চলে গেল এবং ১১টি নদীর, বলতে গেলে, মৃত্যু ঘটল।
(২) তিস্তা ব্যারাজ:
১৯৯০ সনে ভারতের তিস্তা নদীতে ব্যারাজ নির্মান করার ফলে বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজের কার্যকারিতা সম্পূর্ণ
বিকল হয়ে পড়ে।
(৩) একাধিক দেশে প্রবাহিনী সংযোগ (রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ):
(৩.০১) উজানে হিমালয়ের পাদদেশ দিয়ে প্রবাহিত উত্তর ভারতের ১৪টি নদী সংযোগ পরিকল্পনা, ‘উজানের রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ’ নামেই অভিহিত হয়ে আসছে।
(৩.০২) অপরদিকে ভাটিতে গঙ্গা ও ব্রহ্মপূত্রসহ ১৬টি উপদ্বীপিয় নদীর সংযোগ, ‘ভাটির রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ’ নামে পরিচিত। আসল উদ্দেশ্য হলো ব্রহ্মপুত্রের পানি মূলত: প্রত্যাহার করে বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, অন্ধ্র, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ও চেনড়বাইতে সরবরাহ করার পরিকল্পনার অভিব্যক্তিমাত্র। ভারত ইতোমধ্যে দুইটি বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও গঙ্গার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করে দক্ষিণ
ভারতে নেয়ার পরিকল্পনার কর্মকান্ড শুরু করেছে। নেপাল অবশ্য বাঁধের জায়গার বিনিময়ে বিদ্যুৎ ও পানি পাবে বলে নিঃসন্দেহে বলা যায়। কিন্তু বাংলাদেশ কি পাবে ? বস্তুতঃ কিছুই না, বরং ফারাক্কার ভাটিতে পানি প্রবাহ আরো হ্রাস পাবে এবং বাংলাদেশ আরো মরুময় হয়ে উঠবে।
‘ভাটির রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ’ এর ফলে উত্তর ও দক্ষিণের পরিবর্তে পূর্ব-পশ্চিমের প্রবাহ ধারায় রূপান্তরিত হবে। ব্রহ্মপুত্রের গড় পানি প্রবাহ হয়ে থাকে প্রতি সেকেন্ডে ৬০০০ কি:মি: অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমের ছয় মাসে মোট প্রবাহের পরিমাণ হবে ২০০ বিলিয়ন কি:মি ।
“ভাটির রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ” এর কার্যকারিতা যদি কখনো শুরু হয় তাহলে উজানে ব্রহ্মপুত্রের পানি যথেষ্ট পরিমাণে প্রত্যাহার করার ফলে বাংলাদেশে ‘জি,এম,বি,’ (অর্থাৎ গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র) অববাহিকায় এক মহা বিপর্যয় নেমে আসবে। তখন প্রাকৃতিক ভারসাম্যে সর্বস্তরে যথা, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, প্রানিকূলে ও উদ্ভিদকূলের মহাক্ষতি হবে।
এক রীট পেটিশনের উপর ভারতের সুপ্রীম কোর্ট ২০০২ লে ‘রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ’ এর পক্ষে রায় দিলেও
ভারত সরকার ও তার রাজনৈতিক অঙ্গন, ভূ-রাজনীতি, আঞ্চলিকতার বৈচিত্র ও ব্যতিক্রমধর্মী চাহিদা, প্রচুর অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা, এবং যুৎসই কারিগরি তত্ত্ব-উপাত্ত্বের অভাবে প্রকল্পটিতে তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে।
১৯৯৯ সনে ভারতের পানি সম্পদ জাতীয় কমিশনের এক প্রতিবেদনে উলে−খ রয়েছে যে “ভাটির রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ” প্রকল্পের বড় তিনটি নদীর পানি বন্টনের হিস্যা বাংলাদেশের সঙ্গে সংশি−ষ্ট থাকায় সেগুলির ভারতীয় হিস্যার অংশে আগামী ৫০ বৎসরেও ভারতের জন্য কোন লাভজনক ফল বয়ে আনবে না। এখানে অবগতির জন্য উলে−খ করা প্রয়োজন যে ব্রহ্মপুত্রের পানি উজানে ২০% প্রতাহৃত হলে (ভারত যদিও চায় ৪০%) বাংলাদেশের প্রায় ১০০টি জীবন্ত নদী, ব¯ত্তত: মরানদী হয়ে যাবে।
(৪) ব্রহ্মপুত্রের উপর চীনের দৃষ্টি:
চীনের তিব্বতে ইয়ারলুং ও সাংপু নদীর সংযোগস্থলে বড় বাঁধ (বা ব্যারাজ ?) নির্মাণ করে বৎসরে ২০০ বিলিয়ন কি: মি: পানি প্রত্যাহার করে ‘‘ইয়েলো’’ নদীতে নিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা চীন নিয়েছে। বলাবাহুল্য যে এই পরিমাণ পানি ব্রহ্মপুত্রের বার্ষিক প্রবাহের প্রায় অর্দ্ধেক। ফলে চীনের বাঁধের কার্যকারিতা শুরু হলে ভারতই বা কত পানি পাবে এবং বাংলাদেশকেই বা কতটা দেবে।
এক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই ভাটিতে হওয়ায় ঐক্যবদ্ধভাবে কৌশলে সামাল দিতে হবে। এখানে ভারতের ভুললে চলবেনা যে টিপাইমূখ ড্যাম ও ফুলেরতল ব্যারাজ আলোচনায় বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখলে অনুরূপ ভাটি অঞ্চলের প্রশড়ব চীনের বাঁধের ভাটি অঞ্চল ভারতের বেলায়ও চীন-ভারত আলোচনায় স্থান পেতে পারে বিধায় তখন ভারতের জোরদাবীতে ভাটা পড়তে পারে।

(৫) টিপাইমূখ ড্যাম ও ফুলেরতল ব্যারাজ:
(৫.০১): আন্তর্জাতিক নদী গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপত্রের ভাটিতে সর্বশেষে বাংলাদেশ। ‘ভাটির রায়পেরিয়ান নদী সংযোগ’ বাস্তবায়িত হলে এবং বোঝার উপর শাকের আটির মত টিপাইমূখ ও ফুলেরতল ব্যারাজের
কার্যকারিতাও যদি শুরু হয়, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা এক মহাদূরবস্থায় পতিত হবে। অচিরেই বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিনত হয়ে মানুষের বাসের অযোগ্য হয়ে এক চতুর্মূখী আক্রমনে জনমানব শূন্য ভূমি হবে।
উত্তর-পূর্ব-পশ্চিমের আক্রমন হবে নদীভিত্তিক অর্থাৎ হয় পানির অভাব নয়ত বন্যা। দক্ষিনের আক্রমন হবে সমুদ্রভিত্তিক যেমন বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় ও
জলোচ্ছাসে লবনাক্তময় পানিতে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে গগনচুম্বী। বলার অপেক্ষা রাখে না যে বৈশ্বিক উষ্ণতার মূল কারন হলো সি,এফ,সি জাতীয় গ্যাসের নির্গমনে দূরনীলিমায় “ওজন” গ্যাসের স্তর হালকা পাতলা হয়ে
যাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া। উলে−খ্য যে সি,এফ,সি গ্যাস নির্গমনের জন্য মূলত: দায়ী কিন্তু শিল্পোনড়বত দেশগুলো।
(৫.০২) : ড্যাম ও ব্যারাজ:
(ক) ড্যাম ও ব্যারাজ উভয়কেই বাংলায় বাঁধ বলা হয়ে থাকে। আসলে ড্যামের উদ্দেশ্য হলো মূলত: জলবিদ্যুৎ উৎপাদন। যেমন কাপ্তাই ড্যাম।
ব্যারাজের উদ্দেশ্য হলো পানি ধারন করে সুবিধামত প্রত্যাহার করে অন্যত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া। যেমন-ফারাক্কা ব্যারাজ। আরো উলে−খ্য যে পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা না থাকায় কেবল জলবিদ্যুতের জন্য ড্যাম হতে
টারবাইন ও স্পীলওয়ে গেইট দিয়ে নিস্কাসিত পানির পরিমান বৎসরভিত্তিক, বৃষ্টিপাত সাপেক্ষে,
অপরিবর্তনীয়তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায়, মোটামুটি একরকমই থাকবে।
কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব প্রতীয়মান হয় ঋতুভিত্তিক বৃষ্টিপাত ও তার পরিমান, রবাইন ও স্পীলওয়ে গেইট দিয়ে ড্যামের পানি নিয়ন্ত্রণ এবং জলাধারের পানির লেভেল নিয়ন্ত্রণের ফলে ঐ ড্যামের ভাটিতে পানি প্রবাহে প্রভাব
পড়ায় পানির পরিমান যখন উঠানামা করে থাকে। ফলশ্র“তিতে ড্যামের ভাটিতে হয় পানির অভাব নয়ত অতিরিক্ত পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে।
(খ) পক্ষান্তরে ব্যারাজের উদ্দেশ্য হলো পানি প্রত্যাহার করা। তবে সবকিছু নির্ভর করবে কতটা পানি, কোথায় এবং কখন প্রতাহৃত হবে, এবং পানির কত অংশ নদীর ব্যারাজ দিয়ে ভাটিতে নিস্কাসিত হবে তার উপর দৃষ্টি রাখা। ফারাক্কা ব্যারাজের পানি প্রত্যাহারের লক্ষ্য ছিল কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বৃদ্ধি। কিন্তু উজানে যেখানে সেখানে পানি প্রত্যাহার করার ফলে ভাটিতে পানি প্রবাহ এত সীমিত ও সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে যে লােেদশে ১৬টি জেলায় মরুপ্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে এবং দেশের এক তৃতীয়াংশের জীবন প্রণালী ব¯ত্তত: ভেঙ্গে পড়েছে।
(৫.০৩) : টিপাইমূখ ড্যাম কিন্তু একটি মেগা ড্যাম। ড্যামটির প্রাথমিক প্রস্তাব ভারত ১৯৭৯ ও ১৯৮৩ সনে দিয়েছে বলা হলেও অদ্যাবধি বিস্তারিত কোন তত্ত্ব-উপাত্ত্ব বাংলাদেশকে প্রদান করেনি। ২০০৩ সনে ভারত মনিপুর প্রদেশের দক্ষিন-পশ্চিমে বারাক ও তুইভাই নদীর সংযোগস্থলের ১/২ কি:মি: ভাটিতে টিপাইমূখে ড্যাম নির্মাণের প্রস্তাব
রাখে। কিন্তু মনিপুর ও মিজুরাম প্রদেশের অভ্যন্তরীণ জোড়ালো প্রতিবাদ ও সীমানা পেড়িয়ে প্রতিবাদমুখর আওয়াজে ড্যাম নির্মাণে ভাটা পড়ে। ইত্যোবসরে ২০০৪ সনে পূর্ব পরামর্শ ছাড়া ভারত এগুবে না বলে
বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে। কিন্তু ২০০৫ সনেই ভারত টেন্ডার আহবান করে, ২০০৬ সনে খুলে এবং ২০০৮ সনে নকশা চুড়ান্ত করে, জানামতে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নিয়ে, ২০০৮ সনেই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে। ২০১২ সনে নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে।

নিম্নে টিপাইমূখ ড্যামের উজান-ভাটির কিছু উপাত্ত্ব পরিবেশন করা হলো:-

(ক) পৃথিবীতে এটি একটি অন্যতম বৃহত্তম পাথরের ড্যাম।
(খ) উচ্চতা = ১৬৬ মি: (সমূদ্রপৃষ্ঠ হতে উচ্চতা = ১৮০ মি:, জলাধারের লেভেল হতে উচ্চতা = ১৭৮ মি: এবং সর্বনিম্ন ড্র ডাউন লেভেল = ১৩৬ মি:)
(গ) দৈর্ঘ্য = ৩৯০ মি:
(ঘ) জলাধারের ধারন ক্ষমতা = ১৬ বি: কি: মি:
(ঙ) পাথরের ওজন = ২৫ মি: মে:ট: (আনুমানিক)
(চ) ড্যামের অবস্থান = ২০০ কি:মি: বাংলাদেশ সীমানা থেকে উজানে
(ছ) মনিপুরের পাহাড়ের উৎস হতে বারাক ও তুইভাই (ভারত) এবং সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনা (বাংলাদেশ) হয়ে বঙ্গোপসাগরের মোহনা পর্যন্ত দৈর্ঘ্য = ৯৪৬ কি:মি: (ভারত = ২৭৭ কি:মি: এবং বাংলাদেশ = ৬৬৯ কি:মি:)
(জ) ভারতে পানি নিমজ্জিত এলাকা = ২৮৬ বর্গ কি:মি:
(জ-১) ৮টি গ্রাম সম্পূর্ণ নিমজ্জিত
(জ-২) ৪০,০০০ বসতিবিহীন
(জ-৩) ৯০টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত
(জ-৪) ২৭,০০০ হেক্টর চাষাবাদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত
(ঝ) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা = ১৫০০ মে:ও: কিন্তু আপাতত: উৎপাদন করা হবে = ৪১২ মে:ও:
(ঞ) বাংলাদেশের ৮% পানি আসে বারাক নদীর প্রবাহ হতে।

(৬) ফুলেরতল ব্যারাজ:- বিষয়টিকে এখনও “হাশ-হাশ” ভাবে রাখা হয়েছে। তেমন কোন তত্ত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া উক্ত ব্যারাজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অদ্যবধি কিছু বলা হয়নি বললেই চলে। ব্যারাজটি তির্যকভাবে ১০০ কি:মি: ভাটিতে অবস্থিত এবং সিলেটের সীমানায় আমলশিড থেকে উজানে প্রায় ১০০ কি:মি: তির্যকভাবে অবস্থিত।
সহজেই অনুমিত যে ভারত হয়ত টিপাইমূখ ড্যামের পানি নিয়ন্ত্রণ করে পানি প্রত্যাহার করে প্রস্তাবিত ফুলেরতল ব্যারাজে নিয়ে যাবে। সময়ের ব্যাপার মাত্র। ফলে সুরমা-কুশিয়ারা ও মেঘনার অববাহিকায় বাংলাদেশের প্রায় ১/৩ অংশ ব্যাপকভাবে পর্যুদস্ত হবে এবং প্রকৃতির বর্তমানের নান্দনিক বৈচিত্র সম্পূর্ণ বিধবস্ত ও ধবংস হয়ে যাবে।

(৭) ভূমি কম্পের ঝুঁকি:- আমাদের দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সুরমা অববাহিকা ভূমিকম্পের এলাকা বা জোন-১ এর মধ্যে অবস্থিত। “ডাউকি ফল্ট্ সিস্টেম” উক্ত জোন-১ নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে পূর্ব সিলেটের এই “ডাউকি ফল্ট্ সিস্টেম” এবং গভীরে সনিড়ববেশিত সিলেট ফল্ট্ ও জাফলং থ্রাষ্ট্, নাগা থ্রাষ্ট্ ও ডিসাং থ্রাষ্ট্ কাছাকাছি থাকার কারনে
ভূমিকম্পের ঝুঁকি অত্যাধিক। বেসিক কো-এফিশিয়েন্ট্ (মৌলিক সহ-সঙ্ঘটক) হলো ০.০৮। সহজ কথায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি মাত্রাতিরিক্ত।

বলাবাহুল্য যে টিপাইমূখ ড্যাম ও নিকটবর্তী এলাকার ভৌগলিক ও ভূ-তত্ত্বের আলোকে বারাক নদীর পানি নিষ্কাশন পদ্ধতি এবং শিলা-গঠনের প্রেক্ষাপটে ভূমিকম্পের ঝুঁকির গোটা বিষয়টি আরও প্রাধান্য পাবে। বারাক নদী ও তার মুখোমুখি তুইভাই নদী কিন্তু বারাক-মাকরু থ্রাষ্ট্ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। এদিকে বারাক নদী ও তার উপ-নদীসমূহের
গতিও আবার ফল্ট্স্ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বিধায় বারাক নদীর গতির পরিবর্তন ঘটে এবং ‘ফল্ট্’গুলো তখন ভূমিকম্পের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে দাঁড়ায়।

মৌলিক কো-এফিশিয়েন্ট এর মান উচ্চ ঝুঁকির ০.০৮ হওয়ায় এলাকার বিগত ২০০ বৎসরের ইতিহাসের আলোকে বিশে−ষণ করলে এবং টিপাইমূখ ড্যামের অক্ষ (মেরুদন্ড) ফল্ট্ লাইনে পড়ায় ভূমিকম্পের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে যেতে পারে বিধায় রিকটর স্কেলে ৭ এর অধিক মানের ভূমিকম্প হলে খেয়াল রাখতে হবে যে,-
১৬ বি: কি: মি: জলাধারের পানি, উজান হতে আরো পানির ধস এবং ২৫ মি:মে:ট: ওজনের পাথর খানখান হয়ে আছড়ে আছড়ে বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হবে এবং ড্যামের ভাটিতে সেদিন রোজ কেয়ামতের মত কিছু একটা মহাবিপদ ও প্রলয় হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হবে।

(৮) মেগা ড্যাম টিপাইমূখের প্রভাব:-
(৮.০১) ফুলেরতল ব্যারাজের কার্যকারিতা শুরু না হলে টিপাইমূখ ড্যামের অবস্থান: ধরে নেয়া যেতে পারে যে ড্যামের পানি উজানে কোথাও প্রত্যাহৃত হবেনা। অপরিবর্তনীয়তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় গোটা বৎসরের পানি প্রবাহের পরিমানে তেমন কোন ব্যত্যয় ঘটবে না।
কিন্তু ঋতুভিত্তিক বৃষ্টিপাত, বিদ্যুৎ উৎপাদনে পানির চাহিদা ও জলাধারে পানির পরিমিত লেভেল সংরক্ষনে এবং টারবাইন ও স্পীলওয়ে গেইট দিয়ে পানি ছাড়ের পরিমানের উপর নির্ভরশীল ভাটিতে পানি প্রবাহের পরিমানে তারতম্য দেখা দিবে। ফলে সনাতনকালের প্রাকৃতিক প্রবাহ একটি নিয়ন্ত্রিত কৃত্রিম প্রবাহে রূপ নেবে। এক্ষেত্রে নিুোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে:-
(ক) জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লেভেল ৪১২ মে:ও: (মে হয় ফুলেরতল ব্যারাজ চালু করার পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন এই লেভেলেই রাখা হবে।)
(খ) জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লেভেল ১২০০ মে:ও: (অর্থাৎ ১৫০০ মে:ও: এর ৮০%)।
(গ) বর্ষা, বর্ষাউত্তর ও শীত মৌসুমের বৃষ্টিপাত।
(৮.০২) প্রথম দৃশ্যপট: জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৪১২ মে:ও: এবং শুধু ড্যাম (ব্যারাজের কার্যকারিতা থাকবেনা):-
(ক) বর্ষাকাল: ভরা বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি জলাধারে আটকে রাখা হবে। ফলে বাংলাদেশ সাধারণত: বর্ষায় যে পরিমান পানি পেয়ে আসছে তার চেয়ে কম পাবে বলেই ধরে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু অতিমাত্রায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে বর্ষায়ও যদি ড্যাম দিয়ে বেশী পানি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তাহলে বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা অবশ্যই থাকবে। উলে−খ্য যে, ড্যাম থেকে পানি দুভাবে ছেড়ে দেয়া যায়, যথা টারবাইনের পানি ও স্পীলওয়ে গেইট দিয়ে পানির ছাড়। ভাটিতে নদীতে বালুর চর (সিলটেশন) পড়ে ভরে যাবে তা আর এখানে বলার অপেক্ষা রাখে না।
(খ) বর্ষা উত্তরকাল: বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে (যেমন সি,এফ,সি গ্যাস আকাশে নি:সরণ ইত্যাদি) বিশ্বব্যাপী আবহাওয়ার আমুল পরিবর্তন অহরহ ঘটছে। অনেকটা বিনা দোষে আমরাও এই ভয়াবহতার শিকার। আমাদের দেশেও এখন বর্ষা উত্তরকালে বৃষ্টিপাতের চারিত্রিক বৈশিষ্টের পরিবর্তনে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হতে দেখা যাচ্ছে। এ কারনে এ সময়ে ড্যাম
হতে অতিরিক্ত পানি ভাটিতে ছেড়ে দেয়া হবে। বাংলাদেশে তাই এ সময়ে অনেকটা অস্বাভাবিক বর্ষাউত্তর বন্যা দেখা দিবে বিধায় বিশেষ করে সিলেটের হাওর অঞ্চলে অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। দেখা যাবে যে সেখানে আর চাষাবাদ সম্ভব হবে না। বিশেষ করে বুরোধানের জন্য আগাম চাষ অসম্ভব হয়ে যাবে। ব্যহত হবে কৃষি খামার।
(গ) শীতকাল: এ সময়ে ড্যামের জলাধারের পানির লেভেল নির্ভরশীলতা ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার (৪১২ মে:ও:) পূর্ণ ব্যবহারের প্রেক্ষিতে ভাটিতে হয়ত আমরা যৎসামান্য পানি বেশী পেতে পারি। তবে সবকিছুই নির্ভর করবে ড্যাম থেকে কতটা পানি ভাটিতে ছেড়ে দেয়া হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন অন্ধ হয়ে বসে না থাকি। কারন
শীতে অস্বাভাবিক অনাবৃষ্টি হলে জলাধারের ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত পানি তখন আটকিয়ে দেয়া হবে এবং এমন কি টারবাইন অপারেশনে ব্যত্যয় ঘটলে আমাদের পানির হিস্যা আরো কমে যাবে। যে মৌলিক বিষয় বস্তু এখানে প্রনিধানযোগ্য তা’হল আল−াহ্ তায়ালার সৃষ্ট প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ মানুষের গড়া ড্যামের কারনে পানির প্রবাহ এক প্রতিকূলমূখীরূপ নেবে। এবং ভাটিতে পানি প্রবাহের জন্য ভারতের উপর নির্ভরশীল হতে
হবে। পানি প্রবাহে চারিত্রিক বৈশিষ্টের পরিবর্তনের কারনে বাংলাদেশে ভয়াবহ ক্ষতির খাতসমূহের মধ্যে নিুে কয়েকটি
তুলে ধরা হলো:
কৃষি, নৌপরিবহন (প্রবাহ এবং বালুরচর), পানি প্রাপ্তি, মৌসুমউত্তর বন্যা, মাৎস্য সম্পদ (মাছ কিন্তু ড্যামের ভাটিতে বিনা পাসপোর্টে আন্তর্জাতিক নদী দিয়ে বাংলাদেশের হাওর-বিলে ডিম পাড়া বা অন্যান্য কারনে তখন আসতে পারবে কি ?), মোদ্দা কথা বাংলাদেশে এক মহাপ্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটবে।
(৮.০৩) দ্বিতীয় দৃশ্যপট: এক্ষেত্রে পরিস্থিতি প্রথম দৃশ্যপটের মতই অনেকটা হবে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা থাকবে ১২০০ মে:ও:। পানি প্রবাহের চারিত্রিক বৈশিষ্টের ভারসাম্যে এ ক্ষেত্রে আরো ব্যত্যয় ঘটবে বিধায় উপরোক্ত পরিস্থিতির তারতম্যের ব্যাপকতা আরও স¤প্রসারিত হতে পারে।
(৮.০৪) তৃতীয় দৃশ্যপট: এক্ষেত্রে ড্যাম ও ব্যারাজ দুটোর কার্যকারিতা বহাল থাকবে। এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ১২০০ মে:ও: করা হবে বলে ধরে নেয়া যেতে পারে। ফলে জলাধারের পানি সংরক্ষনের পরিমান বেশী হবে।
(ক) বর্ষাকাল: পানি প্রত্যাহার করে ড্যামের ভাটিতে (তির্যক কোণে) ফুলেরতল ব্যারাজে নেয়া হবে। সে কারনে বাংলাদেশের হিস্যা ভাটিতে আরো কমে যাবে, কেবলমাত্র অতিমাত্রায় অতিবৃষ্টি হলে এবং ড্যাম ও ব্যারাজের জলাধারে সংকুলান না হলে বাড়তি পানি তখন ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে বিধায় বন্যার আবির্ভাব ঘটতে
পারে।
(খ) বর্ষা উত্তরকাল: বৃষ্টিপাতের পরিমান, ড্যাম ও ব্যারাজের ধারনক্ষমতার লেভেল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তায় হয়ত অতিরিক্ত পানি প্রবাহ ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে ছেড়ে দেয়ার প্রশড়ব নাও আসতে পারে বিধায় হাওর-বিলে জলাবদ্ধতা হয়ত নাও হতে পারে, বলা বাহুল্য যে, অতিমাত্রায় অতিবৃষ্টি হলে পরিস্থিতি উল্টো হয়ে যেতে পারে এবং তখন জলাবদ্ধতা হতে পারে।
(গ) শীতকাল: ফুলেরতল ব্যারাজের জন্য প্রচুর পরিমান পানি প্রত্যাহারের ফলে ভাটিতে বাংলাদেশের ভাগ্যে কিছু নাও জুটতে পারে। বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ হয়ত তখন মরুভূমিসম হয়ে যেতে পারে।
(৯) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন: ড্যামের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৫০০ মে:ও: এবং অর্জিত ক্ষমতা, হয়ত, ৮০% নির্নিত হলে, মোট উৎপাদন ১২০০ মে:ও: হবে। কিন্তু আপাতত: উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে মাত্র ৪১২ মে:ও: । কিন্তু কেন ? তাই যথেষ্ট ঔৎসুক্যের অবকাশ রয়েছে ! তদোপরি ৪১২ মে:ও: থেকে মনিপুরের জনগনকে সান্তনা পুরস্কার
হিসেবে ৪০ মে:ও: বিনামূল্যে দেয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তাহলে ভারত কতটা বিদ্যুৎ বাংলাদেশের নিকট বিক্রয় করতে পারবে এবং কি মূল্যে, যেমন ড্যাম থেকে বাংলাদেশের সীমানা পর্যন্ত ট্র্যান্স্মিশন ব্যয় হিসাবে ধরাসহ সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় এসে যাবে।
সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় মান্যবর রাষ্ট্রদূত কিছু বিষয়ে মন্তব্য করেছেন:
যেমন,
(ক) ড্যাম হলে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবে না।
(খ) ভারত কোন ব্যারাজ নির্মাণ করবে না। (স্থান ঊহ্য রেখেছেন অর্থাৎ ফুলেরতল হবে কি হবে না বা ড্যামেরস্থলে হবে কি হবে না কিছুর উলে−খ নেই।)
(গ) তিনি আরো বলেছেন যে বাংলাদেশের অনেক রাজনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ তেমন একটা পড়াশুনা না করেই অনেকটা না বুঝেই “আউল/ফাউল” উক্তি করেছেন।
ঠিকইত! আমাদের এবিষয়ে প্রজ্ঞার ঘাটতি কমবে কি করে ? তিনি বা তাঁর সরকার কি কোন উপাত্ত্ব সরবরাহ করে সে সুযোগ দিয়েছেন ? মহোদয়, দয়া করে আপনার সককারকে সত্ত্বর সংশি−ষ্ট সকলকে উপাত্ত্ব পাঠিয়ে দিতে অনুরোধ জানাবেন এবং দেখুন না, যে কোন কোণ্ থেকে “আউল/ফাউল” উক্তির প্রতিউক্তি দেয়ার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে
কিনা ?
(ঘ) স¤প্রতি তিনি একটি সেমিনারে আরও বলেছেন যে টিপাইমূখ ড্যামের বিষয়টি প্রথমে ১৯৭২ সনে আলোচনায় আনা হয়, পরবর্তী পর্যায়ে বিশেষজ্ঞবৃন্দের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সময়ে সময়ে তা পরামর্শ করা হয়।
জাতি সঙ্ঘের প্রসঙ্গ উলে−খ করে তিনি আরও বলেন যে “ইউ-এন এর কনভেনশন” এর “নন ন্যাভিগ্যাব্ল্ ইউসেজ্ অব ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটারকোর্সেস্” কে (বাংলায় বলা যেতে পারে নৌপরিবহন ব্যতীত আন্তর্জাতিক নদীসমূহের অন্যান্য ব্যবহার) আইনে রূপ দিতে হলে কমপক্ষে ৩৫ দেশের স্বাক্ষর প্রয়োজন অথচ অদ্যাবধি মাত্র ১৭টি দেশ, তাও আবার বাংলাদেশ ও ভারত ব্যতীত, স্বাক্ষর করেছে।
খুব ভাল কথা, তবে ভারতের নৈতিক অবস্থান কি ? জানা দরকার। তাছাড়া “বার্লিন রুল অন ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার রিসোর্সেস্ (২০০৪)” এর কথাটা বেমালুম তাঁর মনে ছিল না বলে মনে হচ্ছে !
সার্ক দেশগুলোর প্রটোকল অনুযায়ী অন্তত: দ্বিপাক্ষিক আলোচনার যে প্রয়োজন তাও কি মনে ছিল না ? ১৯৯৬ এর গঙ্গা পানি বন্টন চুক্তিতে নবম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে ভারত ও বাংলাদেশকে, তাদের মধ্যে যে কোন যৌথ নদীর পানি বন্টনের ক্ষেত্রে সমঝোতায় আসতে হবে। বোধ হয় তা তাঁর স্মরণ ছিল না !
টিপাইমূখ ড্যামের অবস্থান ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকায় ঝুঁকির শীর্ষে রয়েছে সে বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত এত তত্ত্ব- উপাত্ত্ব থাকার পরও তা বাস্তবতার নিরিখে হয়নি বলে নিছক এক কাল্পনিক বা প্রাক্কলিত অনুমান বলে অভিহিত করেছেন। এ যেন বায়সের ময়ূর-সাজার-প্রচেষ্টাসূলভ গনৎকারীর স্বপড়বাচারন !
স¤প্রতি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ভারত থেকে কিছু কিছু তত্ত্ব-উপাত্ত্ব পেয়েছেন বলে জানালেও আজ পর্যন্ত তা জাতি,
সংসদ এবং বিশেষজ্ঞবৃন্দের দৃষ্টিতে আনা হয়নি।
তাছাড়া বেশ কয়েকজন মাননীয় মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী কিছু কিছু অবাস্তব ও অপরিপক্ক উক্তি করেছেন, যেমন “ড্যাম নির্মাণ শেষে কি ক্ষতি হয় তা তখন দেখতে পারব”
“আমরা সমর্থন দেবো যদি দেখা যায় যে বাংলাদেশের অনুকূলে কিছু উপকার আসবে।”
“এটি একটি ড্যাম মাত্র এবং আমরা জলবিদ্যুৎ পাব।”
মহান আল−াহ্ই আমাদের রক্ষা করুন। তবে কিছু কিছু বিষয় আমাদের মনে দোলা দিচ্ছে:
(ক) যেহেতু ড্যাম ও জলাধারের ধারণ ক্ষমতা অনেক বড়, তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদন এখন মাত্র ৪১২ মে:ও: এ রাখা হয়েছে কেন ?
(খ) যেহেতু বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৫০০ মে:ও: এ ধার্য্য করা হয়েছে, উৎপাদন এখন বেশী করা হলে, ট্রান্স্মিশন ব্যয় সাপেক্ষে, বাংলাদেশেই তা রপ্তানী করা যেত।
(গ) ফুলেরতল ব্যারাজের বিরাট জলাধারের পানি কোথা থেকে আসবে ?
(ঘ) ব্যারাজ নির্মাণের কাজে অগ্রগতি কিসের জন্য ?
আমরা হয়ত অতি পুরুনো প্রবাদটি ভূলেই গিয়েছিলাম‘কাক তার খাবার নিজের চোখ বন্ধ করে ছনের ঘরের চালে লুকিয়ে রেখে ভাবে কেউ বোধ হয় আর দেখতে পারল না।’
খেলাটি জমবে ভালো যদি ভারত কখনো ইঙ্গিত দেয় যে,
(ক) বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রয় করতে হলে উৎপাদন ক্ষমতা ১২০০ মে:ও: এ উনীড়বত করতে হবে। (অতি মূল্যে
বা চড়া মূল্যে কিনতে হতে পারে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।)
(খ) সিলেটের হাওর-বাওর-বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্ষাউত্তর মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে ফুলেরতল ব্যারাজে নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে ।
(গ) ড্যাম ও ব্যারাজের জলাধারে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পানির পরিমান সুবিধাজনক পর্যায়ে রেখে শীত মৌসুমে ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করা যেতে পারে । আহা ! কি সুন্দর প্রস্তাব হবে, নয় কি ?

(১০) পানি প্রবাহের বন্টন: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ নদীর পানি বন্টনের প্রশড়ব প্রায় ৫৪ নদীর বেলায় প্রযোজ্য হলেও গঙ্গা ছাড়া আর কোন নদীর ক্ষেত্রে পানি বন্টন চুক্তি নেই।
সাধারণত: পানির হিস্যা যৌথ নদীর শেষ প্রান্তে সমুদ্র মোহনা সংলগড়ব অববাহিকার বেলায় বেশী হয়ে থাকে। ফলে ভারতের তিস্তা ব্যারাজ স্থাপনে বন্টনের অংশ হবার কথা, ভারত = ৪০%, বাংলাদেশ = ৪০% এবং খোদ নদীর হিস্যা ২০%। ভারত কিন্তু নদীর অংশ থেকে আরও ১০% নিয়ে মোট ৫০% চাচ্ছে।

(১১) বিশ্বে জলবিদ্যুৎ ড্যামের সমস্যা: বিশ্বের প্রায় ৭৯টি দেশের উপর জরীপ করে দেখা গিয়েছে যে প্রায় ১০০০টি ড্যামে তেমন কোন উপকার হয়নি। বরং কোথাও কোথাও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

(১২) ব্যয় ও উপকারের অনুপাত (কস্ট বেনেফিট র‌্যাসিও) এবং পরিবেশবান্ধব অনুভূতি: জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সবচেয়ে সস্তা ও পরিবেশবান্ধব সে ধারণা আজ সকলের মধ্যেই জন্ম নিয়েছে। আসলে সঠিকভাবে বিশে−ষণ করলে ভিনড়বরূপ দৃশ্যপট আবির্ভূত হবে। এটা ঠিক যে টারবাইন চালিয়ে উৎপাদন সবচেয়ে কম এবং পরিবেশবান্ধব কিন্তু পেছনের ইতিহাস কি কেউ চিন্তা করেছি ? যেমন, বহু বসতির উৎখাত হয়েছে, আবাদি জমি বিলুপ্ত হয়েছে, উদ্ভিদকূল ও প্রাণীকূলের নিধন বা বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। এক কথায় প্রাকৃতিক চরিত্রের বৈশিষ্টে এক ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সব কিছুর হিসাব গণনায় ধরলে “কস্ট বেনেফিট র‌্যাসিও” নেতিবাচক হয়ে যাবে। অথচ ব্যাপারটি সকলের নাকের ডগার উপর দিয়ে নিত্য ঘটে যাচ্ছে। এখানে আরো বলা যায় যে বড় বড় ড্যামের বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা ধবংসযজ্ঞ ভাটির রায়পেরিয়ান দেশগুলির বেলায়ও অপ্রতিরোদ্ধ। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
আরো উলে−খ করা প্রয়োজন যে কাপ্তাই লেকের পানির গভীরতায় কত সম্পদ তলিয়ে গিয়েছে এবং সে কারনে আমাদের বিশেষ করে পাহাড়ী অঞ্চলের জনসম্পদের কত ক্ষতি হয়েছে তার পুনঃহিসাব করলে বুঝা যাবে কি হারিয়েছি ও বিনিময়ে কি পেয়েছি। নুতন আঙ্গিকে বিষয়টি আবার খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।

(১৩) জলবিদ্যুৎ ড্যামের বিকল্প:
(ক) জলবিদ্যুৎ ব¯ত্তত: নবায়নযোগ্য। কিন্তু অন্যান্য নবায়নযোগ্য বিকল্প ব্যবস্থা যেমন, উইন্ড্ মিল্স্, সোলার প্যানেল এনার্জি, জৈব জ্বালানী, জৈব গ্যাস এর বিষয়গুলো বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে চিন্তা করা যেতে পারে । উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে সোলার প্যানেল এনার্জিতে কোন ট্র্যান্সমিশন ব্যয় হবে না।
(খ) বিদ্যুতের লোড ম্যানেজমেন্ট করে সাশ্রয় করলে চাহিদার পরিমান কমে যেতে পারে।
(গ) সঠিক ও যথার্থ জরীপ করেও ‘কস্ট বেনেফিট র‌্যাসিও’ দেখে নেপালের সঙ্গে গঙ্গা নদীর প্রবাহের জন্য এবং চীন ও ভূটানের সঙ্গে ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহের জন্য জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের নিমিত্তে ভারত ও বাংলাদেশ মিলে সার্বিক স্বার্থে আলোচনা হতে পারে।
(১৪) আন্তর্জাতিক পানি আইন, বহু পাক্ষিক চুক্তি ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি:
(১৪.০১) আন্তর্জাতিক পানি আইন : আইনে অনেক ফাঁক ফোঁকর থাকায় আন্তর্জাতিক নদীর পানির হিস্যা বন্টনে রায়পেরিয়ান দেশগুলির মধ্যে তেমন কোন ইতিবাচক সফলতা আসছেনা।
প্রথম প্রশড়ব উত্থাপিত হয়ে থাকে যে বিষয়টি কি বহুপাক্ষিক না দ্বিপাক্ষিক ? ফলে যখন দুয়ের অধিক দেশ বিজড়িত,
তখন বহুপাক্ষিক আলোচনা অপরিহার্য হয়ে যায়।
(ক) “ ইউ-এন-কনভেনশন” : উক্ত কনভেনশনের “নন-ন্যাভিগ্যাব্ল্ ইউসেজ অব ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটারকোর্সেস্” এর অনুচ্ছেদ ৫ অনুযায়ী সকল রায়পেরিয়ান দেশগুলিকে যুক্তিসঙ্গতভাবে এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে পানি ব্যবহার করতে হবে এবং পানি সংরক্ষণেও যথেষ্ট নজর থাকতে হবে। পানি ব্যবহার যেন সর্বাধিক ব্যবহারযোগ্যতার
মাপকাঠিতে নিু ব্যয়ে হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। পানির অধিকার যেন অংশ গ্রহনের অধিকার এবং ব্যবহারের অধিকারও হয়। এমনকি সংরক্ষণ ও উনড়বয়নে সকলের কর্তব্যপরায়নতা থাকতে হবে। ফলে স্বাচ্ছ্যন্দে বলা যায় যে উজানের রায়পেরিয়ান দেশ ভাটির রায়পেরিয়ান দেশের সঙ্গে পরামর্শ না করে একতরফাভাবে কিছু করবে না।
(খ) “নো-হার্ম রুল”: ইউ-এন-কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ৭ অনুসারে কোন দেশ, বিশেষ করে উজানের দেশ, যৌথ নদীর বেলায় অন্য দেশের, বিশেষ করে ভাটির দেশ, ক্ষতি করতে পারবেনা।
(গ) বার্লিন রুল অব ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার রিসোর্সেস্ (২০০৪)”: এতে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে যে প্রত্যেকের পানি ব্যবহারের অধিকার থাকবে, শর্ত হলো পরিবেশ দোষিত করতে পারবে না। এমন কি যুদ্ধের সময়েও উক্ত অধিকার বলবৎ থাকবে। এমন কি পানির অবস্থান কোথায় এবং কে তার অংশিদার তাও বিবেচনায় আসবে না। কাজেই ইউ-এন-কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ৫ ও ৭ এবং বার্লিন রুলের প্রেক্ষাপটে টিপাইমূখ ড্যামের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনা করা ভারতের জন্য অপরিহার্য। না করার কোন অবকাশ নেই।
(১৪.০২) সার্ক চুক্তি: সার্ক একটি বহজাতিক-আঞ্চলিক ফোরাম, কিন্তু ভারতের অবস্থান এমন পর্যায়ে নেয়া হয়েছে যে গঙ্গার পানি বন্টন দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সমাধান করতে হবে। গঙ্গার রায়পেরিয়ান দেশ হল, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ। স্বাভাবিক ও যুক্তিসঙ্গত কারনে এবং আরো বৃহত্তর আর্থ-সামাজিক পরিবেশের স্বার্থে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার
মাধ্যমে সমাধান প্রনিধানযোগ্য, ও বাঞ্চনীয় এবং এমনকি অপরিহার্য।
(১৪.০৩) গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি (১৯৯৬) : এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি (১৯৯৬)। চুক্তির ৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে দুদেশের মধ্যে সকল যৌথ নদীর পানি বন্টনের সমস্যা দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সমাধান করতে হবে।
তাহলেত অবশ্যই টিপাইমূখ ড্যাম এবং ফুলেরতল ব্যারাজ (যদি পানি প্রত্যাহৃত হয়) এর সার্বিক বিষয় বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা, পরামর্শ ও ঐকমতের ভিত্তিতে সুরাহা করতে হবে।

(১৫) উপসংহার: দুয়ের অধিক রায়পেরিয়ান দেশের যৌথ নদীর জন্য কোন খন্ড খন্ড আলোচনা করে অথবা কোন দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করে খুব একটা ফলপ্রসূ কিছু করতে পারা যাবে না।
প্রয়োজন, বৃহত্তর স্বার্থে বহুপাক্ষিক আলোচনা ও সমঝোতায় পৌছানো। এমন কি শুধু দুটু দেশ সংশি−ষ্ট হলেও সার্বিক স্বার্থে বহুপাক্ষিক আলোচনা ও সমঝোতা অপরিহার্য। বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজন নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ সমন্বয়ে এবং চীন, ভূটান, ভারত ও বাংলাদেশ সমন্বয়ে ‘গ্র্যান্ড মাষ্টার প−্যান” এর উদ্যোগ গ্রহণ করে এক মহাপরিকল্পনা তৈরী করা।
তবে যে যে ক্ষেত্রে কেবল দুটু রায়পেরিয়ান দেশ সংশি−ষ্ট সে সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক আলোচনা তাদের মধ্যে হলেও গ্র্যান্ড মাষ্টার প−্যানে তা কি করে খাপ খাইয়ে নেয়া যায় তার ব্যবস্থা নেয়া। ভারত সেই লক্ষ্যে টিপাইমূখ ড্যামের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেড়ে কি করে তা গ্র্যান্ড মাষ্টার প−্যানে বৃহত্তর স্বার্থে সংযোজন করা যায় সে ব্যবস্থা নিলে গোটা অঞ্চলের সার্বিক উনড়বয়ন ও সৌহার্দের স¤প্রসারণ
অনায়াসে বাস্তবায়িত হতে থাকবে।
বাংলাদেশ ভারতের তুলনায় দুর্বল হলেও উদ্দীপনায় ছোট নয়, ছোট হলেও বাংলাদেশ যেমন সৌন্দর্য্যময়, ভারতকে
তেমনি বড় হবার কারনে মহত্ত্বের পরিচায়ক হতে হবে।
কবি গুরু রবীন্দ্র নাথের ‘দুই বিঘা জমি’ থেকে উদ্ধৃতি সবিনয়ে দেব এজন্য যে ভারত নিজেই যেন কবিগুরুর কথা
স্মরণে রেখে,-
“রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙ্গালের ধন চুরি”,-কবিগুরুর অন্তর্নিহিত দর্শন বাস্তবায়নে উদ্দীপ্ত হয়।


আব্দুল মানড়বান এফসিএমএ (ইউকে)
সাবেক প্রতিমন্ত্রী
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, এবং বস্র মন্ত্রণালয়
সাবেক সংসদ সদস্য (ঢাকা-২)
সাবেক চেয়ারম্যান, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
☼ ০৯/০৭/২০০৯ ইং দৈনিক নয়া দিগন্তে এবং ১১/০৭/২০০৯ ইং দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×