somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

~পুরোনো প্রেমপত্র পুড়ানোর আনন্দ = মুল্যহীন টাকা পুড়ানোর আনন্দ~

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হ্যা, আমিও প্রেমপত্র পুড়াই! রোজ রোজ পুড়ানোর মত বিশিষ্ট কেউ আমি নই কিন্তু, তবে প্রতিবছর এই দিনটায় পুড়ানোর মত অবশিষ্ট একটা হলেও জমিয়ে রাখি! কেউ জোক করেই বলেছিল যে কাউকে জীবনে কয়জন প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে প্রশ্ন করলে ভাব ধরে যেনো সেই মুহুর্তে তারা গণনা ভুলে যায়, কিংবা অগনিত, টু দ্যা পাওয়ার ওফ ইনফিনিটিতে অবস্থান তাদের পাওয়া প্রেম প্রস্তাবের সংখ্যা!! আবার তারা কয়জনকে দিয়েছে প্রস্তাব জানতে চাইলে এমন চাহনি নিপাত করেন, যেনো তারা "আমি তোমার প্রেমে পড়েছি বা আমি তোমাকে ভালোবাসি," কিভাবে লেখতে হয় তা জানেনই না! হা হা হা! এটা কিন্তু নারী-পুরুষ, উভয় এবং অধিকাংশের জন্যই প্রযোজ্য! কি, আপনার লাগেনি তো? যেচে বাড়িয়ে বলছি না, অন্তত বর্তমান সময়ের কিশোর-কিশোরী/যুবক যুবতীদের দেখলেই বুঝবেন, ইঙ্গিতটা কার দিকে পড়ছে! তাই বলে আবার বলে বসবেন না যানো, আমি বৃদ্ধ, আমার কি আর বয়স আছে? এটা কিন্তু পার পেয়ে যাবার মত যুক্তি হল না, আর ভালবাসাবিদরা বলেন ভালোবাসা বয়স মেনে চলে না! তাই অহেতুক রাগ নয়, আমার আবার কারো রাগ দেখতে ভালো লাগেনা, তবে আপনি পাল্টা প্রশ্ন করলে উত্তর দেব নিজের রাগটা দেখাতে ততটা মন্দ লাগে না!

ওহ, যা বলছিলাম। প্রেম নিয়ে জটিল তত্ব কিংবা ইকোয়েশন ফাদতে পারব না! তাই সহজ করেই বলি, প্রেমে পড়লে যে পত্র আদান- প্রদান করা হয়, তা পুড়ানোর সুখ জীবনে কখনো ভোগ করেছেন? উত্তর হ্যা হলে হাই ফাইভ নিয়ে নিন হাওয়া থেকে, আর না হলে বলব, কি করছেন কি? এতবড় শান্তির কাজ আপনি না করেই বসে আছেন? একটা কাহিনি শুনুন, তারপর আমার কথার মর্মদ্ধার করা সহজ হবে। ইউএস হিস্টোরিতে সিভিল ওয়ার নিয়ে পড়ার সময় জেনেছিলাম সিভিল ওয়ারের সময় এত পেপার মানি ছিল তখন, অর্থাত কাগজের ডলার প্রিন্ট করেছিল যে ডলারের মুল্য কমে গিয়েছিল। অতিরিক্ত ডলার প্রিন্ট এর ফলে সরকার ঠিক করল, কাগজের ডলার পুড়ানো হবে, তাতে শীতের থেকে বাচাও যাবে, আবার অতিরিক্ত ডলারের জন্য মুল্যহ্রাস ও কমবে। আমার একজন শিক্ষিকার মা তখন কাগজের ডলার পুড়ানোর চাকরি করেছিলেন বলে আমাদের শিক্ষিকা অভিহিত করেন। তা ভেবেই দেখুন, যে ডলার আয় করার জন্য সবাই পাগল হয়ে থাকত, তাকেই পুড়ানো হচ্ছিল প্রয়জনের সময বলতে গেলে অতিরিক্ত হয়ে গেছে সেই যুক্তিতে! আর প্রেমপত্র কি ছাড়?

এখন আসি আমার আলোচ্য বিষয়-বস্তুর সম্পর্কে বলতে! প্রেম পত্র পুড়ানোর আনন্দটা অযাচিত কিংবা মোটেও অবহেলিত নয়। একটু চিন্তা করুন আমার ডলার পুড়ানোর আনন্দের উধাহরনটা। হ্যা, হতে পারে ডলারের মুল্য একসময় অতিব ছিল, কিন্তু তখন প্রায় মুল্যহীন হয়ে পড়ছিল ডলার। আর ঐ ডলার গুলো বাচতে পারলে অদুর ভবিষ্যতে ডলারদের দাম কমে যেত আরো! তখন বেকায়দায় পড়ত সরকার। তাই অনেকে চাকরি পেল ডলার পুড়ানোর। এবং শুধু ডলার না, শুনেছি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির কারেন্সির রেট ও কমে যায়। তাই তারাও সরকার থেকে নয়, নিজ নিজ দায়িত্বে নিজেদের টাকা পুড়িয়েছিল শীতকালে শীতের প্রকোপ থেকে বাচতে সবাই সেখানে। এবার ভেবে দেখুন, যে টাকা কাজে দেয়না, বেচে থাকলে সমস্যা সৃষ্টি হয়, তাকে পুড়িয়ে ফেলার আনন্দ কি এতই হেলাফেলার বিষয়?

প্রেমপত্রের কথা বললে এখনকার সময়ে সবাই ততটা প্রেমপত্র আদান-প্রদান করে না। টেকনোলোজির কারবারে পুরো কনসেপ্টটা হারিয়ে যাচ্ছে! অথচ আমাদের সময়ে কেউ প্রেপে পড়লে দিস্ত দিস্তা পেজ ভরে লেখতে প্রেমপত্র! আহারে, সেসব দিন! তবে এখনকার কিছু নবীনরাও প্রেম প্রেম খেলতে গিয়ে পত্র লেখে, ভেরিয়েশন পেতে আরকি, তবে সেই মনোভাব তাদের নেই! তা যাই হোক, এই প্রেমপত্র কিন্তু সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে পরে। কিভাবে, তা আর নাই বললাম। এখন এত সহজে প্রেম হয়ে যায়, আর এত সহজে ভাঙ্গে, বলার বাইরে! "ইন লাভ" আর "ব্রেকআপ" খুব চাঞ্চল্যকর এবং বহুব্যবহৃত শব্দ/বাক্যদয়! তাই আগের প্রেমকে মুছে ফেলতে পত্র পুড়িয়ে ফেলাটাই সমীচিন। আমিও তাই করছি। তবে এবারের প্রেমপত্রটা একটু অন্যরকম। অনেকদিন জমিয়ে রেখেছিলাম এটা, কেউ বুঝতে পারত না এটা তাই। ল্যাটিন এ লিখেছিল যে সে, তাই, হাতের লেখা খারাপ বলে নয়! এদিকে কেউ ল্যাটিন শেখা নেই তেমন, আমি ছাড়া। তার বুদ্ধিতে আমি অভিভুত, কিন্তু প্রত্যাখান করেছিলাম। প্রেম-ভালোবাসায় বিশ্বাস করলে এতদিনে কোথায় ভেসে যেতাম! তবে এই প্রেমপত্রটি বিশেষভাবে লেখা, আর কেউ পড়ে কিছু বুঝত না বলে রেখে দিয়েছিলাম অনেক গুলো বছর। আজ, চৌদ্দ'ই ফেব্রুয়ারী দু'হাজার তেরোতে পুড়াব বলে বের করলাম অনেক বছর পর, আহ, এখন তার হাতের গন্ধটা পাই। যা আনন্দ লাগছে আগুনে ধরা পত্রটা দেখে। একটু কষ্টের ঢেউ উঠছে, এতদিন সজতনে রেখেছিলাম কিনা! কিন্তু রীতি তো রীতিই! আমি মেনে চলিও বটে! নেই কোন ক্ষমা আজকে উক্ত প্রেমপত্রের প্রতি! একটা পাশবিক আনন্দ হেলে দুলে উঠছে মনের কোনায়, অনেক রক্তাক্ত মনটা আজ স্থির হল হয়ত!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫১
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×