তারেক রহমান অচিরেই দেশে ফিরে তার বিরুদ্ধে করা মামলা আদালতে মোকাবেলা করবেন বলে জানিয়েছে বিএনপি।
Published : 27 May 2013, 12:32 PM
খালেদা জিয়ার ছেলেকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরদিন সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, “তিনি (তারেক রহমান) অচিরেই দেশে ফিরে আসবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
“আমাদের দলও মনে করে তিনি সহসা আসবেন, দলের দায়িত্ব নেবেন এবং আইনগতভাবে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মোকাবেলা করবেন।”
দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আবারও দাবি করেন শামসুজ্জামান।
“এক নেতার একটি সভা ও একটি বক্তব্য সরকারকে কতটা অস্থির ও আতঙ্কে ফেলতে পারে, তার প্রমাণ হচ্ছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সরকারের আচরণ।”
গত পাঁচ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক গত সপ্তাহে প্রথম লন্ডনে দলের এক প্রকাশ্য সভায় যোগ দেন।
এর কয়েকদিনের মধ্যে মুদ্রা পাচারের এক মামলায় তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরাতে পরোয়ানা জারির আদেশ দেয় আদালত। তাকে পলাতক দেখিয়ে এই মামলায় অভিযোগ গঠন হয়।
শামসুজ্জামান বলেন, “তারেক রহমান উচ্চ আদালতের অনুমতি দিয়ে লন্ডনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাকে পলাতক বললে আদালত অবমাননা হবে।”
২০০৯ সালে মুদ্রা পাচারের মামলার পর তারেক অনুপস্থিত থাকায় তাকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এরপরও তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় তাকে পলাতক দেখিয়ে বিচার শুরু হয়।
লন্ডনের সভায় তারেকের বক্তব্যের পর আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি নেতার অবস্থান এখন সনাক্ত হওয়ায় তাকে ফেরত আনতে উদ্যোগ নেবে সরকার।
প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তারেকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করতে দুদকের আবেদন হওয়ায় বিএনপির অভিযোগ, এতে রাজনৈতিক ‘অভিসন্ধি’ রয়েছে; যদিও দুদক তা অস্বীকার করে আসছে।
লন্ডনের সভায় দেয়া বক্তব্য নিয়ে সরকারি দলের নেতারা তারেকের সমালোচনা করে আসছেন। এর মধ্যে পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তাকে উকিল নোটিসও পাঠিয়েছেন তারেক।
শামসুজ্জামান মন্ত্রী হাছান মাহমুদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “মন্ত্রীর চেয়ারে বসে খুব আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন। এটা রাষ্ট্র ও বিবেকবান রাজনীতির জন্য খুবই খারাপ। হাছান মাহমুদকে বলবো, আপনি পিএইচডি ডিগ্রিধারী মানুষ। আপনি মন্ত্রী হয়েছেন, আমরা গর্ববোধ করি। তবে আপনার বক্তব্য ও শব্দ চয়ন শুনে আমরা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছি, তারা লজ্জা পাই।”
তারেকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির তাক্ষৎণিক প্রতিক্রিয়ায় বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও কুমিল্লায় সোমবার হরতাল ডাকে স্থানীয় বিএনপি।
প্রতিবাদকারী বিএনপি নেতাকর্ীদের ওপর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও সরকার সমর্করা হামলা চালায় বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারকে কারাগারে পাঠানোর সমালোচনা করে শামসুজ্জামান বলেন, “যে অভিযোগের মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, এটি জামিনযোগ্য বলে আমরা জানি। উনার বয়স ৮৪ বছর, উনি অসুস্থ।”
সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে সংসদ সদস্য এম কে আনোয়ারের গ্রেপ্তার সংসদীয় রীতির লঙ্ঘন বলে দাবি করেন তিনি।
“একজন সংসদ সদস্যকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দিতে হবে। এম কে আনোয়ারের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সংসদের অকার্যকারিতা আরেকবার প্রমাণ হলো।”
নয়া পল্টনে বিএনপি কার্ালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শামসুজ্জামানের সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, শামীমুর রহমান শামীম, তকদীর হোসেন জসিম, জামাল উদ্দিন খান মিলন, ফরিদা ইয়াসমীন প্রমুখ।