। লোকটা নাকি পাগল ছিলো...!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
টোনা কহিলো- টুনি পিঠা করো। টুনি কহিলো- চাল আনো, তেল আনো, নুন আনো, গুড় আনো ইত্যাদি ইত্যাদি। টোনা কহিলো- ঠিক আছে, আমি যাইতেছি, তুমি রান্নার বুঝ-ব্যবস্থা করো। এইভাবে টুনি ঘরের কাজে আটকা পড়িলো। আর টোনা ফুড়ুৎ কইরা উড়াল দিয়া গেলোগা। এবং অন্য আরেক টুনির সঙ্গে পুটুর-পাটুর করিতে লাগিলো।
এই গল্প থেকে থেকে আমরা কী শিক্ষা পাই ? শিক্ষা পাই- ছাগল দুই ধরনের। দেশি ছাগল আর রাম-ছাগল। দেশি ছাগল হইলো ব্ল্যাক বেঙ্গল। কান দুইটা ছোট ছোট। আর রামছাগল ? কান দুইটা এই লম্বা লম্বা ! বদমাইশি কইরা কইরা জীবনে বহুৎ কানমলা খাইছে তো, শরীরটা মাশাল্লা হৃষ্টপুষ্ট হইছে ! কিন্তু কানগুলা আমার চ্যাঙ্গের মতো ঝুইল্যা গেছে !
কী বুঝলি ?
আমার প্রথম কৈশোরের অভিজ্ঞতা তখনো এতো হৃষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে নি। লোকটির সঙ্গতিহীন কথা আর আচানক ধরনের শব্দগুলোর অর্থ খুঁজতে খুঁজতে আমার অনভ্যস্ত কান দুটো গরম আর সম্ভবত লাল হয়ে ওঠছে। অতএব আমি আর কী বুঝবো !
আমাকে নিরুত্তর দেখে ফের প্রশ্ন- কিছুই বুঝস নাই ?
হ, বুঝছি !
কী বুঝছস ?
আপনি একটা পাগল !
উত্তর শুনে কটমট করে আমার দিকে চেয়ে রইলেন। আমি ইতস্ততবোধ করছি। হঠাৎ হৈ হৈ করে ওঠলেন- তুই তো বড়ো সত্যিবাদী পোলা রে !
বলেই হেঁচকা টানে নিজের লুঙ্গিটা খুলে ফেললেন। আচম্বিতে এই অভুতপূর্ব ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমি আতঙ্কিত নাক মুখ কুঁকড়ে অজান্তেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কয়েক মুহূর্ত কেটে গেলো। লাঞ্চিত হবার সমূহ আশঙ্কা সত্য হয় নাই দেখে আশ্বস্ত হলাম ঠিকই। কিন্তু এই বিব্রতকর অবস্থা কিভাবে সামাল দেবো ভাবতে ভাবতে কুচকানো বন্ধ চোখ দুটো আস্তে একটু একটু করে খুলতে লাগলাম। ধুয়াশা নজরে দেখছি সামনেটা ফাঁকা, কেউ নেই ! ঝট করে পুরো চোখ খুললাম।
লুঙ্গিটাকে কপালে বেঁধে রাস্তার রাজা শাহেনশাহের মতো নির্বিকার তিনি উন্মুক্ত নিম্নাঙ্গে ফুটপাত ধরে হেঁটে চলেছেন ! আমি একইসাথে বিস্মিত, বিব্রত এবং মনে মনে কুঞ্চিতও ! আশ্চর্যের ব্যাপার ! আশপাশ দিয়ে আনমনা পথচারী নারী-পুরুষগুলো আচমকা এমন এক দৃশ্যের মুখোমুখি হয়েও কেন যেন একটু না চমকিয়েই নির্দ্বিধায় পার হয়ে যাচ্ছে সবাই ! কেউ কেউ আবার লোকটির বিশেষ কোন জায়গায় হ্যাংলার মতো দৃষ্টি ফেলে অনায়াসে কৌতুক করতেও ছাড়ছে না !
একটু একটু করে অভিজ্ঞতায় পুষ্ট হতে হতে আমাদের বোকা কৈশোরটা তারুণ্য কিংবা যৌবন পেরিয়ে যেতে যেতে অবাক হবার ক্ষমতাটা হয়তো হারিয়েই ফেলে ! তবু মানুষের বুকে কোন কোন কৈশোর বোধ করি চিরকাল থেকে যায়। অন্য অনেক ঘটনার মতোই কৈশোরের ওই ঘটনাটা আমাকে কতোটা প্রভাবিত করেছে জানি না। তবে মন-ভুলে সেই কথাটা কখনো মনে এলেই একটা প্রশ্ন এখনো আমাকে তাড়া করে-
লোকটা কি সত্যিই পাগল ছিলো ?
একটা শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে লোকটা নিজেই নাকি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরে যায় একদিন।
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া
বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম
আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!
ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!
সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙালি নারীর কাছে
পরনে আজানুলম্বিত চিকন সুতোর শাড়ি, সবুজ জমিনের পরতে পরতে কবিতারা জড়িয়ে আছে বিশুদ্ধ মাদকতা নিয়ে, গোধূলির আলোয় হেঁটে যায় নিজ্ঝুম শস্যক্ষেতের ঘাসপাঁপড়ির আল ধরে, অতিধীর সুরের লয়ে, সুনিপুণ ছন্দে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আসেন ইক্টু ঘুরাঘুরি করি.... :-B
এক কসাইয়ের লাশ আরেক কসাই কিভাবে কিমা বানাইলো কিংবা কত বিলিয়ন ট্যাকা টুকা লইয়া সাবেক আইজি সাব ভাগছে ওইগুলা নিয়া মাথা গরম কইরা কুনু লাভ নাইরে... আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবরের... ...বাকিটুকু পড়ুন