"জনগণের উত্তম প্রধানমন্ত্রী" কমরেড চৌ এন লাইঃ
কমরেড চৌ এন লাই মহান সর্বহারা-শ্রেণীর বিপ্লবী, রাজনীতিবিদ, সমরবিদ এবং কূটনীতিবিদ, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এবং চীন গণ-প্রজাতন্ত্রের প্রধান নেতৃবৃন্দের অন্যতম, চীনা গণ-মুক্তি-ফৌজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৮৯৮ সালের ৫ মার্চ তিনি চিয়াং সু প্রদেশের হুই আনে জন্মগ্রহণ করেন।
নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চৌ এন লাই দেশের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন, ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তিনি দীর্ঘকাল ধরে পার্টি ও দেশের দৈনন্দিন কার্যের ভারী কর্তব্য বহন করেছেন।
১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত চীনের প্রথম পাঁচ সালা পরিকল্পনা চলাকালে তিনি ১৫৬টি নির্মান প্রকল্পের কেন্দ্রীভূত শিল্প গঠনের কাজে নেতৃত্ব দেন, চীনের শিল্পায়নের জন্য প্রাথমিক ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি বিশেষভাবে জলসেচ নির্মান এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগতউন্নয়নের উপর মনোযোগ দেন, এবং এর জন্য বিরাট অবদান রাখেন।
তিনি চীনের গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রণয়ন এবং কার্যকরী করেন। ১৯৫০ সালে কোরিয় যুদ্ধ বাঁধলে তিনি কমরেড মাও সে তুংকে সহযোগিতা করে চীনা গণ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী পরিচালনা করেন, চীনা প্রতিনিধি দলের যুদ্ধবিরতি আলোচনায় নেতৃত্ব করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি চীনের প্রতিনিধি দল নিয়ে জেনিভা সম্মেলনে অংশ নেন, আলোচনার মাধ্যমে চুক্তি স্বাক্ষর করার ফলে ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্পুচিয়া এই তিনটি দেশের স্বাধীনতা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। তিনি চীন সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র-রাষ্ট্র সম্পর্কের মৌলিক নীতি হিসেবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতি উত্থাপন করেন।
তিনি পর পর এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের কয়েক ডজন দেশ সফর করেন, বিভিন্ন দেশের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ এবং বন্ধুভাবাপন্ন ব্যক্তিদের অভ্যর্থনা জানান, চীনা জনগণ এবং বিশ্বের জনগণের মৈত্রী বাড়ানোএবং পৃথিবীতে চীনের প্রভাব সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
১৯৭৬ সালের ৮ জানুয়ারী চৌ এন লাই পেইচিংয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে সারা দেশে নেমে আসে শোকের কালো ছায়া। তাঁকে হারানোর বেদনা জনগণের অশ্রু-বৃষ্টিতে প্রতিফলিত হয়। তিনি সবসময় পরিশ্রম করেন, নিজেকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন, জনসাধারণকে যত্ন করেন, তাই তাঁকে "জনগণের উত্তম প্রধানমন্ত্রী" বলে ডাকা হতো।