somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রামকৃষ্ণ মাঝি আমাদের সবার নাম

৩০ শে জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রামকৃষ্ণ মাঝি আজ জেলে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা। সাথে আরো দুই বন্ধ মনিকা রাণী হালদার, আনিস রায়হান। আসলে কি করতে চেয়েছিলো সে? তারা কি রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধনের নেমেছিলো? নাকি তারা রাষ্ট্রর সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা করছিলো। আজ আমরা রাম কৃষ্ণ মাঝির কথা শুনি, আমাদের ভাষায়। কারণ রাম এখন চার দেয়ালের পিছনে:

২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হলো সে। আগ্রহের জায়গা মানুষ আর মানুষকে ঘিরে যে অধিকারের রাজনীতি। প্রথম বর্ষ কিংবা দ্বিতীয় বর্ষে দেয়াল পত্রিকার কাজ শুরু হয় বিভাগে। সে প্রধান র্ভমিকায় থাকে। সেখানে একটি লেখা নিয়ে শিক্ষকের সাথে তর্ক শুরু হয়। শিক্ষক বলেন, এটা এভাবে বলতে পারলে ভালো হতো কিন্তু আমাদের জায়গা থেকে এটা বলা মুশকিল। কিন্তু রামের মনে প্রশ্ন মানুষের কথা কেন বরা যাবে না? সে বিভাগ ত্যাগ করে আর শিক্ষকের কাছে ওয়াদা করে মানুষের জন্য, কৃষকের জন্য কাজ করে সে দেখাবে এটা সম্ভব, যার যার জায়গায় থেকেই সম্ভব।

রাম একটা স্কুল দিয়েছিল। কৃষক শ্রমিকদের ছেলেমেয়েরা দৈনিক ১টাকার বিনিময়ে যে স্কুলে পড়তে পারবে। সেই দৈনিক ১টাকাও অনেকেই দিতে পারতো না। সেই স্কুলে শিক্ষকতা করতো মনিকা। ব্যাক স্কুলের পাশাপাশি এই স্কুলে স্বেচ্ছাশ্রম। ভুল করেছিলো ওরা? কেনো কৃষক-শ্রমিকের ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হবে, এটা কি ওদের বুঝা উচিত ছিল না? ওরা বোকা। এধরনের বোকামি খুব কম মানুষই করতে জানে।

রা সিডরের পর এলাকায় গরীব চাষীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সহায়তায় ট্রাক্টরের ব্যবস্থা করেছিলো যেটা গরীব কৃষকরা ব্যবহার করতে পারবে। গরীবদের জমির পরিমান এতোই ছোট যে আইলের কারনে ট্রাক্টর চালানো যেত না। সে তখন জমির আইল তুলে ফেলে ব্লক পদ্ধতি চালু করার জন্য কৃষকদের বুঝায় এবং কৃষকরা লাভের পরিমান দেখে রাজি হয়।

এসব করা কি কোন সহজ মানুষে কাজ হতে পারে? 'এসব নিশ্চয় রাষ্ট্রদ্রোহীরাই করে'। আমরা সেই রাষ্ট্রদ্রোহীদের যেন চিনে রাখি। কোন কোন রাষ্ট্রদ্রোহী যে গরীব মানুষের বন্ধু হতে পারে সেটা যেন মনে রাখি। রামের প্রতিটা কাজে বাধা দিয়েছে এলাকার চেয়ারম্যান। সবশেষ ২০০৮ এ বৈশাখকে সামনে রেখে এলাকায় মেলার ব্যবস্থা করেছিলো রাম। যেখানে নারীরাই মূল দায়িত্বে ছিলেন। এবং তারা তাদের কারুশিল্প দিয়ে দোকান খুলেছিলেন। সেখানেও চেয়ারম্যানের কু নজর। তার সাঙ্গ পাঙ্গরা সেখানে জুয়ার আসর বসাতে চেয়েছিলো। সে নিয়ে বাক বিতণ্ডা। কিন্তু সেটাও রামের উচিত হয়নি। 'ছিঃ, গুরুজন না' জুয়া খেলার বয়স হয়েছে, খেলুক। বাধা দেয়ার তো কিছু হয়নি।'

মাত্র ৩০ বছরের রামের পক্ষে আরো কি কি করে ফেলা সম্ভব ছিলো!! আমরা যারা ত্রিশ পেরিয়েছি তারা কতোটুকুই বা করতে পেরেছি? ৯ মাসে তিজন বন্ধুকে জেল থেকে ছাড়াতে পারলাম না, নির্দোষকে নির্দোষ প্রমাণটুকু এই মুক্ত আমরা করতে পারলাম না। কিন্তু যারা কোন প্রমান ছাড়া এতোবড় অভিযোগে অভিযুক্ত করলো রাম-আনিস-মনিকাদের তাদের জন্য একটা কথা বলে রাখি। রাম এর আর আনিস এর এ আর মনিকার এম এক জায়গায় করলেও কিন্তু উচ্চারণ সেই রাম-ই হয়। সত্য কখনোই বেধে রাখা যায় না। যারা বেধে রাখতে চায় তারা সেটা যতো তাড়াতাড়ি অনুধাবন করতে পারেন, ততোই ভালো।


সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:৩১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×