somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গত কয়েকদিনের দেখা মুভি: আউলা ঝাউলা চিন্তাভাবনা

৩০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Hotel Rwanda(২০০৪):
~~~~~~~~~~~~

১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডার গণহত্যার উপর মুভি। রুয়ান্ডা ছিলো বেলজিয়ামের উপনিবেশ। বেলজিয়ানরা প্রথমে হুটু আর টুটসিদের আলাদা করে । তুলনা মুলক লম্বা আর "লাইট স্কিন" হওয়া টুটসিদের সহজে আলাদা করা যায় । বেলজিয়ানরা -- মতান্তরে চার্চের ধর্মপ্রচারকরা টুটসিদের সুপিরিয়র জাত নির্ধারন করে। বেলজিয়ানরা যাওয়ার সময় হুটুদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে যায় । জাতিগত বিদ্বেষ থেকে হুটুরা টুটসিদের কচুকাটা করার পরিকল্পনা করে ।
১৯৯৪ এপ্রিলে হুটু প্রেসিডেন্টের প্লেন ক্ষেপনাস্ত্র দিয়া ধ্বংস করে তাকে হত্যা করা হয় । এরপরই হুটুরা টুটসিদের উপর মাচেট হাতে জাপিয়ে পড়ে।
এপ্রিল থেকে জুলাই এর মাঝে ১০ লক্ষ লোক খুন হয় । বেশির ভাগই মাচেট দিয়ে কুপিয়ে ।
সেই সময় রুয়ান্ডাতে Paul Rusesabagina নামে হোটেল পরিচালক ১২০০ জন মানুষের জীবন রক্ষা করে ।
এই সত্য ঘটনা উপরের নির্মিত মুভিটা ।

> আমার প্রথম চিন্তা হলো ডিভাইড এন্ড রুলের শিকার শুধু আমরাই না । উপমহাদেশে যেটা ধর্ম। আফ্রিকায় সেটা চামড়া।
মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করলে এর জের কোথায় গিয়ে ঠেকবে এটা কি বেলজিয়ানরা চিন্তা করেছিলো ?

আমরা সব সময় ভাবি আমরা সবচে বেশি কষ্ট পেয়েছি। সত্য কথা হলো পৃথিবী সব জাতির দু:খ কষ্টের ইতিহাস আছে । ২ মাসের মাথায় ১০ লক্ষ লোক কুপিয়ে হত্যার ঘটনা অপার্থিব অমানুষিকতা লাগে । তাছাড়া কোন বাহিনী না । প্রতিবেশীরা প্রতিবেশী মাচেট হাতে ঝাপিয়ে পরেছিলো ।
সাদা চামড়ারা যে আমাদের তৃতীয় বিশ্বের মানুষদের মানুষই মনে করে না -- এটা একটা প্রমান । সাদা চামড়াও না -- চীন -জাপান -রাশিয়া - সৌদি -ভারত -- কেউ এই অমানুষিক হত্যার বন্ধে কোন ব্যবস্থা নিলো না কেন আশ্চর্যের ব্যাপার ।
ইদানিং আবার দেখলাম রুয়ান্ডাকে সি এন এন এ খুব হাইলাইট করা হচ্ছে । রুয়ান্ডা নাকি ইমারজিং নেশন ।
ফরচুন ৫০০ কম্পানীর সব বসেরা রুয়ান্ডার পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । ভিতরের ঘটনা কি জানি না তবে অবস্থা সন্দেহজনক ।
হুটু টুটসিরা আবার নিজেদের পাশাপাশি থাকছে । পশ্চিমের মিডিয়া দেশের প্রেসিডেন্টদের খুব ভালো পায় -- আজীব কারনে । এতসব হত্যাকারীদের বেশীর ভাগকেই মাফ করে দেয়া হয়েছে। শুধু বিচারের নামে হাস্যকর ভাবে জনসমক্ষে সে কাকে কাকে হত্যা করেছে এটা বলেতে হয়েছে । ব্যাস মাফ (!)। তবে আবার কখন পুরোনো ক্ষতে মুখ খুলে একজন আরেকজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে কোন ঠিক ঠিকনা নাই । তখন ফরচুন৫০০ বসরা রুয়ান্ডাকে চিনবে কিনা সেটাই প্রশ্ন।

Click This Link


Who's afraid of Virginia Wolf (১৯৬৬):
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
এলিজাবেথ টেলর এর অস্কার জেতা মুভি । রিয়েল লাইফ কাপল লিজ টেজর আর রিচার্ড বার্টন বয়সী দম্পতির ভুমিকায় । সন্ধ্যায় এক তরুন কাপল কে দাওয়াত করে তারা । রাত যত বাড়তে থাকে তিক্ততা আর জটিলতা বাড়তে থাকে ।

> শেষের আধ ঘন্টা দেখতেই পারি নাই । এত তিক্ততা ছবিটার মধ্যে । ওরা নিজের মধ্যে রক্ত ঝরানো প্রতিজ্ঞা নিয়ে এক ছাদের নিচে থাকে । মনে হচ্ছিল দুইজন মাছ মারার কাটা যুক্ত বর্শা দিয়ে খোচাতে থাকলেও এত আহত করতে পারতো না একে অপরকে। এই ধরনের আরেকটা খুব ভালো মুভি দেখেছিলাম গতবছরের 'রিভোলিশনারি রোড' । অবিবাহিতরা দেখলে বিয়ে উপর ভক্তি শ্রদ্ধা কমে যেতে পারে।

Touch of Evil (১৯৫৮) :
~~~~~~~~~~~
ওরসন ওয়েলস ডিরেক্টেড মুভি। মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী শহরের দূনীর্তি গ্রস্থ পুলিশ আর অপরাধীদের ক্রাইম ড্রামা ।
বোমা পেতে শহরের এক ধনী ব্যক্তি আর মহিলা হত্যা করা হয় । মেক্সিকো থেকে একজন ডিটেকটিভ আসে তদন্ত করতে সাথে আর সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী। এই ডিকেটটিভের সাথে শহরের গোয়েন্দা সার্জেন্টের ব্যক্তিত্বের সংঘাত । আর শেষে মুখোশ উম্মচোন নিয়ে ছবি ।

> ১৯৫৮ সালের ছবি এটা । একটা কথা আছে না ট্রু ক্লাসিকস আর টাইমলেস । এক সেকেন্ডের জন্যও বোর হইনি এই মুভিটা দেখতে গিয়ে । মুভি মেকিং ওস্তাদ লোকের হাতে কত চমৎকার হয় সেটাও একটা এক্সামপল । যারা জানেন না - ওরসন ওয়েলসে 'সিটিজেন কেইন (১৯৪১)' গত শতাব্দী টপ ৫ টা আমেরিকান ছবির মধ্যে একটা ।
আমার মজা লেগেছে যখন সার্জেন্ট চাকরি ছেড়ে দিতে চায় । যেই ধরনের ইমোশনাল ঝাড়ি এখন আমাদের দেশে চলে ।
আসলেই আমরা ৫০ বছর পিছিয়ে আছি ।

Public Enemies (2009):
~~~~~~~~~~~~~~~~~
গ্রেট ডিপ্রেশনের পরের বিখ্যাত ব্যাংক ডাকাত 'জন ডিলিন্জার'
জীবনের উপর ভিত্তি করে এই ছবিটা । ডিলিন্জার কে ধরার জন্য একজন নামকরা ডিটেকটিভ নিয়োগ দেয়া হয় ।
এর মধ্যেই প্রেম , ব্যাংক ডাকাতি , জেল থেক পলায়ন ।

> হলে গিয়ে দেখলাম ছবিটা । মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল পরিচালককে ধরে জুতার বাড়ি দেই । এতই ঝুলে যাচ্ছিলো একেক সময় । বাসায় ফিরে দেখি মাইকেল মানের ছবি ।
'কোলেটরাল', 'আলী', 'ইনসাইডার', 'হিট', 'লাষ্ট অফ দ্য মোফিকানস' এর ডিরেক্টর ।
খারাপের মধ্যে ভালো দুই পারফেকশনিষ্টের অভিনয় ।
ডেপ - বেল দুজনে তাদের জাত অনুযায়ী পারফর্ম করেছে ।
ডিলিন্জার প্রেমিকা হিসাবে Marion Cotillard অভিনয় ভালো লেগেছে । চিত্রনাট্য দূর্বল হলে কি আর করা ।
মাইকেল মান দেখি আবার টোটালি ফালতু ছবি 'হ্যানককের' প্রোডিউসার । এইবার থেকে ব্যাটার মুভি সাবধানে দেখতে হবে।

Terminator - 4(২০০৯):
~~~~~~~~~~~
টার্মিনেটর সিরিজের প্রথম ছবি শোয়ার্জনেগার ছাড়া (মূল ভূমিকায়)।

জন কনর এই পর্বে তার বাবার খোজে বের হয় । মানুষের হার্ট আর ব্রেন সহ -- কৃত্রিম দেহধারী একজনকে ঘুম পারিয়ে রাখা হয় । সে জন কনরের আস্থা অর্জন করে । তাকে ব্যবহার করে আর্টিফিনিয়াল ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক প্ল্যান করে জন কনরকে(ক্রিষ্টিয়ান বেল) খুজে হত্যা করার জন্য । "Sam" Worthington এটা ভন্ডুল করে দেয় তার মানবিক সত্ত্বা খুজে পেয়ে ।

> এটাও থিয়েটারে দেখা । হলিউডে দিন দিন বাজেট সংকট বাড়ছে । নাম না জানা অভিনেতা ধরে কাজ চালিয়ে দেয়া হচ্ছে । মূল ভুমিকায় মেগা ষ্টার রেখে -- বাকি সব ফাউল । এরা অভিনয়ও জানে না ঠিক মতো । অবশ্য টার্মিনেটর দেখতে গিয়ে অভিনয় খুজলে আমাকেই পাবলিক আতেল ঠাওরাবে !! তবে অভিনয় এতই বাজে যে এর মধ্যেও চোখে পড়ে ।
"Sam" Worthington কে ভালো লেগেছে । ক্রিষ্টিয়ান বেল তো ক্রিষ্টিয়ান বেল ই ।

আরেকটা মজার ব্যাপার হলো এই ছবির কোন পরিচালক নেই !! হলে পরিচালকের নাম দেখলাম Warner Bros ।
সাইটে অবশ্য মানুষের নাম দেখাচ্ছে । ভিতরে কাহিনী জানি না ।
টাইম পাস মুভি ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

Click This Link
সিনেমা বিষয়ক আগের পোষ্ট ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১:১৩
৩২টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×